প্রতীকী চিত্র
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সোমবার প্রকাশিত সাম্প্রতিক তম ‘চিফ ইকোনমিস্ট আউটলুক’ এর একটি প্রতিবেদন অনুসারে বিশ্বের তাবড় তাবড় অর্থনীতিবিদদের মধ্যে ৫৬ শতাংশ অর্থনীতিবিদ মনে করেন ২০২৪ সালে বিশ্ব অর্থনীতি আরও দুর্বল হয়ে পড়বে। এবং তা বিশ্বের অর্থনৈতিক বিভাজনকে আরও প্রকট করে তুলবে।
প্রতিবেদনটি অনুযায়ী বিশ্ব অর্থনীতিতে এক অনিশ্চিত অবস্থার সৃষ্টি হবে। এই সময় বিশ্ব অর্থনীতিকে কঠোর আর্থিক অবস্থা, ভূ-রাজনৈতিক ফাটল এবং জেনারেটিভ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্রুত বিকাশের মত নানা চ্যালঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে।
৪৩ শতাংশ অর্থনীতিবিদ অবশ্য মনে করেন বিশ্ব অর্থনীতি অপরিবর্তিত থাকবে অথবা অবস্থার উন্নতি হতে পারে। তাঁদের মতে শ্রমবাজারে প্রায় ৭৭ শতাংশ এবং আর্থিক অবস্থার ক্ষেত্রে প্রায় ৭০ শতাংশ আগামী বছরে শিথিল হতে পারে৷ যদিও সমস্ত অঞ্চলে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির প্রত্যাশা হ্রাস পেয়েছে, তবে অর্থনৈতিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আঞ্চলিক বৈচিত্র্য থাকলেও ২০২৪ সালে কোনো অঞ্চলই খুব বেশি বৃদ্ধি অনুভব করবে না বলেই ধারণা।
সাদিয়া জাহিদী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের কথায়, “দ্রুতগতির বিচ্যুতির মধ্যে, বিশ্ব অর্থনীতির স্থিতিস্থাপকতা সামনের বছরে পরীক্ষা করা অব্যাহত থাকবে। যদিও বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতি কমছে, প্রবৃদ্ধি স্থবির হয়ে পড়ছে, আর্থিক অবস্থা আঁটসাঁট রয়েছে, বৈশ্বিক উত্তেজনা গভীর হচ্ছে এবং বৈষম্য বাড়ছে – টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতিবেগ গড়ে তোলার জন্য বৈশ্বিক সহযোগিতার জরুরী প্রয়োজনকে তুলে ধরছে,”
বেশিরভাগেরই মতে দক্ষিণ এশিয়া, পূর্ব এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পূর্ববর্তী বছরগুলির মতোই ২০২৪ সালেও মাঝারি প্রবৃদ্ধি (যথাক্রমে ৯৩এবং ৮৬ শতাংশ) লক্ষ করা যাবে বলে। যদিও এই বিষয়ে চীন দুর্বল ব্যয়, শিল্প উত্পাদনে হ্রাস এবং সম্পত্তির বাজারে উদ্বেগের কারণে মাঝারি (৬৯ শতাংশ) প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে।
ইউরোপে অর্থনৈতিক পূর্বাভাসে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকেই উল্লেখযোগ্যভাবে অবনতি ঘটেছে, ৭৭ শতাংশ উত্তরদাতাই দুর্বল বা খুব দুর্বল বৃদ্ধির আশা করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার ক্ষেত্রেও এই বছর মাঝারি বা শক্তিশালী বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ, যা আগের থেকে যথাক্রমে ৭৮ এবং ৭৯ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়েছে। যদিও এরই মধ্যে লাতিন আমেরিকা, ক্যারিবিয়ান, সাব-সাহারান আফ্রিকা এবং মধ্য এশিয়ায় প্রবৃদ্ধির উন্নতির প্রত্যাশার রয়েছে। এবং মাঝারি প্রবৃদ্ধির আশা করা হয়েছে।
প্রায় ৭০ শতাংশ প্রধান অর্থনীতিবিদরাই বিশ্বাস করেন এই বছর ভূ-অর্থনৈতিক বিভাজন আরও তীব্র হবে। অনেকের মতে ভূ-রাজনৈতিক উপাদানগুলির কারণে বিশ্ব অর্থনীতি এবং স্টক মার্কেটে অস্থিরতা বৃদ্ধি পাবে, স্থানীয়করণকে আরও উন্নত করবে, ভূ-অর্থনৈতিক ব্লকগুলিকে শক্তিশালী করবে এবং আগামী তিন বছরে উত্তর-দক্ষিণ বিভাজনকে আরও প্রসারিত করবে।
সরকারের ক্রমবর্ধমান শিল্প নীতির সরঞ্জামগুলি ব্যবহার করার সাথে সাথে, দেশগুলির মধ্যে ক্রমাগত সমন্বয়ের অভাব বৃদ্ধির একটি প্রত্যাশা রয়েছে। অর্থনীতিবিদদের দুই-তৃতীয়াংশ মনে করেন এই নীতিগুলি নতুন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ শিল্পকে উত্সাহিত করার পূর্বাভাস দিয়েছেন, তবে উচ্চ ও নিম্ন আয়ের অর্থনীতির মধ্যে ক্রমবর্ধমান আর্থিক চাপ এবং বৈষম্য নিয়ে উদ্বেগ এখনও রয়েই গিয়েছে।
জেনারেটিভ এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আয় গোষ্ঠীগুলির উপরে প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে। বেশিরভাগ অর্থনীতিবিদ এআই-এর দক্ষতা এবং উদ্ভাবনের সুবিধা সম্পর্কে এই বছর আশাবাদী। পরবর্তী পাঁচ বছরে, ৯৪ শতাংশ আশা করে যে এই উত্পাদনশীলতার সুবিধাগুলি উচ্চ-আয়ের অর্থনীতিতে অর্থনৈতিকভাবে উল্লেখযোগ্য হয়ে উঠবে, বিপরীতে নিম্ন-আয়ের অর্থনীতিতে মাত্র ৫৩ শতাংশ।
নিম্ন-আয়ের অর্থনীতির ক্ষেত্রে প্রায় তিন-চতুর্থাংশ মানুষ কর্মসংস্থানের ইতিবাচক প্রভাব আশা করে না। উচ্চ-আয়ের অর্থনীতির ক্ষেত্রেও সেই একই ধরনের মতামত রয়েছে। জীবনযাত্রার মান বাড়ানোর জন্য জেনারেটিভ এআই এর সম্ভাব্যতা এবং বিশ্বাসের উপর এর প্রভাব সম্পর্কে মতামতগুলি আরও বিভক্ত, উভয় ফলাফল উচ্চ আয়ের বাজারে সামান্য বেশি সম্ভাব্য।
বিশেষজ্ঞদের কাছে সমাধান খুঁজতে সঞ্চয় নিয়ে আমাদের প্রশ্ন পাঠান — takatalk2023@abpdigital.in এই ঠিকানায় বা হোয়াটস অ্যাপ করুন এই নম্বরে — ৮৫৮৩৮৫৮৫৫২আপনার আয়, খরচ এবং সঞ্চয় জানাতে ভুলবেন না। পরিচয় গোপন রাখতে চাইলে অবশ্যই জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy