লোকসভা এবং রাজ্যসভা— সংসদের দুই কক্ষেই এ দিন কুলভূষণ পর্ব নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বিদেশ মন্ত্রী। ছবি: পিটিআই।
কুলভূষণ যাদবের মা ও স্ত্রী-র অপমানএবংহেনস্থার তীব্র নিন্দা করলেন সুষমা স্বরাজ। ২৫ ডিসেম্বর পাকিস্তানে যে পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছে অবন্তী যাদব এবং চেতনকুল যাদবকে, তার বিরুদ্ধে প্রবল ভাবে সরব হলেন ভারতের বিদেশ মন্ত্রী। বিষয়টি নিয়ে আজ সংসদের দুই কক্ষেই বিবৃতি দিয়েছেন সুষমা। সম্পূর্ণ ইচ্ছাকৃত ভাবে পাকিস্তান হেনস্থার মুখে ঠেলে দিয়েছে কুলভূষণের মা ও স্ত্রীকে, এমন অভিযোগই করেছেন সুষমা। বিনা বাধায় তাঁদের হেনস্থা করার জন্যই ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনারকে প্রথমে আটকে দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছেন তিনি।
পাকিস্তানে বন্দি কুলভূষণের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে ঠিক কী অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হয়েছে তাঁর মা ও স্ত্রীকে, বিদেশ মন্ত্রক সে তথ্য আগেই প্রকাশ করেছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার সুষমা স্বরাজ সে সব কথা আরও বিশদে জানান সংসদে। গোটা সংসদ তীব্র নিন্দায় সরব হয়। পাকিস্তানকে একযোগে ধিক্কার জানানো হয়।
সুষমা স্বরাজ এ দিন জানিয়েছেন, আজ সকালেও তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে কুলভূষণ যাদবের মায়ের। সুষমা জানান, ফোনে কথা বলার সময় এ দিনও কান্নায় ধরে আসছিল অবন্তী যাদবের গলা। কুলভূষণের সামনে নিয়ে যাওয়ার আগে বিবাহের সমস্ত চিহ্ন মুছে ফেলতে কী ভাবে বাধ্য করা হয়েছিল তাঁদের, সে কথা সুষমা বিশদে জানিয়েছেন অবন্তী। ‘‘আমি মিনতি করেছিলাম ওঁদের কাছে। বলেছিলাম, জীবনে কখনও আমি মঙ্গলসূত্র খুলিনি। কিন্তু ওঁরা বললেন, খুলতেই হবে।’’ অবন্তী বলেছেন সুষমাকে।
অবন্তী আরও বলেছেন, ‘‘দেখা হওয়ার পরে কুলভূষণ আমাকে প্রথমেই জিজ্ঞাসা করল— বাবা কেমন আছেন? কারণ আমাকে মঙ্গলসূত্র, টিপ, বালা ছাড়া দেখে ও ভেবেছিল, বাবার কিছু হয়েছে।’’ জানিয়েছেন সুষমা স্বরাজ।
কুলভূষণের সঙ্গে তাঁর পরিজনদের সাক্ষাতের নামে যা করেছে পাকিস্তান, তার নিন্দায় সুর আরও চড়াল ভারত। —ফাইল চিত্র।
বিদেশ মন্ত্রী এ দিন সংসদে আরও বলেন, ‘‘অবন্তী যাদব শাড়ি ছাড়া অন্য কিছু পরেন না। তাঁকে যে ভাবে জোর করে সালওয়ার-কুর্তা পরতে বাধ্য করা হয়েছে, তা খুব অপমানজনক।’’ তাঁর দাবি, ‘‘শুরুতে ভারতের ডেপুটি হাই-কমিশনারকে সেখানে ঢুকতে দেওয়া হয়নি, কারণ যে ভাবে কুলভূষণের পরিজনদের পোশাক বদল করতে বাধ্য করা হয়েছে, তা দেখলে তিনি তৎক্ষণাৎ প্রতিবাদ করতেন।’’
আরও পড়ুন: আমি র-এর চর, শেখানো বুলির মতো আউড়ে যাচ্ছিলেন কুলভূষণ
কুলভূষণের পরিবারকে মিডিয়াথেকে আড়ালে রাখা হবে বলে যে প্রতিশ্রুতি পাকিস্তান দিয়েছিল, তা-ও তারা রাখেনি বলে সুষমা স্বরাজ এ দিন অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘দু’পক্ষই সুনির্দিষ্ট ভাবে সহমত হয়েছিল যে, মিডিয়াকে কুলভূষণের পরিজনদের ধারেকাছে পৌঁছতে দেওয়া হবে না। কিন্তু পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম তাঁদের কাছে বিনা বাধায় পৌঁছেছে এবং তাঁদের তাঁদের দিকে কটূক্তিও ছুড়ে দিয়েছে।’’
আরও পড়ুন: পাকিস্তানকে চার টুকরো করতে হবে, যুদ্ধ ঘোষণা করুক ভারত: সুব্রহ্মণ্যন
কুলভূষণ যাদবের স্ত্রীর জুতো যে ভাবে নিয়ে নেওয়া হয়েছে, তারও নিন্দা করেছেন ভারতের বিদেশ মন্ত্রী। পাকিস্তানের অভিযোগ, ওই জুতোর মধ্যে চিপ বা ক্যামেরা ছিল। এই অভিযোগকে ‘সীমাহীন অর্থহীনতা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন ভারতের বিদেশ মন্ত্রী।
শুধু বিদেশ মন্ত্রী নন, কুলভূষণের সঙ্গে তাঁর মা ও স্ত্রীর সাক্ষাৎ পর্বের কথা শুনে পাকিস্তানের নিন্দায় এ দিন সরব হয়েছে গোটা সংসদই। বিদেশ মন্ত্রী একে একে বিবৃত করেছেন অবন্তী ও চেতনকুলের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা। আর ‘ধিক্কার, ধিক্কার’ বলে সরব হয়েছেন অন্য সাংসদরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy