Advertisement
E-Paper

‘বন্ধু’ শরদকে হারানোই এখন নীতীশের চ্যালেঞ্জ 

বিহার রাজনীতিতে বেগুসরাই, পটনা সাহিবের পরেই সবচেয়ে ‘হট সিট’  মাধেপুরা। এখানেই লালুপ্রসাদের আরজেডির টিকিটে আজ ভাগ্য নির্ধারণ হচ্ছে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা প্রাক্তন জেডিইউ সভাপতি শরদ যাদবের।

দিবাকর রায়

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৯ ০২:০০
শরদ যাদব  ও নীতীশ কুমার

শরদ যাদব ও নীতীশ কুমার

পাঁচ বছর আগে তাঁকে জেতানোর জন্য এক সপ্তাহ ধরে ঘাঁটি গেড়ে বসেছিলেন নীতীশ কুমার। পাঁচ বছর পরেও ঘাঁটি গেড়েছিলেন সেই তিনিই। তবে হারানোর জন্য!

বিহার রাজনীতিতে বেগুসরাই, পটনা সাহিবের পরেই সবচেয়ে ‘হট সিট’ মাধেপুরা। এখানেই লালুপ্রসাদের আরজেডির টিকিটে আজ ভাগ্য নির্ধারণ হচ্ছে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা প্রাক্তন জেডিইউ সভাপতি শরদ যাদবের। আর তাঁকে হারাতে সক্রিয় তাঁর একদা ঘনিষ্ঠ সহকর্মী, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। গত রবিবার প্রচার শেষ হওয়া পর্যন্ত মাধেপুরাতেই ছিলেন নীতীশ। দলীয় প্রার্থী দীনেশচন্দ্র যাদবকে নিয়ে প্রচারও করেছেন। শরদকে হারাতে চেষ্টার কোনও কসুরই রাখেননি নীতীশ।

লালু-শরদ-নীতীশকে নিয়ে মাধেপুরার রাজনীতি সেই নব্বইয়ের দশক থেকেই ঘুরপাক খেয়ে চলেছে। জয়প্রকাশ নারায়ণের আন্দোলনের সময় থেকেই শরদ যাদবের সঙ্গে সখ্যতা লালুপ্রসাদ, নীতীশ কুমারের। ১৯৮৯ সালে বিহারের বাঢ় থেকে ভোটে জিতে দিল্লি গিয়ে মন্ত্রী হন নীতীশ। ১৯৯০ সালে লালুপ্রসাদকে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাঁর। লালু, নীতীশ, শরদ, রামবিলাস সকলেই তখন জনতা দলে। উত্তরপ্রদেশের বদাঁয়ু লোকসভা কেন্দ্র ছেড়ে লালুপ্রসাদের আমন্ত্রণেই ১৯৯১ সালে মাধেপুরায় লড়তে এসেছিলেন শরদ।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কার্যত লালু-শরদ ঘনিষ্ঠতার জেরে ১৯৯৪ সালে জনতা দল ছাড়তে বাধ্য হন নীতীশ। জর্জ ফার্নান্ডেজের সঙ্গে সমতা পার্টি তৈরি করেন। ১৯৯৬ সালে লালুর সমর্থনেই মাধেপুরা থেকে ফের জেতেন শরদ। দুই যাদব নেতার বন্ধুত্ব তখন চরমে। তাঁদের নিয়ন্ত্রণেই তৈরি হয় কেন্দ্রের সরকারও। কিন্তু পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির জেরে ১৯৯৭ সালে তাতে চিড় ধরে। জনতা দল সভাপতি লালুর বিরুদ্ধে জোট তৈরি করেন শরদ এবং এইচ ডি দেবগৌড়া। দল ছেড়ে লালু তৈরি করেন আরজেডি। ১৯৯৮ সালে মধ্যবর্তী নির্বাচনে শরদের বিরুদ্ধে মাধেপুরাতেই ভোটে দাঁড়ান লালুপ্রসাদ। হারিয়ে দেন বন্ধু থেকে শত্রু হওয়া শরদকে।

এরই মধ্যে নীতীশের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন শরদ। তৈরি হয়েছে জেডিইউ। দেবগৌড়াও তৈরি করেছেন জেডিএস। ১৯৯৯ সালে জেডিইউয়ের টিকিটে মাধেপুরাতেই লালুপ্রসাদকে হারিয়ে দেন শরদ। কিন্তু ২০০৪ সালে ফের মাধেপুরা দখল করেন লালু। যদিও পরে আসনটি ছেড়ে দেন তিনি। সেখানেই উপ-নির্বাচনে জিতে আসেন আরজেডির বাহুবলী প্রার্থী পাপ্পু যাদব। ২০০৯ সালে লালুপ্রসাদ না লড়ায় জয় সহজ হয় শরদের। গত লোকসভা নির্বাচনে নীতীশ কুমার চেষ্টা করেও লালুপ্রসাদের প্রার্থী পাপ্পু যাদবকে হারাতে পারেননি। ২০১৫ সালে লালুর সঙ্গে নীতীশের জোটে প্রাথমিক ভাবে আপত্তি ছিল শরদের। কিন্তু নীতীশের কথায় শেষ পর্যন্ত সম্মতি দিয়েছিলেন। কিন্তু ২০১৬ সালে সেই জোট ভেঙে যাওয়াতেই বেঁকে বসেন শরদ। নতুন দল তৈরি করে হাত মেলান লালুপ্রসাদের সঙ্গেই।

বিহারের যাদব দুর্গ বলে পরিচিত মাধেপুরা। ফের শরদ আর লালু একসঙ্গে। তবে এ বার ত্রিমুখী লড়াই। লালুপ্রসাদ জেলে। গত বারের জয়ী সাংসদ পাপ্পু যাদবও জন অধিকার পার্টির প্রার্থী। শরদকে হারাতে তাই বেগ খুব একটা পেতে হবে বলে মনে করছেন না নীতীশ ঘনিষ্ঠরা।

Lok Sabha Election 2019 Politics Nitish Kumar Sharad Yadav
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy