গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কাণ্ডে তথ্যচুরির অভিযোগ ছিলই। সঙ্গে ছিল ভারতে ‘ফেক নিউজ’ রুখতে সরকারের কঠোর অবস্থান। তাই এ বার লোকসভা নির্বাচনের আগে দিল্লিতে একটি ‘ওয়ার রুম’ চালু করছে ফেসবুক।
ওই ওয়ার রুম থেকে ২৪ ঘণ্টাগোটা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার, ফেক নিউজ, ভুয়ো, মিথ্যে বা আপত্তিকর পোস্ট-সহ যাবতীয় বিষয় নিয়ন্ত্রণ করবে মার্ক জাকারবার্গের সংস্থা। সোমবার এমন ঘোষণাই করলেন ফেসবুকের ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার পাবলিক পলিসি ডিরেক্টর শিবনাথ ঠাকরাল। আমেরিকার পর ভারতই হবে দ্বিতীয় দেশ, যেখানে নির্বাচনের আগে আলাদা করে এই রকম ‘কন্ট্রোল রুম’ খুলছে ফেসবুক।
জনসভা, মিটিং, মিছিল তো আছেই, তার সঙ্গে ভোটের সময় জনসংযোগে প্রার্থীদের অন্যতম মাধ্যম হয়ে ওঠে সোশ্যাল মিডিয়া। কিন্তু অনেকেই তার অপব্যবহার করেন। মিথ্যা, ভুয়ো বা আপত্তিকর বার্তা ছড়ানোর চেষ্টাও চলে। ভোটের সময় সেই সব বিষয়ই আতসকাচের নীচে ফেলবে ফেসবুক। তবে কবে চালু হবে বা কবে থেকে কাজ শুরু করবে এই কন্ট্রোল রুম, সে বিষয়ে সংস্থার তরফে সবিস্তার জানানো হয়নি।
ঠাকরাল জানিয়েছেন, ফেসবুকের ক্যালিফোর্নিয়ার মেনলো পার্ক ও আয়ারল্যান্ডের ডাবলিন এবং সিঙ্গাপুরের অফিসের সঙ্গে ২৪ ঘণ্টা সমন্বয় রেখে দিল্লির এই কন্ট্রোল রুম কাজ করবে। পাশাপাশি ভারতের নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ রেখে চলবে এই ওয়ার রুম। ঠাকরাল বলেন, ‘‘কমিশনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কী ভাবে ভোটে সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার আটকানো যায়, তার চেষ্টা করবে ফেসবুক।’’
লোকসভা ভোটের ইতিহাস, আপনি কতটা ওয়াকিবহাল?
আরও পড়ুন: ইভিএম-এ প্রার্থীর ছবি, এ বার ভোটে নতুন আর কী কী চালু করল কমিশন
কী ভাবে কাজ করবে এই কন্ট্রোল রুম? ঠাকরালের দাবি, ভারতীয় নির্বাচন ব্যবস্থার উপর ইতিমধ্যেই ৪০টি দল কাজ করছে বিভিন্ন রাজ্য। এবার লোকসভা ভোটের আগে একটি কেন্দ্রীয় দল তৈরি করে দিল্লিতে কন্ট্রোল রুম তৈরি করা হবে। ওই দলের সদস্যেরা বিভিন্ন নির্বাচন সংক্রান্ত পোস্ট, মিম, মন্তব্য বার বার খুঁটিয়ে পরীক্ষা করেন। একটি দলের পরীক্ষার পরও আবার অন্য দল সেটি পরীক্ষা করে দেখে। এ ভাবে একাধিক বার পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে চলে এই প্রক্রিয়া। পাশাপাশি স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তিতেও এই পরীক্ষা চলতে থাকে। বিতর্কিত বা আপত্তিকর পোস্টের উৎস খুঁজে বের করা এবং আইন অনুযায়ী তার যৌক্তিকতা বিচার করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই সংক্রান্ত কমিশনের নিয়ম-কানুন দেখে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে লোকসভা হতে পারে, বিধানসভা ভোট নয় কেন? প্রশ্ন ফারুকের
এ ছাড়া ভুয়ো প্রোফাইল, ছবি নিয়েও কার্যত নিরন্তর গবেষণা চলে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষের দাবি, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৮-র অক্টোবর— এই এক বছরে ২০ কোটি ভুয়ো প্রোফাইল নির্ধারণ করে সেগুলি ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে। ভোটের সময়ও এই বিষয়টির উপর বিশেষ নজর রাখা হবে বলে জানিয়েছেন ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।
ভোটের সময় একাধিক রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থী প্রচুর প্রচারমূলক বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। ঠাকরাল জানিয়েছেন, আমেরিকা, ব্রাজিল এবং ব্রিটেনে সাফল্যের পর ভারতেও ‘অ্যাড ট্রান্সপারেন্সি টুল’ চালু করা হয়েছে। এর ফলে বিজ্ঞাপনটি কে দিয়েছেন, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এবং বিধিসম্মত ঘোষণা থাকে। এছাড়া সমস্ত রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন লাইব্রেরিতে জমা থাকে, যাতে প্রতিটি বিজ্ঞাপন সম্পর্কে সবিস্তার তথ্য থাকে।
(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy