প্রতীকী ছবি।
ভারতে ভোটের মুখে ভুয়ো খবর ছড়ানো রুখতে তারা আরও তৎপর হয়েছে বলে দাবি করল হোয়াটসঅ্যাপ। আনন্দবাজারকে এক ই-মেল সাক্ষাৎকারে হোয়াটসঅ্যাপের এক মুখপাত্র জানান, এ জন্য নতুন প্রচার কর্মসূচিও নিয়েছেন তাঁরা। সেই কর্মসূচিতে আমজনতাকে বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছে, হোয়াটসঅ্যাপকে যথাযথ ব্যবহার করে কী ভাবে তাঁরা ভুয়ো খবর চিনবেন এবং তার ছড়ানো রুখবেন।
গত বছর ডিসেম্বরেই ভুয়ো খবর রুখতে হোয়াটসঅ্যাপ একটি বিজ্ঞাপনী প্রচার-সিরিজ শুরু করেছিল। বিজ্ঞাপনগুলির স্লোগান ছিল, ‘আনন্দ ছড়ান, গুজব নয়’। বাস্তব জীবনের সঙ্গে মানানসই নানা চরিত্র ও ঘটনার মধ্য দিয়ে ওই বিজ্ঞাপনগুলিতে ভুয়ো খবরের বিপদ থেকে সচেতন থাকার বার্তা দেওয়া হচ্ছিল। এ বার সেই প্রচার কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যায়েই ভুয়ো খবরের বিরুদ্ধে সচেতনতাকে আরও ছড়িয়ে দিতে চাইছে হোয়াটসঅ্যাপ। লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখেই তা করা হয়েছে বলে দাবি হোয়াটসঅ্যাপের। ই-মেলে পাঠানো বিবৃতিতে ভারতে হোয়াটসঅ্যাপের প্রধান অভিজিৎ বসু বলেন, ‘‘নিরাপদ ভোট আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সে জন্যই নির্বাচন কমিটি ও সহযোগী স্থানীয় সংস্থাদের সাহায্যে তৎপরতার সঙ্গে আমরা কাজ করছি।’’
হোয়াটসঅ্যাপের মুখপাত্র জানিয়েছেন, নতুন প্রচার কর্মসূচিতে কয়েক সেকেন্ডের ছোট ছোট ভিডিয়োতে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের সচেতনতার বার্তা দেওয়া হবে। সেই প্রচার চালানো হবে সোশ্যাল মিডিয়ার নানা মঞ্চে। কীভাবে ভুয়ো খবর চেনা যায়, কী ভাবে বোঝা যায় কোনও মেসেজ ‘ফরওয়ার্ডেড’ অর্থাৎ অনেক হাত ঘুরে এসেছে, কীভাবে কোনও সন্দেহজনক প্রেরককে ব্লক করা যায় ও কীভাবে কোনও গ্রুপ ছাড়তে হয়— এই চারটি বিষয়ে কয়েক সেকেন্ডের ছোট ছোট ভিডিয়ো তৈরি করা হয়েছে। অভিজিৎ জানাচ্ছেন, ‘‘হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীরা যাতে ভুয়ো খবর চিনতে ও ভুয়ো খবর ছড়ানো ঠেকাতে পারেন সে জন্য আমাদের সচেতনতা প্রচারের পরিধি আরও বাড়ানো হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপে নিরাপত্তা বাড়াতে এটি আরেকটি পদক্ষেপ।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
ভুয়ো খবর ছড়ানোর মাধ্যম হিসেবে হোয়াটসঅ্যাপকে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে দেশে বারবারই অভিযোগ উঠেছে। গুজবের মাধ্যমে হিংসা ছড়ানোয় গত বছর গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে ২০ জনের। পরিস্থিতি গুরুতর আকার নেওয়ায় হোয়াটসঅ্যাপ কর্তাদের কেন্দ্রীয় সরকার একাধিকবার তলবও করেছে। ভোটের মুখেও একাধিক ভুয়ো খবর, ছবি হোয়াটসঅ্যাপে ‘ভাইরাল’ হয়েছে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, পরের সফটওয়্যার আপডেটে হোয়াটসঅ্যাপে গ্রুপ অ্যাডমিনদের বহু হাত ঘুরে আসা মেসেজ চেনা ও তা ‘ব্লক’ করার উপায় থাকবে। ভুয়ো খবর ধরার বিশেষজ্ঞ, সাংবাদিক প্রতীক সিন্হা অবশ্য মনে করছেন, হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুকের মতো সংস্থাগুলি একাধিকবার নানা পদক্ষেপ করলেও ভুয়ো খবর ছড়ানো ঠেকানো যাচ্ছে না।
হোয়াটসঅ্যাপের আগের বিজ্ঞাপন-সিরিজের চরিত্রগুলো ছিল মূলত শহুরে। কিন্তু হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে গুজব ছড়ায় প্রত্যন্ত গ্রামেও। সেক্ষেত্রে বিজ্ঞাপনী প্রচার ভুয়ো খবর ঠেকাতে কতটা সাহায্য করবে? হোয়াটঅ্যাপের মুখপাত্র জানাচ্ছেন, ইংরেজি, হিন্দির সঙ্গে বাংলা, মারাঠি, তেলুগু, অসমিয়ার মতো মোট ১০টি আঞ্চলিক ভাষায় এমন প্রচার চলবে। তাই দেশজুড়ে থাকা হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের কাছে সেই বার্তা পৌঁছে যাবে বলে দাবি হোয়াটসঅ্যাপের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy