Advertisement
E-Paper

‘মোক্ষের’ খোঁজেই কি ফাঁস গলায়!

কোনও গুপ্ত সাধনা বা অতিপ্রাকৃতে বিশ্বাস করে এই ‘মোক্ষ’র লোভেই শনিবার মধ্যরাতে বুরারির সন্তনগরের গোটা ভাটিয়া পরিবার চোখ, মুখ বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে পড়েছিল।

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৮ ০৩:৩৬
বাড়িটির সামনে ভিড় জমেছে। ছবি: এপি

বাড়িটির সামনে ভিড় জমেছে। ছবি: এপি

‘হাত, আঁখ অউর মু বাঁধনে সে হি মোক্ষ কি প্রাপ্তি হোগি’। কোনও গুপ্ত সাধনা বা অতিপ্রাকৃতে বিশ্বাস করে এই ‘মোক্ষ’র লোভেই শনিবার মধ্যরাতে বুরারির সন্তনগরের গোটা ভাটিয়া পরিবার চোখ, মুখ বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে পড়েছিল বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা পুলিশের।

সোমবার সকালে বুরারির সন্তনগরের বাড়ির সামনে দাঁড়ালে বিশ্বাস করা মুশকিল, এই বাড়ির বৃদ্ধা, মাঝবয়সি থেকে কিশোর-কিশোরীদের ১১ জনই মৃত্যু কামনা করছিলেন। এই বাড়ি থেকেই রবিবার ১১টি মৃতদেহের সঙ্গে এক রহস্যময় ডায়েরিও উদ্ধার হয়েছে। যা দেখে পুলিশেরও ধারণা, শেষ মুহূর্তে কোনও ঐশ্বরিক শক্তিতে তাঁরা বেঁচে যাবেন বা তাঁদের পুনর্জন্ম ঘটবে, এমন কুসংস্কারই ভাটিয়া পরিবারে তৈরি হয়েছিল। ১১ জনের প্রাথমিক ময়না-তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, সকলেরই গলায় ফাঁস দিয়ে মৃত্যু হয়েছে। কারও শরীরে চোট-আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। যা থেকে অনুমান, কেউ জোর করে তাঁদের গলায় ফাঁস দেয়নি।

সন্তনগরের এই বাড়িতে থাকতেন ৭৭ বছরের নারায়ণী দেবী, তাঁর দুই ছেলে ভবনেশ ও ললিত ও তাঁদের স্ত্রী-পুত্র-কন্যারা। আদতে রাজস্থানের বাসিন্দা হলেও গত দু’দশক ধরে বুরারিতে থাকেন ভাটিয়ারা। নারায়ণী দেবীর বিধবা মেয়ে প্রতিভা ও তাঁর মেয়ে প্রিয়ঙ্কাও এই বাড়িতেই থাকতেন। এই প্রিয়ঙ্কার সম্প্রতি বিয়ে ঠিক হয়েছিল।

ভাটিয়া-বাড়ির এই ১১টি পাইপ নিয়েই প্রশ্ন। নিজস্ব চিত্র।

বাড়ির একতলাতেই ভবনেশ মুদির দোকান চালাতেন। ললিত প্লাইউডের ব্যবসা করতেন। কোনও অর্থ সঙ্কট ছিল না। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, শনিবার রাতে যখন দুই ভাই দোকান বন্ধ করছেন, তখনও শাটার নামানোর পরে দরজার ফাঁকে ইঁদুর ঢোকা বন্ধ করতে কাগজ গুঁজে দিয়েছিলেন। ভবনেশের তিন ছেলেমেয়ে। ২৫ থেকে ১৫-র মধ্যে বয়স। ললিতের এক ছেলের বয়সও ১৫ বছর।

আরও পড়ুন: খুনই হয়েছেন ভাটিয়ারা, দাবি আত্মীয়দের

আছে তান্ত্রিক-যোগ, ধারণা বিশেষজ্ঞের

ভাটিয়াদের ছেলেরা রবিবার পাড়ার বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল খেলে, রাতে একসঙ্গে বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখারও পরিকল্পনা করেছিল। প্রতিবেশীদের প্রশ্ন, সপরিবার আত্মহত্যা করার পরিকল্পনা থাকলে কেউ এমন আচরণ করেন কি? আত্মীয়দের দাবি, ভাটিয়াদের খুনই করা হয়েছে। ললিতের কর্মী আহমেদ আলি জানাচ্ছেন, ললিতের মাথায় প্লাইউড পড়ে গিয়ে বাকশক্তি চলে যায়। কিছুদিন হল তিনি মৃদু স্বরে কথা বলার ক্ষমতা ফিরে পেয়েছিলেন। প্রতিবেশীদের ধারণা, ললিতই গুপ্ত সাধনা করতেন। তার ফলেই তিনি উপকার পেয়েছেন বলে বিশ্বাস তৈরি হয়। ওই বাড়িতে ১১টি পাইপ রয়েছে। অতিপ্রাকৃতে বিশ্বাস অনুযায়ী ১১ জনের আত্মার মুক্তির জন্যই ১১টি পাইপ কি না, সেই প্রশ্নও উঠছে।

Delhi Suicide Murder Crime Burari Burari Deaths
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy