Advertisement
E-Paper

বাংলায় মমতাদিকেই দরকার, বিজেপির চালে ছিন্দওয়াড়া দখল নিয়ে বলছেন কমলপুত্র

সিমারিয়ায় হনুমান মন্দির তৈরি করে খোদ বিজেপিকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছেন কমলনাথ।

সোমনাথ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৯ ১৭:২৩
নির্বাচনী প্রচারে ছেলে নকুলনাথের সঙ্গে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ। —নিজস্ব চিত্র।

নির্বাচনী প্রচারে ছেলে নকুলনাথের সঙ্গে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ। —নিজস্ব চিত্র।

ছিন্দওয়াড়া থেকে নাগপুর যাওয়ার পথে পড়ে সিমারিয়া। কয়েক বছর হল ১০১ ফুট উঁচু বজরংবলীর একটি প্রকাণ্ড মূর্তিকে কেন্দ্র করে ওই এলাকার ভোল অনেকটাই পাল্টে গিয়েছে। রামভক্তদের কাছে সিমারিয়া এখন পূণ্যভূমি। এখান থেকে কয়েক কিলোমিটারের মধ্যেই শিকারপুরে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথের প্রাসাদ। তবে, মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর এই প্রাসাদ এখন তাঁর অস্থায়ী ঠিকানা হয়ে গিয়েছে। ছেলে নকুলনাথই এই প্রাসাদ থেকে ছিন্দওয়াড়ার রাজত্ব সামলাচ্ছেন।

সিমারিয়ায় হনুমান মন্দির তৈরি করে খোদ বিজেপিকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছেন কমলনাথ। এ ভাবেই তিনি ছিন্দওয়াড়ার মানুষের মন জয় করে নিয়েছেন দশকের পর দশক। ছিন্দওয়াড়াতে কংগ্রেসই যেন বিজেপির হিন্দুত্বের আর এক রূপ। নাগপুরের অনেকটা কাছে হওয়ায় ছিন্দওয়াড়া শহরে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের ভালই দখল রয়েছে। তা সত্ত্বেও পিতা-পুত্রের রাজনৈতিক বুদ্ধির কাছে বিজেপির ভোট রাজনীতি বরাবরই মুখ থুবড়ে পড়েছে।

কমলনাথ জাতপাতের ভেদাভেদ করেন না— এমন সুনাম অবশ্য তাঁর ঝুলিতে রয়েছে। এক দিকে স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, রাস্তাঘাট নির্মাণ, অন্য দিকে মানুষের চাহিদা এবং সামাজিক গুরুত্বকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কারণেই ছিন্দওয়াড়া এখনও কংগ্রেসেরই কেল্লা। ১৯৯৭ সালের ছিন্দওয়াড়া লোকসভা আসনের উপ-নির্বাচন বাদ দিলে, এই কেন্দ্র থেকে কমলনাথ ৯ বারের সাংসদ। সেই ১৯৮০ সালে ইন্দিরা গাঁধীর হাত ধরে ভোট রাজনীতিতে প্রবেশ। আর ফিরে তাকাতে হয়নি এক সময়ে কলকাতার রবিনসন স্ট্রিটের বাসিন্দা ও সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের ছাত্র কমলনাথকে। এক সাধারণ যুবক থেকে কমলনাথকে কংগ্রেসের তারকা হতে দেখেছে গোটা মধ্যপ্রদেশ।

এলাকায় জনশ্রুতি, ইন্দিরার গাঁধী নাকি প্রচারসভায় মজা করে বলতেন, কমলনাথ আমার তৃতীয় সন্তান। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার কারণে এ বার ছিন্দওয়াড়া লোকসভা কেন্দ্র থেকে লড়ছেন না তিনি। উপ নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। ছিন্দওয়াড়ায় বাবার ছেড়ে যাওয়া জুতোতে পা গলিয়েছেন ছেলে নকুলনাথ। হঠাৎ করে রাজত্ব পাওয়া নয়, বাবার মতোই ছিন্দওয়াড়ার প্রত্যন্ত গ্রাম চষে বেড়ান তিনি। মানুষের অভাব-অভিযোগ শুনে, দলের রং না দেখেই সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেন।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

আরও পড়ুন: ‘আমি শুধু একটি পার্টিতেই যোগ দিতে পারি’, মোদীর কটাক্ষ কী ভাবে ফেরালেন টুইঙ্কল?

কমলনাথের মতোই যেন আরও এক নতুন তারকার অপেক্ষায় রয়েছে ছিন্দওয়াড়া। বাবার রেকর্ড ভাঙবেন কি না, তা ভবিষ্যৎ বলবে। কিন্তু জনপ্রিয়তার দিক থেকে এখনই সবার নজর টেনেছেন নকুল।

সিমারিয়ায় ১০১ ফুট উঁচু বজরংবলীর মূর্তি। —নিজস্ব চিত্র।

ওই হনুমান মন্দিরেই কংগ্রেসের নতুন তারকার সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। কলকাতা থেকে এসেছি শুনে বাড়িতে যেতে বললেন। নির্বাচনী প্রচার সেরে বাড়ি ফিরেই ডেকে নিলেন ছিন্দওয়াড়ায় রাহুল গাঁধীর সেনাপতি নকুলনাথ।

আরও পড়ুন: ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ বেকারত্বের হার, কোথায় গেল সেই ‘১ কোটি চাকরি’?

আলাপচারিতার শুরুতেই মধ্যপ্রদেশের ফল নিয়ে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, “এ বার কংগ্রেস ২৯টার মধ্যে ২০-র বেশি আসন পাবেই। সুষমা স্বরাজ এবং সুমিত্রা মহাজনের মতো নেত্রীরা লড়ছেন না। বিজেপি বিভিন্ন আসনে প্রার্থী দিতে গিয়ে থমকাচ্ছে। আর আমরা সব আসনেই ভাল প্রার্থী দিয়েছি। এখানে এগিয়ে থাকব।”

ভোটের মুখে নকুলনাথ অত্যন্ত ব্যস্ত। তার মধ্যেও সময় দিয়েছেন। তাই সময় নষ্ট না করে প্রশ্ন-উত্তরের পর্ব শুরু হল—

• ছিন্দওয়াড়া আসনে কত মার্জিনে জিতবেন?

জনতা বলতে পারবেন। তবে এটা বলতে পারি, আমাদের পরিবারের মাথায় জনতার আশীর্বাদ রয়েছে। ফল ভালই হবে। ‌

• ‌গরিবদের বছরে ৭২ হাজার টাকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে কংগ্রেস?

রাহুল গাঁধী ন্যায় যোজনার কথা বলেছেন। তা বাস্তবে সম্ভব। মোদী বা বিজেপি বলেছে ২ কোটি চাকরি এবং ১৫ লাখ টাকা দেবে সবার অ্যাকাউন্টে চলে যাবে। কেউ কি পেয়েছেন? ছিন্দওয়াড়াতেই নয়, আমি অনেক জায়গায় ঘুরে বেড়াই। সবাইকে জিজ্ঞেস করি, কেউ উত্তর দিতে পারেন না। ডিজিটাল ইন্ডিয়া কোথায়? পেট্রল, ডিজেল, গ্যাস সিলিন্ডারের দাম আকাশছোঁয়া। আমরা মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিই না।

• কলকাতাকে মনে পড়ে?

আমি কলকাতায় জন্মেছি। কলেজের পড়াশোনার পর দাদা-দিদির বাড়ি গিয়ে অনেক দিন ছিলাম। ১৯৯৭-২০০১ কলকাতাতেই তো ছিলাম। রসগোল্লার কথা মনে পড়ে। অনেক বন্ধু রয়েছে।

• কলকাতার রাজনীতি?

আমি যখন কলকাতায় ছিলাম, তখন জ্যোতি বসু এবং বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে লক্ষ্য করতাম। ওঁদের বক্তৃতা শুনতাম। ভাল লাগত। এখন যেটুকু খবর রাখি, পশ্চিমবঙ্গে মমতাদি ঠিকই আছেন। বাংলায় মমতাদিকেই দরকার।

(রাজনীতি, অর্থনীতি, ক্রাইম - দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)

Lok Sabha Election 2019 লোকসভা ভোট ২০১৯ Chhindwara Kamal Nath Madhya Pradesh Video Mamata Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy