Advertisement
E-Paper

১০ লক্ষ বনবাসী পরিবার কি উদ্বাস্তু হবে

জঙ্গলের ধারে বসবাসকারী আদিবাসী ও বনবাসীদের জঙ্গলের উপর অধিকার নিশ্চিত করতে মনমোহন সরকারের অরণ্যের অধিকার আইন এনেছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪২
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের জেরে ১০ লক্ষের বেশি আদিবাসী ও অন্যান্য বনবাসী পরিবারের উচ্ছেদ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের জেরে ১০ লক্ষের বেশি আদিবাসী ও অন্যান্য বনবাসী পরিবারের উচ্ছেদ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের জেরে ১০ লক্ষের বেশি আদিবাসী ও অন্যান্য বনবাসী পরিবারের উচ্ছেদ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গেই প্রায় ৮৬ হাজার পরিবার রয়েছে।

জঙ্গলের ধারে বসবাসকারী আদিবাসী ও বনবাসীদের জঙ্গলের উপর অধিকার নিশ্চিত করতে মনমোহন সরকারের অরণ্যের অধিকার আইন এনেছিল। কিন্তু বন্যপ্রাণপ্রেমীদের কিছু সংগঠন সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে এই আইনের বৈধতা নিয়ে অভিযোগ তোলে। সেই সঙ্গে তাদের দাবি ছিল, জঙ্গলের জমিতে চাষবাস করার জন্য যাদের পাট্টার আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে, তাদের উৎখাত করা হোক। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার আপত্তি না তোলায় সুপ্রিম কোর্ট কার্যত সেই দাবিই মেনে নিয়েছে।

এ বিষয়ে জনজাতি অধিকার আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী মেধা পাটকরের বক্তব্য, ২০০৬ সালে যখন আইনটি হয়, তখন বলা হয়েছিল, আইন প্রণয়নের দিন অবধি বনবাসীদের যে যেখানে বাস করছেন, তিনি সেই জমির মালিক হিসেবে গণ্য হবেন। কিন্তু মোদী সরকার এসে মালিকানা সংক্রান্ত নথিপত্র পাওয়ার প্রক্রিয়াটা নানা অছিলায় জটিল করে দিয়েছে। ফলে দরিদ্র, অনেক ক্ষেত্রেই অক্ষরজ্ঞানহীন বনবাসীদের পক্ষে বারবার প্রশাসনের কাছে গিয়ে উপযুক্ত নথি জোগাড় করা সম্ভব হয়নি। এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার জন্য বনবাসীদের নানা সংগঠনের নেতারা মোদী সরকারকেই দায়ী করছেন।

আরও পড়ুন: সুর নরম করে পাকিস্তানকে ফের আলোচনারই বার্তা মোদীর

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরুণ মিশ্রর বেঞ্চ গত ১৩ ফেব্রুয়ারির শুনানিতে পশ্চিমবঙ্গ-সহ ১৬টি রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে, ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে পাট্টার আবেদন খারিজ হওয়া পরিবারগুলিকে উৎখাত করতে হবে। কেন্দ্রের আইনজীবীরা আদালতে মুখই খোলেননি বলে অভিযোগ। আজ কোর্টের লিখিত নির্দেশটি হাতে আসার পরে দেখা যাচ্ছে, তা মানতে হলে ১৬টি রাজ্যে ১১ লক্ষ ২৭ হাজার ৪৪৬ আদিবাসী ও বনবাসী পরিবারকে উৎখাত করতে হবে। আইনজীবীদের যুক্তি, সব রাজ্য হলফনামা দেয়নি। ফলে সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে।

আরও পড়ুন: প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ অস্বীকার রাজীবের, ‘মিথ্যা’ বলল সিবিআই

কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী আগেই বলেছিলেন, ‘‘কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টে বোবা দর্শক হয়ে রয়েছে। লক্ষ লক্ষ আদিবাসী ও গরিব চাষিদের উৎখাত করার সঙ্কেত দিচ্ছে।’’ রাহুল জানিয়েছিলেন, কংগ্রেস এর বিরুদ্ধে লড়বে। ১৬টি রাজ্যের মধ্যে কংগ্রেসশাসিত মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়ও রয়েছে। রয়েছে কর্নাটকও। এই রাজ্যগুলি এখন কী অবস্থান নেবে, তা দেখার। বিভিন্ন বাম ও আদিবাসী সংগঠন কেন্দ্রীয় আদিবাসী কল্যাণ মন্ত্রী জুয়েল ওরামের কাছে স্মারকলিপি পাঠিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, কেন্দ্র কি অরণ্যের অধিকার আইন বিসর্জন দিতে চায়?

পশ্চিমবঙ্গ তার হলফনামায় বলেছে, জঙ্গলের জমিতে অধিকার চেয়ে ৯৫,৯৫৮টি আদিবাসী পরিবারের আবেদন আসে। অন্যান্য চিরাচরিত বনবাসী পরিবারের ৩৬,০০৪টি আবেদন আসে। তার মধ্যে আদিবাসীদের ৫০,২৮৮টি আবেদন এবং বনবাসীদের ৩৫,৮৫৬টি আবেদন খারিজ হয়েছে। কোর্টের নির্দেশ, রাজ্যের মুখ্যসচিবকে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে, কেন পাট্টার দাবি খারিজের পরেও উচ্ছেদ হয়নি। পরবর্তী শুনানির আগে উচ্ছেদ না হলে আদালত বিষয়টি অপরাধ হিসেবেই দেখবে।

Refugee Forced Migration Supreme Court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy