Advertisement
E-Paper

স্থায়ী পেনশন, পিএফে হাত ধুয়ে ফেলল ত্রিপুরা

ত্রিপুরার অর্থ দফতর গত সপ্তাহে বিজ্ঞপ্তি (নং: এফ বি (১)-ফিন (জি)/২০০৪ (পি-১)) জারি করে জানিয়ে দিয়েছে, নতুন সরকারি কর্মীদের জন্য আর স্থায়ী পেনশনের ব্যবস্থা থাকবে না। যাঁরা ১ জুলাই, ২০১৮ থেকে কাজে যোগ দেবেন, তাঁদের অবসরকালীন পাওনা বিবেচিত হবে ‘কন্ট্রিবিউটরি পেনশন স্কিম’ মেনে।

 সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৮ ০৩:১৬

বিধানসভা ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি ছিল ঘরে ঘরে চাকরি, সরকারি কর্মীদের জন্য নতুন বেতন কমিশনের মাধ্যমে বাড়তি মাইনে এবং আরও একগুচ্ছ সুযোগ-সুবিধার। ভোটে জিতে ত্রিপুরায় ক্ষমতায় আসার কয়েক মাসের মধ্যে বিজেপি সরকার সিদ্ধান্ত নিল, সরকারি কর্মী বা শিক্ষক হিসেবে যাঁরা নতুন চাকরিতে ঢুকবেন, তাঁদের জন্য নির্দিষ্ট পেনশন বলে আর কিছু থাকবে না। থাকবে না প্রভিডেন্ট ফান্ডও। এমন সিদ্ধান্তের জেরে মানুষের সঙ্গে ‘প্রতারণা’র অভিযোগে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব সিপিএম ও তৃণমূল।

ত্রিপুরার অর্থ দফতর গত সপ্তাহে বিজ্ঞপ্তি (নং: এফ বি (১)-ফিন (জি)/২০০৪ (পি-১)) জারি করে জানিয়ে দিয়েছে, নতুন সরকারি কর্মীদের জন্য আর স্থায়ী পেনশনের ব্যবস্থা থাকবে না। যাঁরা ১ জুলাই, ২০১৮ থেকে কাজে যোগ দেবেন, তাঁদের অবসরকালীন পাওনা বিবেচিত হবে ‘কন্ট্রিবিউটরি পেনশন স্কিম’ মেনে। কেন্দ্রের ওই প্রকল্পের আদলে ত্রিপুরা সরকারও নিজস্ব নিয়ম-বিধি চালু করছে। বিজ্ঞপ্তিতে রাজ্য সরকারের যুক্তি, পেনশন খাতে ২০০৬-০৭ সালে রাজ্যের খরচ হত ২৬৭ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা। সেই বোঝা বেড়ে ২০১৭-১৮ সালে ১৬০৫ কোটি এক লক্ষে দাঁড়িয়েছে। ভবিষ্যতের নাগরিকদের উপরে আর বোঝা কমানোর লক্ষ্যেই পেনশন ব্যবস্থায় সংস্কার করা হচ্ছে।

কেন্দ্রে অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানায় ২০০৩ সালে চালু হয়েছিল ‘‘কন্ট্রিবিউটরি পেনশন স্কিম’। যা কার্যকর হয় ১ জানুয়ারি, ২০০৪ থেকে। ত্রিপুরা সরকারের বক্তব্য, অসম, হিমাচল, কর্নাটক, অন্ধ্র-সহ অনেক রাজ্য কেন্দ্রের ওই ম়ডেল মেনে নিয়েছে। ত্রিপুরাও এ বার সেই পথে যাবে। এর ফলে সরকারি কর্মচারীদের বেতনের একাংশ জমা নেওয়া হবে পেনশন স্কিমের জন্য। সেই তহবিল বিনিয়োগ করা হবে শেয়ার বাজারে। কর্মীদের অবসরের সময়ে শেয়ারে যা দাম থাকবে, তার উপরেই নির্ভর করবে তাঁদের অবসরকালীন প্রাপ্তি। এই সিদ্ধান্তের ফলে এখন কর্মরত সরকারি কর্মীদের একাংশের মধ্যেও তৈরি হয়েছে জল্পনা ও আতঙ্ক।

ত্রিপুরার উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা অর্থমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা আনন্দবাজারের কাছে ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরার মতো কয়েকটি রাজ্য ছাড়া সকলেই নতুন ব্যবস্থা মেনে নিয়েছে। ত্রিপুরায় নতুন নিয়োগ এখনও চালু হয়নি। নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন বিধি কার্যকর হবে।’’ আর বর্তমান কর্মীদের ক্ষেত্রে? উপ-মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস, ‘‘এই নিয়মের কোনও ‘রেট্রোস্পেক্টিভ এফেক্ট’ হবে না। অনেক বছর ধরে যাঁরা চাকরি করছেন, তাঁদের কর্মদক্ষতা যাচাইয়ের জন্য যেমন প্রশাসনিক পর্যালোচনা হয়, তেমন হবে।’’ বিরোধীদের অবশ্য আশ‌ঙ্কা, প্রশাসনিক পর্যালোচনার নামে অনেকের উপরে খাঁড়া নামবে।

আরও পড়ুন: নীরব মোদী নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর ঢাল গাঁধী-বিড়লা যোগ

সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী বাদল চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘বামফ্রন্ট সরকার ২০০৩ সালের ওই প্রকল্প মানেনি। বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় এসে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক— সব রকম ভাবে মানুষের দমবন্ধ করে দিতে চাইছে।’’ ত্রিপুরার দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতা তথা বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্তেরও বক্তব্য, ‘‘বাংলায় তৃণমূল সরকারের উপরেও তো ঋণের বোঝা আছে। তারা তো কর্মীদের পেনশন তুলে দেয়নি! বিজেপি সরকারি কর্মীদের পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে এসে এখন কেড়ে নিচ্ছে!’’

Tripura BJP CPM Biplab Kumar Deb
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy