ছবি: এএফপি।
কেউ বলছেন, এক লক্ষের মতো লোক। কারও মতে, একটু কম।
ভিড়ে ঠাসা দিল্লির রামলীলা ময়দান আজ গর্জে উঠল একটি বাক্যে: ‘‘আমার নাম রাহুল সাভারকর নয়, আমার নাম রাহুল গাঁধী।’’
দিল্লিতে আজ রাহুল গাঁধীকে ফেরানোর মঞ্চ সাজানো হবে, জানত বিজেপি। গত কালই সংসদের শেষ দিনে ‘রেপ ইন ইন্ডিয়া’ মন্তব্যের জন্য রাহুলকে বিঁধতে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ নামিয়েছিলেন পুরো দলকে। তাঁকে ক্ষমা চাইতে বলে সরকার পক্ষই ভেস্তে দিয়েছে সংসদ। কাল থেকেই তেতে ছিলেন রাহুল। আজ ফিরলেন পুরনো ঝাঁঝে।
মঞ্চে মাইক হাতে বললেন, ‘‘আমার নাম রাহুল সাভারকর নয়, আমার নাম রাহুল গাঁধী। আমি সত্যের জন্য ক্ষমা চাইব না। মরে যাব, কিন্তু ক্ষমা চাইব না।’’ এর পরেই মোদী-শাহ জুটিকে নিশানা করে বলেন, ‘‘ক্ষমা চাইতে হবে নরেন্দ্র মোদীকে। তাঁর ‘অ্যাসিস্ট্যান্ট’ অমিত শাহকেও ক্ষমা চাইতে হবে।’’
আরও পড়ুন: মোদীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ‘রাহুলজি’ই নেতা, বোঝালেন সনিয়া
ময়দান তখন ফেটে পড়ছে চিৎকারে। এই রাহুল সভাপতি হওয়ার অনেক আগেই বিজেপি-আরএসএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পথ দেখিয়েছেন কর্মীদের। সঙ্ঘের করা মামলায় এখনও আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন। এক কংগ্রেস কর্মী বললেন, ‘‘গডসের সঙ্গে সাভারকরের যোগের কথা সবাই জানে। ব্রিটিশদের কাছে সাভারকর যে বেশ কয়েক বার ক্ষমা চেয়েছিলেন, সেটিও সকলের জানা। বিজেপি-আরএসএস সেই সাভারকরের ভক্ত!’’
ব্রিটিশ শাসকদের কাছে বারবার ক্ষমা চেয়ে এবং মুক্তি প্রার্থনা করে সাভারকরের লেখা একাধিক চিঠির কথা বিজেপিও জানে। কিন্তু সাভারকর তো আবার সঙ্ঘের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। স্বাভাবিক ভাবেই তারা ফোঁস করেছে। দলের মহিলা মোর্চার জাতীয় সভানেত্রী বিজয়া রাহাতকর বললেন, ‘‘রাহুল গাঁধী কখনওই ‘রাহুল সাভারকর’ হতে পারবেন না। সাভারকর ২৭ বছর জেলে ছিলেন, রাহুল সম্ভবত ২৭ বছর বিদেশ উপভোগ করেছেন। সাভারকর ‘ভারতমাতা’র জন্য বেঁচেছেন, রাহুল ‘ভারতমাতা’কে খাটো করে জীবন নষ্ট করেছেন।’’ মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডনবীশও রাহুলকে নিশানা করলেন।
বিজেপির প্রতিক্রিয়া স্বাভাবিক। সন্ধ্যে গড়াতে রাজনীতি মোড় নিল খোদ শিবসেনা নাম না করে রাহুলকে আক্রমণ করায়। মহারাষ্ট্রে শিবসেনা কংগ্রেসের নতুন শরিক। আজ রাহুলের মন্তব্যের পরে শিবসেনার সঞ্জয় রাউত মরাঠি এবং হিন্দিতে টুইট করলেন, ‘‘বীর সাভারকর শুধু মহারাষ্ট্রের নয়, গোটা দেশের ভগবানের মতো। নেহরু-গাঁধীর মতো তিনিও দেশের প্রতি সমর্পিত ছিলেন। আমরাও নেহরু-গাঁধীকে মানি। আপনিও বীর সাভারকরের অপমান করবেন না।’’
রাহুলের নাম না করলেও রাউতের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘সমঝদারদের জন্য ইশারাই যথেষ্ট।’’ বিজেপি সঙ্গ ছেড়ে কংগ্রেস-এনসিপির হাত ধরার পর থেকেই সেনায় ঠোকাঠুকি লাগছে। এর ফাঁকেই শিবসেনার প্রবীণ নেতা মনোহর জোশী বলেছেন, বিজেপির সঙ্গেই ফের সরকার গড়া উচিত। বিজেপি নেতা আশিস শেলারেরও ইঙ্গিত, সেনার ‘কথা রেখে’ই তাদের সঙ্গে আগের মতো সম্পর্ক হতেই পারে। প্রশ্ন, তা হলে কি বিজেপি উদ্ধব ঠাকরেকে আড়াই বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়তে রাজি? তাই কি সুর চড়াল সেনা?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy