Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Presents
Tax

Tax savings: কর বাঁচাচ্ছেন কিন্তু মাথায় আছে তো নগদ জোগানের প্রয়োজনীয়তার কথা?

প্রতি মাসেই নগদে টান। কারণ একটাই। আয়ের তুলনায় সঞ্চয় এতটাই বেশি যে নগদে টান পড়ে প্রতি মাসেই!

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুপর্ণ পাঠক
শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২২ ১৩:২৭
Share: Save:

স্বামী-স্ত্রী দুজনেই স্কুলে পড়ান। স্ত্রী সরকারি স্কুলে এবং স্বামী বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে। দু’জনের মিলিত আয় কম নয়। গাড়ি আছে। ফ্ল্যাট। এক সন্তান পড়ে দামি স্কুলেই। এমন নয় যে তাঁরা অমিতব্যয়ী। উল্টে বলা চলে সংযত খরুচে। কিপটে নন। কিন্তু অপ্রয়োজনীয় খরচ এড়িয়ে চলেন। বেড়াতে যেতে ভালবাসেন। খেতেও। কিন্তু কখনই তা হঠকারিতা হয়ে ওঠে না। আয়ের হিসাবে।

কিন্তু প্রতি মাসেই নগদে টান। কারণ একটাই। আয়ের তুলনায় সঞ্চয় এতটাই বেশি যে নগদে টান পড়ে প্রতি মাসেই! ভাবছেন এ আবার কী কথা? কিন্তু এটাই হয়। খোঁজ নিয়ে দেখুন। দেখবেন আপনি চেনেন এমন মানুষও আছেন যাঁরা ধার করেও কর বাঁচানোর সঞ্চয় প্রকল্পে টাকা রাখতে দু’বার ভাবেন না। ঋণ করে সঞ্চয়! লাভ আর ক্ষতির হিসাবটা ভাবছি কি? ঋণের সুদ কিন্তু সব সময়েই সঞ্চয়ের সুদের থেকে বেশি। আর আয় এবং ব্যয়ের যুদ্ধ শুরু হয় এখান থেকেই।

সমস্যা হচ্ছে, পরিকল্পিত সঞ্চয়ের জায়গাটা এখনও আমাদের ধাতে নেই। অনেকেই আছেন, যাঁরা কর বাঁচাতে জীবন যাপনের নিত্য প্রয়োজনের কথা না ভেবেই টাকা ঢালেন সঞ্চয় প্রকল্পে। যার বেশির ভাগই দীর্ঘমেয়াদী। তাই টাকা আছে, কিন্তু প্রয়োজনের জন্য হাত পাততে হয় অন্যের কাছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শিক্ষক দম্পতিরও সেই একই চ্যালেঞ্জ। ভবিষ্যতের আয় আর কর বাঁচানোর ভাবনায় ভবিষ্যতের বব্যস্থা ৫০ ছোঁয়ার আগেই করে ফেলেছেন। কিন্তু বর্তমানের নগদ জোগানের সমস্যায় রক্তচাপ উঁচুতেই থাকে দু’জনের।

সমস্যা হচ্ছে সঞ্চয় নিয়ে সব আলোচনাই এমন ভাবে হয় যে মাথা ঠিক রাখা মুশকিল। সারা ক্ষণ মনে হয় কর বাঁচিয়ে ভবিষ্যতের আয়ের ব্যবস্থা করে রাখা যাক। যাতে আগামীতে ভাল থেকে এখন না হয় কষ্টটা করেনি। কিন্তু এটাও তো ভাবতে হবে যে কম বয়সে যা যা করতে পারবেন মনের আনন্দের জন্য তা বয়স বাড়লে তো নাও করার সুযোগ পেতে পারেন।

তাই কর বাঁচানোকেই সঞ্চয়ের শেষ লক্ষ্য করবেন না। জীবন যাপনকে লক্ষ্য রেখে সঞ্চয়ের পথে পা রাখুন। এই অঙ্কটা যে খুব সোজা তা বলছি না। কিন্তু আয় ও ব্যয়ের সমতার অঙ্কে অন্যতম অনুমান যে আপনার জীবন যাপনের লক্ষ্য এবং চাহিদা তা ভুললে চলবে না। নিজেকে বঞ্চিত না করে সঞ্চয়ের রাস্তায় হাঁটতে পারাটাই তো চ্যালেঞ্জ।

তাই একটু হিসাব করে নিন। ভাবুন হঠাৎ প্রয়োজন হলে টাকার জোগানের ব্যবস্থা কোথা থেকে করবেন। আরও একটা কথা। অনেকেই কর বাঁচানোর প্রকল্পের বাইরে পা রাখতে চান না। কারণ অন্য প্রকল্পের আয়ের উপর কর বসবে এই ভয়ে। কিন্তু কর দিয়েও হাতে যা আসবে তা তো বিপদের দিনে করা ঋণের সুদের চাপের থেকে কম।

ভাবুন। এটা জরুরি। নিজে এই হিসাবটা না করতে পারলে উপদেষ্টার কাছে যান। তাতে আখেরে লাভ বই ক্ষতি হবে না। শেষ করার আগে আরও একটা কথা। প্রবীণ নাগরিক, যাঁরা স্বাস্থ্য বিমার আওতার বাইরে তাঁরা কিন্তু প্রতি বছর ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার খরচে কর ছাড় পাবেন। এটা কিন্তু অনেকেরই মাথায় থাকে না। আরও একটা কথা। ৮০ডি ধারায় ৫০ হাজার টাকা ছাড়। আপনার স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়াম তার থেকে কম হলে আপনি কিন্তু নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা খাতে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড় পেতে পারেন। অনেকেই এই ছাড়ের সুযোগটা নেন না। তাই মাথায় রাখুন এটাও। আর আড়াই লক্ষ টাকার বেশি প্রভিডেন্ট ফান্ডে সঞ্চয় করলে তার উপর পাওয়া সুদের উপর কর দিতে হবে। তাই ভাবুন মিউচুয়াল ফান্ডের কথা। মার্চ আসছে বলেই কর বাঁচাতে সঞ্চয় নয়। জীবন যাপনের প্রয়োজনেই সঞ্চয়— এটাই হোক মন্ত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tax Savings Tips Income Monthly Budget
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE