Advertisement
০৮ মে ২০২৪

‘দাবি মেনে’ কেরলেও প্রার্থী রাহুল, আসল শত্রু কে? খোঁচা কারাটের

কংগ্রেসের তরফে রবিবার আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে, ওয়েনাডে প্রার্থী হবেন দলের সভাপতি।

বিজয়ওয়াড়ায় প্রচারে রাহুল গাঁধী। রবিবার। ছবি: পিটিআই

বিজয়ওয়াড়ায় প্রচারে রাহুল গাঁধী। রবিবার। ছবি: পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:১৪
Share: Save:

শেষ পর্যন্ত জল্পনার অবসান! উত্তরপ্রদেশের অমেঠীর পাশাপাশি কেরলের ওয়েনাড কেন্দ্র থেকেও এ বার লোকসভা ভোটে লড়বেন রাহুল গাঁধী। অতীতে যে ভাবে ইন্দিরা ও সনিয়া গাঁধী একই সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের জোড়া আসন থেকে লড়েছিলেন।

কংগ্রেসের তরফে রবিবার আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে, ওয়েনাডে প্রার্থী হবেন দলের সভাপতি। প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও প্রবীণ কংগ্রেস নেতা এ কে অ্যান্টনি এআইসিসি দফতরে বলেছেন, কেরল, তামিলনাড়ু ও কর্নাটকথেকে রাহুলকেপ্রার্থী করার দাবি উঠছিল দলের মধ্যেই। রাহুল কেরলের ওয়েনাড় থেকে লড়তে সম্মত হয়েছেন। অ্যান্টনির বক্তব্য, ‘‘এই কেন্দ্রটি কেরল, তামিলনাড়ু ও কর্নাটকের সংযোগস্থলে। রাহুল সেখানে প্রার্থী হওয়ায় গোটা দক্ষিণ ভারতে কংগ্রেসের প্রভাব বাড়বে।’’

জোড়া আসনে রাহুলের প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা হতেই কংগ্রেসকে কটাক্ষ শুরু করেছে বিজেপি শিবির। আবার প্রবল প্রতিক্রিয়া হয়েছে বাম শিবিরেও। বিজেপির খোঁচা, অমেঠীতে যথেষ্ট ‘নিরাপদ’ না হওয়ায় রাহুল ওয়েনাডে চলে গেলেন। আর বামেদের বক্তব্য, এই নির্বাচনে লড়াই হচ্ছে বিজেপির বিরুদ্ধে। অথচ এমন রাজ্যে এমন কেন্দ্র কংগ্রেস সভাপতি বেছে নিলেন, যেখানে তাঁর মূল লড়াই বামেদের বিরুদ্ধে। রাহুলের বিজেপি-বিরোধিতার আন্তরিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন সিপিএমের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট। ভোট পরবর্তী পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে বিজেপি-বিরোধী ঐক্যে যাতে প্রভাব না পড়ে, তার জন্য আবার আসরে নামতে হয়েছে কংগ্রেসকে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কেরলথেকে রাহুলের লড়ার প্রস্তাব সামনে আসতেই অমেঠীতে বিজেপির প্রার্থী স্মৃতি ইরানি রব তুলেছিলেন, ‘‘ভাগ রাহুল ভাগ!’’উত্তরপ্রদেশের প্রচার সভায় বিজেপি সভাপতি অমিত শাহও এ দিন বলেন, ‘‘ভয় পেয়ে অমেঠী ছেড়ে পালাচ্ছেন রাহুল গাঁধী!ইউপিএ আমলে হিন্দুদের সন্ত্রাসবাদী বলা শুরু করেছিলেন রাহুলেরা। কিন্তু অভিযুক্ত সকলেই সম্প্রতি আদালতে মুক্তি পেয়েছেন। কেরলেও এমন আসন বেছে নিয়েছেন রাহুল, যেখানে তোষণের রাজনীতি করতে পারবেন।’’ প্রসঙ্গত, ওয়েনাড কেন্দ্রে সংখ্যালঘু ভোট অনেকটাই নির্ণায়ক শক্তি। মানেকা গাঁধী অবশ্য বলেছেন, ‘‘আমি কী করে বলব, রাহুল ভয় পেয়ে অমেঠী থেকে পালালেন কি না? তবে অমেঠী, ওয়েনাড দু’টোই আমরা জিতব।’’

গত দু’বার কংগ্রেসের জেতাওয়েনাডে এলডিএফের তরফে প্রার্থী রয়েছে সিপিআইয়ের। কারাট তাই বলেছেন, ‘‘ওয়েনাড থেকে রাহুলের লড়ার অর্থ বিজেপির বদলে বামেদের সরাসরি নিশানা করা।’’কংগ্রেসের রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা অবশ্য ব্যাখ্যা দিয়েছেন,‘‘ডান-বামের বিষয় নয়। লড়াইটা আরও বড়। নরেন্দ্র মোদী তাঁর বিভাজনের রাজনীতি করে উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের মধ্যেও বিভেদ তৈরি করেছেন। রাহুল সেই বিভাজনের মধ্যে সেতু রচনা করবেন।’’

গত লোকসভা কেন্দ্রে মোদীও দু’টি আসনে লড়েছেন। বারাণসী রেখে মোদী পরে বদোদরা ছেড়ে দেন। প্রশ্ন হল, রাহুল দুই আসনেই জিতলে কোনটি ছেড়ে দেবেন? কংগ্রেস সূত্রের ইঙ্গিত, প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাকে বারাণসীতে প্রার্থী করা হতে পারে। তাতে মোদীকে অনেকটাই বেঁধে রাখা যাবে সে কেন্দ্রে। প্রিয়ঙ্কা সেখানে না জিতলে পরে রাহুল বোনের জন্য অমেঠী ছেড়ে দিতে পারেন।

কেরলে বিজেপির জন্য অনেকদিন ধরেই জমি তৈরির চেষ্টা করছে আরএসএস। শবরীমালা-বিতর্কের সময় লড়াইটা বাম বনাম বিজেপিরই তৈরি হয়েছিল অনেকটা। কিন্তু রাহুল প্রার্থী হয়ে লড়াইয়ের অভিমুখটাও অনেকটা ঘুরিয়ে দিলেন বলে কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE