চুরাল মুরিয়াল। কেরলের মেভেলিক্কারার ছেত্তিকুলাঙ্গারা মন্দিরে যুগ যুগ ধরে চলে আসা একটি প্রথা। ওই মন্দিরে মার্চ মাস নাগাদ অনুষ্ঠিত হয় কুম্বাভারানি উৎসব। সেই উৎসবের অঙ্গ হিসাবেই গত ২৫০ বছর ধরে চলে আসছে চুরাল মুরিয়াল প্রথাটি। প্রতিবারের মতো এ বছর আগামী ১১ মার্চ ছেত্তিকুলাঙ্গারা মন্দিরের আরাধ্য বিগ্রহ ভদ্রকালীর উদ্দেশে আয়োজন করা হবে চুরাল মুরিয়াল। যদিও গত বছরই এই অমানবিক প্রথার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল কেরল হাইকোর্ট।
চুরাল মুরিয়াল প্রথা অনুসারে, ১০ বছরের কম বয়সী ছেলেদের গায়ে ফোটানো হয় সূচ। সূচ ফোঁটানোর ফলে তাদের শরীর থেকে বেরিয়ে আসা রক্ত উৎসর্গ করা হয় ভদ্রকালীর সামনে। এতে ‘দেবী’র আশীর্বাদ পাওয়া যায় বলে সেখানকার জনমানসে বিশ্বাস।
সেই বিশ্বাসের বশবর্তী হয়ে এই অমানবিক প্রথা চালু রাখতে শিশু কেনাবেচার মতো গুরুতর অপরাধও চলে সারা কেরল জুড়ে। অভিযোগ, ‘দেবী’র আশীর্বাদ লাভের আশায় গরিব পরিবারের কাছ থেকে বাচ্চাদের কিনে নেয় অর্থবানরা। প্রায় ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকায় এই কেনাবেচা চলে বলে অভিযোগ।
শিশু নির্যাতন রোধে যখন সারা দেশ জুড়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ করা হচ্ছে, সেখানে এই প্রথার বিরোধিতা হয়েছে কেরলেও। ২০১৬ সালে এই প্রথাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে কেরল স্টেট কমিশন ফর প্রোটেকশন অব চাইল্ডস। এ নিয়ে মামলাও শুরু হয় উচ্চ আদালতে। সেই মামলায় কেরল হাইকোর্ট গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে এই প্রথাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
তারপরেও বন্ধ হয়নি শিশু অধিকার ভঙ্গকারী এই অমানবিক প্রথা। গত বছরের পর ফের এ বছরও চুরাল মুরিয়াল নিয়ে শুরু হয়েছে তোড়জোড়়। ১১ মার্চ শুরু হবে এ বছরের উৎসব। ওই দিনের জন্য ইতিমধ্যেই ২৬ জন দশ বছরের কম বয়সী শিশুকে তাদের বাড়ি থেকে এনে রাখা হয়েছে চুরাল মুরিয়ালের জন্য।
BIG! Cash is being exchanged by a sponsor to a parent to settle a deal. Modern day Slavery!! #StopChooralMuriyal pic.twitter.com/dnAmkN25Aj
— T Sudheesh (@sudheeshdc) March 4, 2019
আরও পড়ুন: আফিমে বুঁদ টিয়া, সামলাতে নাজেহাল চাষিরা