বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। তাঁদের জন্য ত্রাণ এবং মানবিক সহায়তা পাঠাচ্ছে ভারত। কিন্তু ভারতীয় ভূখণ্ডে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে নয়াদিল্লি নারাজ। ছবি: রয়টার্স।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেবে না ভারত। সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা জমা দিয়ে জানাল কেন্দ্রীয় সরকার। ‘‘জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে রোহিঙ্গারা অত্যন্ত বিপজ্জনক’’, সোমবার সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করা হলফনামায় এমনটাই জানিয়েছে কেন্দ্র। জম্মু, দিল্লি, মেবাত এবং হায়দরাবাদ-সহ বেশ কিছু অঞ্চলে রোহিঙ্গারা সন্ত্রাসবাদী এবং ভারত-বিরোধী কার্যকলাপে যুক্ত বলেও দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে সরকার জানিয়েছে। মায়ানমার ছেড়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ভারতের আশ্রয় দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলার প্রেক্ষিতেই কেন্দ্রের মত জানতে চেয়েছিল আদালত। হলফনামা জমা দিয়ে আজ কেন্দ্র সেই মতামতই জানাল।
কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টকে বলেছে, রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত একটি ‘প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত’, এই সিদ্ধান্তে সুপ্রিম কোর্টের নাক গলানো উচিত নয়। পাকিস্তান ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবা, পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এবং আইএস-এর সঙ্গেও রোহিঙ্গাদের যোগ রয়েছে বলে গোয়েন্দা রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করা হলফনামায় এমনই জানিয়েছে কেন্দ্র। সেই গোপন রিপোর্ট যদি সর্বোচ্চ আদালত দেখতে চায়, তা হলে কেন্দ্র সেই রিপোর্ট জমা দিতেও প্রস্তুত বলে হলফনামায় জানানো হয়েছে।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আদালতের হস্তক্ষেপ যে সরকার চাইছে না, তা মন্ত্রকের তরফে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে। ছবি: পিটিআই।
রোহিঙ্গাদের ভারত থেকে ফেরত পাঠানোর যে সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে, তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া আবেদনের পক্ষে সওয়াল করছেন ফলি এস নরিম্যান এবং কপিল সিব্বলের মতো আইনজীবীরা। মানবিকতার প্রশ্নে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো উচিত নয় বলে, বলছেন মামলাকারীরা। কিন্তু কেন্দ্রের তরফে সওয়াল, এ দেশে স্থায়ী ভাবে বসবাস করার অধিকার শুধু দেশের নাগরিকদের রয়েছে, অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের সে অধিকার নেই। রাষ্ট্রপুঞ্জে উদ্বাস্তু নীতি মানার বাধ্যবাধকতাও ভারতের নেই, কারণ ভারত রাষ্ট্রপুঞ্জের রিফিউজি কনভেনশনের স্বাক্ষরকারী নয়। আদালতকে জানিয়েছে কেন্দ্র। অন্য দেশ থেকে অবৈধ ভাবে দেশে ঢুকে পড়া হাজার হাজার অনুপ্রবেশকারীকে দেশে থাকতে দিলে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার খর্ব হবে বলেও কেন্দ্র জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: কথা তো চাই, কিন্তু সীমান্ত সন্ত্রাসটা বন্ধ হোক: রাজনাথ
এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ৩ অক্টোবর। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র জানিয়েছেন, এই মামলার আইনি দিকটা আগে খতিয়ে দেখা হবে। এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার অধিকার আদালতের আদৌ রয়েছে কি না, অধিকার থাকলেও তা কতটা, এ সব খতিয়ে দেখেই আদালত পদক্ষেপ করবে বলে প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: গণহত্যা মামলায় মায়ার হয়ে সাক্ষ্য দিয়ে এলেন অমিত
রোহিঙ্গা সমস্যার জেরে মণিপুর ও মিজোরাম সীমান্তে নজরদারি কড়া করেছে আসাম রাইফেলস। সেই সঙ্গে বিশেষ করে মণিপুর পুলিশকে রাজ্যের ভিতরে থাকা মায়ানমারের মুসলিমদের চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। মোরে সীমান্ত দিয়ে ওপারের লোক এপারে ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত ব্যবসা করতে আসতে পারেন। সেখানেও কড়াকড়ি করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy