Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Narendra Modi

আধ মিনিটেই ইট গাঁথবেন মোদী

অযোধ্যা ট্রাস্ট সূত্রে বলা হচ্ছে, অভিজিৎ মুহূর্ত হল সর্বসিদ্ধকর। পণ্ডিতদের মতে, অভিজিৎ মুহূর্তেই জন্ম‌ হয়েছিল রামের।

ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

অনমিত্র সেনগুপ্ত
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২০ ০৩:২৬
Share: Save:

সব মিলিয়ে ৩২ সেকেন্ড। অভিজিৎ মুহূর্তের মাঝে সবচেয়ে শুভ সময়ের মেয়াদ ওইটুকুই! ফলে আগামিকাল আধ মিনিটের মধ্যে রামমন্দিরের শিলান্যাসের ইট গাঁথতে হবে নরেন্দ্র মোদীকে। প্রশাসন জানিয়েছে, সব আগে থেকেই প্রস্তুত করা থাকবে। প্রধানমন্ত্রী শুধু প্রায় ৪০ কেজির প্রতীকী রুপোর ইটটি সিমেন্ট দিয়ে গেঁথে দেবেন শিলান্যাস স্থলে।

অযোধ্যা ট্রাস্ট সূত্রে বলা হচ্ছে, অভিজিৎ মুহূর্ত হল সর্বসিদ্ধকর। পণ্ডিতদের মতে, অভিজিৎ মুহূর্তেই জন্ম‌ হয়েছিল রামের। আর কাশীর বিশিষ্ট জ্যোতিষী আচার্য গণেশ্বর রাজ রাজশ্বর শাস্ত্রী গুনেগেঁথে জানিয়েছেন, তার মধ্যে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিট‌ ৮ সেকেন্ড থেকে ১২ টা ৪০ মিনিট ৪০ সেকেন্ড-- এই ৩২ সেকেন্ড হল সবচেয়ে শুভ ক্ষণ। শিলচরের অসম বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক ভারতীয় সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক অর্জুনদেব সেনশর্মা জানান, “দিনটি দেবতা গড়ার জন্য শুভ। দিনের শুরু শোভন যোগ দিয়ে, আর শেষ হচ্ছে সৌভাগ্য যোগে। শান্তিকর্মের জন্য দিনটি প্রশস্ত।”

মন্দিরের নির্মাণের প্রশ্নে নানা বিধি রয়েছে। পূজারীদের মতে, প্রত্যেকটি মন্দির হল এক-একটি যন্ত্র। তাই তার জ্যামিতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কী ভাবে মন্দির গঠন হবে সে প্রসঙ্গে বৃহৎসংহিতায় বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া রয়েছে। তাতে রামমন্দির কী ভাবে হবে, মন্দিরের গঠন কেমন হবে, রামযন্ত্র কী হবে, সে সম্পর্কে উল্লেখ রয়েছে। মন্দিরে কোন কোন প্রতীক থাকবে, যজ্ঞবিধি কেমন হবে, তার ন্যাস কেমন হবে— সবই দেবতা ভেদে ভিন্ন। অযোধ্যাতেও সব নিয়ম মেনেই মন্দির নির্মাণে হাত দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর সম্ভাব্য সফরসূচি

• সকাল ৯:৩০: বিশেষ বিমানে দিল্লি থেকে রওনা

• ১০:৩০: লখনউয়ে বিমানবন্দরে মোদী

• ১০:৪০: হেলিকপ্টারে অযোধ্যা যাত্রা

• ১১:৩০: সাকেত কলেজের হেলিপ্যাডে পৌঁছবেন প্রধানমন্ত্রী

• ১১:৪০: কনভয় প্রথমেই হনুমানগড়ি মন্দিরে

• দুপুর ১২:০০: রাম জন্মভূমিতে পৌঁছে দর্শন রামলালাকে

• ১২:১০: পারিজাতের চারা রোপণ

• ১২:১৫-১২:৪০: ভূমিপুজো ও শিলান্যাস

• ১২:৪৫-২:০০: মঞ্চে মোদী, যোগী আদিত্যনাথ, মোহন ভাগবতের বক্তৃতা। বৈঠক শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের সদস্যদের সঙ্গে

• দুপুর ২:১৫: অযোধ্যা থেকে দিল্লির পথে মোদী

শিলান্যাস শুরুর আগেই অবশ্য শুরু হয়ে যাবে ভূমিপুজো অনুষ্ঠান। পুরাণবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী বলছেন, “ভূমিপুজো হল মাদার আর্থ বা বসুমতীর পুজো। নির্মাণকাজ শুরুর আগে ওই পুজোর মাধ্যমে প্রকৃতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্ব ধরিত্রীকে সম্মান দেখানো হয়। জমিতে যে নির্মাণকাজ শুরু হতে চলেছে, তার জন্য প্রকৃতি ও বসুমতীর কাছে অনুমতি প্রার্থনা করা হয়। একই সঙ্গে বসুমতী হল বিভিন্ন প্রাণী ও ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অনুজীবের বাসস্থান। নির্মাণকার্যের ফলে তাদের যে গৃহহীন হতে হচ্ছে তার জন্যেও ক্ষমা চাওয়া হয় ভূমিপুজার মাধ্যমে।” পুজোয় বাস্তুপুরুষ ও বাস্তুনাগের কাছে ক্ষমা চাইতে হয়। কারণ, বাস্তুনাগের উপরে নির্মাণকার্য করা হয়ে থাকে। এখানে বাস্তুনাগ বলতে শেষনাগকে বোঝায়। তাঁর শরীরের কোনও অংশে মন্দির নির্মাণ হচ্ছে সেটিও খুব গুরুত্বপূর্ণ।

তবে শুধু মন্দির নয়, যে কোনও নির্মাণের আগেই হিন্দুদের মধ্যে ভূমিপুজোর প্রথা রয়েছে। তবে মন্দির নির্মাণের আগে ভূমিপুজোর কিছু নির্দিষ্ট নিয়মকানুন রয়েছে। পার্থক্য রয়েছে বৈষ্ণব ও শৈব মন্দির পুজো ও প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও। নৃসিংহবাবুর বলেন, “রাম হলেন বিষ্ণুর অবতার। সুতরাং অযোধ্যায় যে মন্দির তৈরি হচ্ছে, তা বৈষ্ণব প্রথা মেনে হওয়ার কথা। স্বভাবতই এ ক্ষেত্রে পুজোতে শ্বেতচন্দন, সাদা ফুল এবং তুলসী পাতার ব্যবহার বেশি হবে। লাল ফুল ব্যবহার হবে না। তেমনি শৈব মন্দির হলে রক্তচন্দন, বেলপাতার ব্যবহার বেশি হত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi Ram Mandir Ayodhya
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE