Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Coronavirus Lockdown

রাস্তায় প্রসব, সদ্যোজাতকে নিয়ে ১৫০ কিমি হেঁটেই নিজের রাজ্যে শ্রমিক মা

সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, মহারাষ্ট্রের নাসিকে শ্রমিকের কাজ করতেন মধ্যপ্রদেশের সাতনা জেলার উচেহারা গ্রামের ওই দম্পতি।

হাসপাতালে শকুন্তলা ও তাঁর সন্তান। ছবি: টুইটার

হাসপাতালে শকুন্তলা ও তাঁর সন্তান। ছবি: টুইটার

সংবাদ সংস্থা
ভোপাল শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২০ ১৩:১৪
Share: Save:

পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে ট্রেন চালু করেছে রেলমন্ত্রক। তাতে চড়ে নিজেদের রাজ্যে ফিরছেন অনেকেই। কিন্তু এখনও কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে একাংশকে। তেমনই ছবি ধরা পড়ল মধ্যপ্রদেশের সাতনায়। লকডাউনের মধ্যেই মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে সাতনায়, নিজের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন এক শ্রমিক দম্পতি। পথেই সন্তানের জন্ম দেন ওই মহিলা। তাতে অবশ্য হাঁটায় ছেদ পড়েনি। কিছু ক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে ফের হাঁটতে শুরু করেন দু’জনে। পরে অবশ্য খবর পেয়ে ওই দম্পতিকে উদ্ধার করে সাতনা প্রশাসন।

মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে মধ্যপ্রদেশের সাতনা জেলার উচেহারা গ্রাম। পশ্চিম ভারত থেকে মধ্য ভারত। দেশের এই দুই প্রান্ত জুড়ে দিলেন এক শ্রমিক দম্পতি, রাকেশ কল ও শকুন্তলা কল। সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, মহারাষ্ট্রের নাসিকে শ্রমিকের কাজ করতেন উচেহারার ওই দম্পতি। সেই সময়েই সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়েন শকুন্তলা। কিন্তু লকডাউনের মধ্যে তাঁরা বাড়ি ফেরার সুবিধাজনক কোনও পথ খুঁজে পাননি। ওই অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেই অন্তত হাজার কিলোমিটার রাস্তা হেঁটেই পাড়ি দেওয়ার ঝুঁকি নেন। অন্যান্য শ্রমিকদের সঙ্গে দল বেঁধে সাতনার উদ্দেশে হাঁটা শুরু করেন তাঁরা। সঙ্গে ছিল তাঁদের তিন সন্তানও। মঙ্গলবার মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে ধুলের মাঝে একটি গ্রামে থামেন ওই দম্পতি। রাস্তার ধারেই চতুর্থ সন্তানের জন্ম দেন শকুন্তলা। তাঁকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন দলের অন্যান্য সদস্যরাও। শকুন্তলার স্বামী রাকেশ বলছেন, ‘‘এক শিখ দম্পতি জামাকাপড় ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আমাদের দেন। ’’ এর পরেও অবশ্য হাঁটায় ছেদ পড়েনি। রাকেশ বলছেন, ‘‘এর পর আমরা ঘণ্টা দু’য়েক বিশ্রাম নিয়েছিলাম। তার পর অন্তত ১৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিই।’’

এ খবর পৌঁছেছিল মধ্যপ্রদেশের সাতনা প্রশাসনের কাছে। মধ্যপ্রদেশের সেনধাওয়া থানার ইন্সপেক্টর ভিএস পারিহার বলছেন, বিজাসন চেক পোস্ট থেকে শকুন্তলাকে উদ্ধার করা হয়। পরিযায়ী শ্রমিকদের ওই দলটিকে শেষ পর্যন্ত বাসে চাপিয়ে উচেহারা গ্রামে পাঠায় প্রশাসন।

আরও পড়ুন: করোনা সংক্রমণে চিনের পরেই ভারত, সারা দেশে আক্রান্ত ৭৪ হাজারের বেশি

শকুন্তলা ও সদ্যোজাতকে পরীক্ষা করেন চিকিৎসকরা। সাতনা ব্লক মেডিক্যাল অফিসার একে রায় বলছেন, ‘‘আমরা জানতে পারি, প্রশাসন তাদের জন্য বাসের ব্যবস্থা করেছে। তাঁরা গ্রামে পৌঁছতেই চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়। মা ও সদ্যোজাতকে পরীক্ষা করা হয়েছে। দু’জনেই সুস্থ রয়েছেন।’’

আরও পড়ুন: ২০ লক্ষ কোটি! প্যাকেজ নিয়ে ধন্দ থাকছেই​

মে মাসের শুরুতে সকুন্তলার মতো এমনই এক ঘটনার সাক্ষী হয়েছিল গোটা দেশ। তেলঙ্গানার সঙ্গারেড্ডিতে শ্রমিকের কাজ করতেন ছত্তীসগঢ়ের রাজনন্দগাঁওয়ের এক মহিলা। লকডাউনের জেরে সপরিবারে হেঁটেই বাড়ি ফিরেছিলেন তিনি। পথেই জন্ম দেন সন্তানের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE