Advertisement
E-Paper

বৃষ্টি নামাতে টায়ার, গাছের ডাল, নুন পোড়ানোর নির্দেশ শোলাপুরের জেলাশাসকের

পুণের শোলাপুরের ঘটনা। গত শুক্রবার শোলাপুরের জেলাশাসক রাজেন্দ্র ভোঁসলে কৃত্রিম ভাবে বৃষ্টি নামানোর জন্য তাঁর অধীনে থাকা ১১টি তহশিলের তহশিলদারদের মৌখিক ভাবে নির্দেশ দেন, তহশিলগুলির ১ হাজার ২৬টি জায়গায় টায়ার, গাছের কচি ডাল আর নুন পোড়ানো হোক।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৭:১১
টায়ার পোড়ানোর হচ্ছে শোলাপুরে। ছবি- সংগৃহীত।

টায়ার পোড়ানোর হচ্ছে শোলাপুরে। ছবি- সংগৃহীত।

কৃত্রিম ভাবে আকাশ ঝেঁপে বৃষ্টি নামাতে গাড়ির টায়ার, যে গাছ থেকে দুধের মতো রস বেরয়, তার কচি ডাল আর নুন পোড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন পুণের এক জেলাশাসক। তাতে হইহই পড়ে যায়। উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন বিজ্ঞানী ও পরিবেশবিদরা। শেষ পর্যন্ত তাঁদের চাপেই শনিবার নির্দেশ প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন ওই জেলাশাসক।

পুণের শোলাপুরের ঘটনা। গত শুক্রবার শোলাপুরের জেলাশাসক রাজেন্দ্র ভোঁসলে কৃত্রিম ভাবে বৃষ্টি নামানোর জন্য তাঁর অধীনে থাকা ১১টি তহশিলের তহশিলদারদের মৌখিক ভাবে নির্দেশ দেন, তহশিলগুলির ১ হাজার ২৬টি জায়গায় টায়ার, গাছের কচি ডাল আর নুন পোড়ানো হোক। তাতে এক থেকে চার দিনের মধ্যেই এলাকাগুলিতে বৃষ্টি নামবে ঝমঝমিয়ে। ফিবছর এই সময়ে গড়ে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয় ওই সব এলাকায়, এ বার ৩৫ শতাংশও হয়নি। ফলে, জেলাশাসকের নির্দেশের কথা মুখে মুখে রটে যেতেই কয়েকটি জায়গায় গ্রামবাসীরা টায়ার, গাছের ডাল ও নুন পোড়াতে শুরু করে দেন।

বিজ্ঞান বলছে, গাড়ির টায়ার পোড়ালে সায়ানাইড, কার্বন মনোক্সাইড ও সালফার ডাই-অক্সাইডের মতো অত্যন্ত বিষাক্ত কয়েকটি গ্যাস বেরিয়ে আসে। তাতে ভীষণ ভাবে বিষিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে বায়ুমণ্ডলের। সে জন্যই চার বছর আগে প্রকাশ্যে গাড়ির টায়ার পোড়ানো নিষিদ্ধ করেছে জাতীয় গ্রিন ট্রাইব্যুনাল।

ওই ঘটনার পরেই বিজ্ঞানী ও পরিবেশবিদদের ফোন আসতে থাকে জেলাশাসক ভোঁসলের কাছে। তাঁরা বলেন, ‘‘এই সব এখনই বন্ধ করুন। এটা পরিবেশ আইনের বিরোধী।’’ তার পরেই তাঁর নির্দেশ প্রত্যাহার করেন শোলাপুরের জেলাশাসক।

তবে ভোঁসলে পরে জানান, তিনি এই পরামর্শ পেয়েছিলেন মুম্বই আইআইটি-র এক প্রাক্তনী রাজা মরাঠের কাছে থেকে। ভোঁসলের কথায়, ‘‘আমাকে বলা হয়েছিল, রবার, গাছের ডাল আর নুন পোড়ালো কৃত্রিম ভাবে বৃষ্টি নামানো যায়। আইআইটি-র এক বিজ্ঞানী (রাজা মরাঠে)-র পরামর্শেই আমি এটা করেছিলাম। উনি বলেছিলেন, এই পদ্ধতি বহু বার পরীক্ষা করে দেখেছেন। সফল হয়েছেন। তবে পরিবেশবিদরা বারণ করার পর আমি এটা বন্ধ করতে বলেছি।’’

আরও পড়ুন- অমিতাভকে ভোটে দাঁড় করিও না, রাজীবকে বলেছিলেন ইন্দিরা​

আরও পড়ুন- অন্ধ্রে টিডিপি বিধায়ক-সহ দু’জনকে গুলি করে মারল মাওবাদীরা​

তবে মুম্বই আইআইটি-র ওই প্রাক্তনী ৭৩ বছর বয়সী মরাঠে কিন্তু তাঁর যুক্তিতে অটল। তিনি বলেছেন, ‘‘এর নাম- ‘বরুণযন্ত্র’। গত ৯ বছর ধরে আমি সফল ভাবে এর পরীক্ষা করেছি। বেশি তাপমাত্রায় নুন বাষ্পীভূত হলেই বৃষ্টি নেমে আসে। দু’টি বড় টায়ার আর ৫০ কিলোগ্রাম ওজনের নুন নিলেই ৪/৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ৩ থেকে ৪ মিলিমিটার পরিমাণের বৃষ্টি নামানো সম্ভব। যাতে জলের ৫০০টি ট্যাঙ্কার ভরানো যাবে। ট্যাঙ্কারগুলি কিনতে খরচ পড়বে বড়জোর ৫ লক্ষ টাকা। আর বৃষ্টি নামানোর জন্য টায়ার ও নুন কেনার খরচ মেরেকেটে ৫০০ টাকা।’’

তবে মরাঠের এই বক্তব্য মানতে নারাজ পুণের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল মেটিওরোলজি (আইআইটিএম)- প্রাক্তন বিজ্ঞানী জে ভি কুলকার্নি। তাঁর কথায়, ‘‘এটা অত্যন্ত অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। নুন মানে সোডিয়াম ক্লোরাইড। নুনকে বাষ্পীভূত করলে সোডিয়াম বেরিয়ে আসে। কিন্তু সেই সোডিয়াম মেঘের তলদেশে গিয়ে পৌঁছবে বলে মনে করা হয়েছে। কিন্তু সেই সোডিয়াম বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়লে তো সমূহ বিপদ। বায়ু আরও দূষিত হবে।’’

Rajendra Bhosale Solapur Pune পুণে
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy