Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Telengana Gangrape

তেলঙ্গানায় চিকিত্সককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় সাসপেন্ড তিন পুলিশকর্মী

শনিবারই তরুণী চিকিত্সকের বাবা অভিযোগ করেছিলেন, মেয়েকে খুঁজে পেতে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পুলিশ এফআইআর নিতে অস্বীকার করে।

শাদনগর থানার বাইরে বিক্ষোভ। ছবি সৌজন্য টুইটার।

শাদনগর থানার বাইরে বিক্ষোভ। ছবি সৌজন্য টুইটার।

সংবাদ সংস্থা
হায়দরাবাদ শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৯ ১২:৪৬
Share: Save:

তেলঙ্গানায় তরুণী চিকিত্সকের গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় দেশজুড়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। উত্তাল তেলঙ্গানা। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্রমশ জনরোষ বাড়ছে। দেশজোড়া এই বিক্ষোভ-প্রতিবাদের মুখে পড়ে শেষমেশ তিন কর্মীকে সাসপেন্ড করল তেলঙ্গানা রাজ্য পুলিশ। ওই তিন জন হলেন সাব-ইনস্পেকটর এম রবি কুমার, হেড কনস্টেবল পি বেণুগোপাল রেড্ডি এবং এ সত্যনারায়ণ গৌড়। সাইবারাবাদ পুলিশ কমিশনার ভিসি সজ্জনার এ প্রসঙ্গে বলেন, “তদন্তে ওই পুলিশকর্মীদের গাফিলতি ধরা পড়েছে। তার পরই তাঁদের সাসপেন্ড করা হয়েছে।”

শনিবারই তরুণী চিকিত্সকের বাবা অভিযোগ করেছিলেন, মেয়েকে খুঁজে পেতে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পুলিশ এফআইআর নিতে অস্বীকার করে। এ থানা থেকে ও থানা ঘুরতে হয় সাহায্যের আশায়। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর রিপোর্ট লেখে পুলিশ। সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই প্রবল সমালোচনা মুখে পড়তে হয় পুলিশকে।

অন্য দিকে, দোষীদের শাস্তির দাবিতে শনিবার জনরোষে উত্তাল হয়ে ওঠে তেলঙ্গানা। শয়ে শয়ে মানুষ পথে নেমে প্রতিবাদ করেন। প্রতিবাদে অংশ নেয় হায়দরাবাদের সরকারি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। চিলকুরের বালাজি মন্দির কর্তৃপক্ষ তরুণী চিকিত্সকের ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে ২০ মিনিটের জন্য মন্দিরের প্রবেশপথ বন্ধ করে রাখেন। মেয়েদের নিরাপত্তার জন্য মন্দিরের বাইরেই পুজোপাঠ করেন পুরোহিত ও ভক্তরা। রাজ্যপাল তামিলিসাই সৌন্দররাজন সাংবিধানিক ও আইনি ভাবে সব রকম সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন তরুণীর পরিবারকে।

আরও পড়ুন: ডায়েরি নেয়নি থানা, অভিযোগ বাবার || ধর্ষক-খুনিদের জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হোক, চাইছেন মা

আরও পড়ুন: ধর্ষণের ঘটনাতেও ধর্ষকের ধর্মীয় পরিচয় টেনে এনে এ বার ধর্মবিচার!

শনিবার দিনই তরুণীর বাড়িতে যায় জাতীয় মহিলা কমিশনের একটি দল। কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা বলেন, দোষীদের ফাঁসির সাজা হওয়া উচিত। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রেখা। তিনি বলেন, “তরুণীর পরিবার পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ তুলেছে। তাঁদের কোনও কথাই শুনতে চায়নি পুলিশ। উল্টে বলেছে, তরুণী কারও সঙ্গে পালিয়েছে।” পাশাপাশি রেখার আরও মন্তব্য, ঘটনাটি কোন থানার অধীনে তা নিয়েও টানাপড়েন চলেছে। ফলে বিষয়টি আরও দেরি হয়েছে। তরুণীকে বাঁচাতে পারত পুলিশ।

শনিবারই অভিযুক্তদের ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন শাদনগর নগর আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে যে থানায় রাখা হয়েছিল, শাদনগরের সেই থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায় উত্তেজিত জনতা। পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর, জুতো ছুড়ে মারে। পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়। শাদনগর থানা থেকে পরে হায়দরাবাদের জেলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় অভিযুক্তদের।

গত ২৮ নভেম্বর সকালে শামশাবাদে একটি কালভার্টের নীচ থেকে তরুণী চিকিত্সকের আধপোড়া দেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগ, তাঁকে চার জন মিলে গণধর্ষণ করে আগুনে পুড়িয়ে মারে। সেই ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল গোটা দেশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE