Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বিজ্ঞানচর্চায় পিছিয়ে মহিলারা: কোবিন্দ

উচ্চস্তরের বিজ্ঞানে মহিলাদের অংশগ্রহণ খুবই কম। শনিবার লখনউয়ের ‘ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্স ফেস্টিভ্যাল’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে এ নিয়ে খেদ প্রকাশ করলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।

সুপ্রিয় তরফদার
শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:০২
Share: Save:

উচ্চস্তরের বিজ্ঞানে মহিলাদের অংশগ্রহণ খুবই কম। শনিবার লখনউয়ের ‘ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্স ফেস্টিভ্যাল’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে এ নিয়ে খেদ প্রকাশ করলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। তাঁর মতে, ‘‘এটা একটা সামাজিক সমস্যা।’’ কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী হর্ষ বর্ধন বিজ্ঞানে আগ্রহ বাড়াতে ‘বিজ্ঞান আন্দোলন’-এর ডাক দিয়েছিলেন। সেই মন্ত্রী মঞ্চে থাকাকালীনই রাষ্ট্রপতির এই মন্তব্যে শোরগোল পড়ে যায় দর্শকাসনে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘‘মহিলা বিজ্ঞানীর সংখ্যা কুড়ি শতাংশও ছাড়ায়নি।’’ ‘কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ’-এ কর্মরত ৩৪৪৬ জন বিজ্ঞানীর মধ্যে মাত্র ৬৩২ জন, অর্থাৎ ১৮.৩ শতাংশ মহিলা। কোবিন্দ বলেন, ‘‘বিজ্ঞান-বিষয়ে আমাদের কন্যাদের মধ্যে যে সম্ভাবনা আছে, তা আমরা কাজে লাগাচ্ছি না। এটা সামাজিক ও চলতি ব্যবস্থার সমস্যা, যা কাটিয়ে ওঠা আমাদের দায়িত্ব।’’

তবে আশার কথাও শুনিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। তাঁর দাবি, সম্প্রতি কয়েক বছরে বিদেশে থাকার পরে ভারতীয় বিজ্ঞানীরা দেশে ফিরে আসছেন। এটা খুবই ইতিবাচক। এবং এই ধরনের বিজ্ঞান মেলায় মহিলা বিজ্ঞানীরা অংশ নিলে সমস্যা কমে আসবে। এই আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান উৎসবকে কুম্ভ মেলার সঙ্গে তুলনা করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘‘ভারতের সংস্কৃতির থেকে বিজ্ঞান আলাদা নয়। শূন্য আবিষ্কার থেকে শুরু করে অনেক গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার ভারতীয় বিজ্ঞানীরা করেছেন।’’

কেন্দ্রীয় সরকার দাবি করে, মহিলাদের উন্নয়নে তারা নানা পদক্ষেপ করছে। সেখানে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রপতির এই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে বিজ্ঞানীদের অনেকে। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সূত্র এ-ও দাবি করছে, শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এই বিজ্ঞান মেলায় মহিলা বিজ্ঞানীদের আগ্রহ বাড়াতে নানা পদক্ষেপ করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রীদের মতে, মহিলা বিজ্ঞানীর সংখ্যা বাড়াতে হলে স্কুলস্তর থেকেই ছাত্রীদের মধ্যে বিজ্ঞান চেতনা বাড়ানো উচিত। তাদের দাবি, স্কুলস্তরে বিজ্ঞান চেতনায় খামতির জন্যই উচ্চস্তরে গিয়ে বিজ্ঞানে মহিলাদের অংশগ্রহণ কমছে।

বিজ্ঞানের উৎসবে ভারতীয় বিজ্ঞানীদের সম্পর্কে সচেতনতার অভাবও চোখে প়়ড়েছে। অনুষ্ঠানস্থলে মেঘনাদ সাহা, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, জগদীশচন্দ্র বসু-সহ দেশের প্রবাদপ্রতিম বিজ্ঞানীদের ছবি টাঙানো ছিল। কিন্তু দেখা গেল, অনেক ছাত্রছাত্রী স্টিফেন হকিংকে চিনলেও দেশের বিজ্ঞানীদের সম্পর্কে কিছুই জানেন না! এবং বিজ্ঞানের উৎসবে ফের উঠেছে বিতর্ক। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হর্ষ বর্ধন এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বক্তৃতায় বিজ্ঞানের থেকে মোদীর জয়গানই শোনা গিয়েছে বেশি। সকলকে স্বাগত জানানো হয়েছে তুলসি গাছ দিয়ে। যোগীর অবশ্য যুক্তি, ‘‘তুলসি গাছ শান্তি, পরম্পরা ও রোগ প্রতিরোধী ভেষজ গাছের প্রতীক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ram Nath Kovind health Education
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE