—ফাইল চিত্র।
তিন তালাককে ঘিরে এ বার শুরু হয়ে গেল রাজনীতিও। মোদী সরকারের মন্ত্রী অরুণ জেটলি এত বছর ধরে এই প্রথা জিইয়ে রাখার জন্য দুষলেন পুরনো সরকারকে। জবাবে কংগ্রেস বলল, বিজেপির রাজনীতির ফাঁদে পা দেবে না তারা।
জেটলি আজ এক নিবন্ধ লিখে বলেন, ‘‘তিন তালাকের বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সামনে প্রশ্ন একটাই। পার্সোনাল ল’ সংবিধানে দেওয়া মৌলিক অধিকারের সঙ্গে খাপ খাচ্ছে কি না। অতীতে সরকারগুলি এটি নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান নিতে পিছিয়ে এসেছে। কিন্তু বর্তমান সরকার এই নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছে।’’
ঘটনাচক্রে আজই দিল্লিতে এআইসিসির সদর দফতরে উত্তরপ্রদেশের মুসলিম নেতা ওবাইদুল্লাহ খান আজমি কংগ্রেসে যোগ দেন। তিনি মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডেরও সদস্য। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর কাছে প্রশ্ন আসে তিন তালাক নিয়ে। এ যাবত কংগ্রেস তিন তালাক নিয়ে কোনও স্পষ্ট মত না জানিয়ে বিষয়টি ‘বিচারাধীন’ বলে এড়িয়ে এসেছে। সরকারের বিরোধিতার পথেও হাঁটেনি। কিন্তু আজ আজমি এর বিরোধিতা করে বলেন, ‘‘সরকার বেইমানি করলে এর বিরুদ্ধে আন্দোলন হবে।’’
পাশে বসে থাকা গুলাম নবি আজাদ বারবার আজমির কানে বলে দেন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন বলে বিষয়টি এড়িয়ে যেতে। কিন্তু আজমি সে সবে কর্ণপাত না করেই এর বিরোধিতা করতে থাকেন। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে গুলাম নবি আজাদ বলেন, ‘‘আসলে বিজেপি একের পর এক বিষয় সামনে এনে নিজেদের সরকারের ব্যর্থতা ঢাকতে চাইছে। আর চাইছে, তাই নিয়েই আমরা লড়াই করি। তিন তালাকের প্রশ্ন তুলে এখন মুসলমানদের মধ্যেই লড়াই করাতে চাইছে। কিন্তু আমরা এই ফাঁদে পা দেব না।’’
কিন্তু সরকার কোনও ভাবেই রণে ভঙ্গ দিতে চাইছে না। জেটলির মতে, আইনে বদল এনে নেহরু হিন্দু পার্সোনাল ল-এ অনেক সংস্কার করেছিলেন। হিন্দুদের লিঙ্গ বৈষম্য ঘোচাতে মনমোহন সিংহ সরকারও পদক্ষেপ করেছিলেন। অটল বিহারী বাজপেয়ীর আমলে খ্রিস্টানদের বিবাহ ও বিচ্ছেদেও লিঙ্গ বৈষম্য ঘোচানো হয়েছিল। মহিলাদের সম্মান ও অধিকার সুনিশ্চিত করতে যে আইন অকেজো, তার বদল প্রয়োজন। পার্সোনাল ল’ মেনে ধর্মীয় আচার, জন্ম, দত্তক, বিবাহ, মৃত্যু সম্পর্কিত ধর্মীয় অনুষ্ঠান হতে পারে। কিন্তু অধিকারের প্রশ্ন যখন আসে, তখন সংবিধান মানতে হবে। জেটলির মতে, তিন তালাকের সঙ্গে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি গুলিয়ে ফেললে হবে না। সরকার সুপ্রিম কোর্টে মত জানিয়েছে। আর ল কমিশন অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে নিছক ‘অ্যাকাডেমিক’ আলোচনা করছে।
আরও পড়ুন
ধর্ষণে শরিয়তি আইনের কথা তোলেন না কেন? প্রশ্ন মুসলিম মহিলাদের
দুর্গাপুজোর পর অবসাদ কাটাবেন কী ভাবে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy