Advertisement
E-Paper

পুরনো রিপোর্ট বদলে গেল ১ শতাংশ বৃদ্ধির হারে, কী ভাবে সম্ভব? উঠছে প্রশ্ন

অর্থনীতির যাবতীয় যুক্তি উড়িয়ে মোদী সরকার দাবি করল, মোদী জমানায় আর্থিক বৃদ্ধির সর্বোচ্চ হার ছিল নোট বাতিলের বছরে! 

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:২২
বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী। ছবি: পিটিআই।

বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী। ছবি: পিটিআই।

এ যেন ভানুমতীর খেল্!

অর্থনীতির যাবতীয় যুক্তি উড়িয়ে মোদী সরকার দাবি করল, মোদী জমানায় আর্থিক বৃদ্ধির সর্বোচ্চ হার ছিল নোট বাতিলের বছরে!

কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দফতর বা সিএসও তাদের রিপোর্টে দেখিয়েছিল, নোট বাতিলের বছর, অর্থাৎ ২০১৬-’১৭-য় বৃদ্ধির হার ছিল ৭.১%। সেই হিসেব সংশোধন করে সিএসও আজ যে নয়া রিপোর্ট পেশ করেছে, তাতে ওই সময়ে বৃদ্ধির হার বেড়ে হয়েছে ৮.২%। এমনকি জিএসটি চালুর বছর, অর্থাৎ ২০১৭-’১৮-তেও বৃদ্ধির হার সংশোধিত হয়েছে। যার জেরে বৃদ্ধির হার ৬.৭% থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.২%।

সিএসও নিজের হিসেব সংশোধন করে বৃদ্ধির হার বাড়াচ্ছে, কমাচ্ছে, এটা নতুন নয়। কিন্তু তাতে রদবদল হয় সামান্যই। একেবারে ১ শতাংশের ফারাক হয় না। পরিসংখ্যানবিদদের মন্তব্য, মোদী জমানায় বৃদ্ধির হিসেবের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সংশয় আগেই তৈরি হয়েছিল। এ বার সেটা রসিকতার স্তরে নেমে গেল। অর্থনীতিবিদদেরও প্রশ্ন, কোন জাদুতে এই বেড়ে যাওয়াটা সম্ভব হল? মোদী সরকারের পাঁচ বছরে আর কোনও বছরেই বৃদ্ধির হার ৮ শতাংশের উপরে যায়নি। নোট বাতিলের বছর ছাড়া। এক অর্থনীতিবিদের মন্তব্য, ‘‘তা হলে তো বৃদ্ধির হার ঠেলে তোলার জন্য এত নীতি তৈরির দরকারই নেই! প্রতি বছরই এক বার করে নোট বাতিল করে দিলে হয়!’’

আরও পড়ুন: আজ ভোট-বাজেট, কমতে পারে আয়করের বোঝা, বাড়বে মধ্যবিত্তের সঞ্চয়

এ দিন সংসদে রাষ্ট্রপতির বক্তৃতায় ছিল নোট বাতিলের একগুচ্ছ গুণগান। অথচ কৃষি মন্ত্রক-সহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন তথ্য-পরিসংখ্যানই দেখিয়েছে, নোট বাতিলের ফলে ধাক্কা খেয়েছে অর্থনীতি। বিশেষত অসংগঠিত ক্ষেত্র। বহু ছোট কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। সমস্যায় পড়েন চাষিরাও। নগদের অভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য থমকে যায়। তার রেশ কাটতে না কাটতেই ২০১৭-র জুলাইয়ে চালু হয় জিএসটি। তাতে আরেক দফায় ব্যবসা-বাণিজ্য, কারখানার উৎপাদন ধাক্কা খায়। হিসেব বলে, এ সবের ফলে অর্থনীতির গতি শ্লথ হবে, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মোদী-জাদুতে সেটাই হয়নি!

আরও পড়ুন:রাহুলের মোকাবিলায় কি যুবরাজ হতে পারবেন ‘ব্যাটম্যান’?

নোট বাতিলের বছরে বৃদ্ধির হার বেড়েছে বলে দেখানো হলেও তার পরের বছরেই বেকারির হার গত ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ বলে এনএসএসও-র রিপোর্ট ফাঁস হয়েছে। যে রিপোর্ট ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছিল বলে অভিযোগ মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। সরকারের পক্ষে দাঁড়িয়ে নীতি আয়োগের সিইও অমিতাভ কান্ত দাবি করেছেন, ৭.২% বৃদ্ধি, অথচ কোনও চাকরি তৈরি হচ্ছে না, এটা হতেই পারে না। যা শুনে কংগ্রেস বলছে, তা হলে হয় সরকার বৃদ্ধির হিসেব বড় করে দেখাচ্ছে, নয়তো চাকরির হিসেব লুকোচ্ছে!
জিএসটি-নোট বাতিলের বছরের বৃদ্ধির হার বেড়ে যাওয়ায় মোদী সরকারের পাঁচ বছরের গড় বৃদ্ধির হারও ৭.২ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭.৪ শতাংশে পৌঁছেছে। কংগ্রেস নেতাদের অভিযোগ, মনমোহন জমানায় বৃদ্ধির হার কমিয়ে মোদী জমানার বৃদ্ধির হার বেশি দেখানোটাই এ সরকারের আসল উদ্দেশ্য। গত নভেম্বরেই অভিযোগ ওঠে, কারচুপি করে মনমোহন জমানার বৃদ্ধির হার কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করছে মোদী সরকার।

Demonetization Growth GDP Narendra Modi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy