Advertisement
০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
Fertility Rate of India

মাতৃত্বে অনীহা, ভারতে রেকর্ড হারে কমছে প্রজননহার, ২০৫০ সালের মধ্যে ভিড় বাড়বে বুড়োদের! প্রকাশ্যে ভয় ধরানো রিপোর্ট

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৭:১৯
Share: Save:
০১ ১৭
Fertility Rate of India

১৯৭০ সালে ভারতীয় মহিলারা গড়ে ৫ সন্তানের জন্ম দিতেন। পাঁচ দশকের মধ্যেই সেই সংখ্যা নেমে এসেছে ১.৯-এ। ‘ছোট পরিবার সুখী পরিবার’ পুরনো সেই স্লোগান বাস্তবায়নের পথে হাঁটছে ভারত। সন্তান জন্ম দেওয়ায় অনীহা বাড়ছে তরুণ প্রজন্মের। বয়স্ক নাগরিকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে ভারতে।

০২ ১৭
Fertility Rate of India

ভারতের রেজিস্ট্রার জেনারেলের স্যাম্পল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম (এসআরএস) রিপোর্টে একটি পরিসংখ্যান প্রকাশিত হয়েছে। ২০২৩ সালের একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে চমকপ্রদ এক তথ্য। জনসংখ্যার ক্রমবর্ধমান অনুপাতে কর্মক্ষম বয়সি গোষ্ঠী ও বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের সংখ্যাধিক্য লক্ষ করা গিয়েছে। তুলনায় ০-১৪ বছর বয়সিদের জনগোষ্ঠীদের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল প্রজননের হার কমেছে ভারতীয় নারীর।

০৩ ১৭
Fertility Rate of India

প্রতিবেদন অনুসারে, ০-১৪ বছর বয়সিদের সংখ্যা ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে। ১৯৭১ সালে মোট জনসংখ্যার ৪১.২ শতাংশ ছিল এই বয়সিরা। ১৯৮১ সালে ২০ বছরের মধ্যে সেটি কমে ৩৮.১ শতাংশে দাঁড়ায়। একই ভাবে ১৯৯১-২০২৩ সালের মধ্যে ৩৬.৩ শতাংশ থেকে কমে ২৪.২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

০৪ ১৭
Fertility Rate of India

সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে প্রজননহার হ্রাসের ক্ষেত্রে ভারতের অবস্থান উল্লেখযোগ্য। পঞ্চাশ বছর আগে যেখানে মহিলাপিছু ৫ সন্তান ছিল, সেটা এখন ২-এরও কমে এসে দাঁড়িয়েছে। এর নেপথ্যের মূল কারণ হল সন্তানধারণের ইচ্ছা কমছে তরুণ প্রজন্মের দম্পতিদের।

০৫ ১৭
Fertility Rate of India

ভারতের রেজিস্ট্রার জেনারেলের এসআরএসআর সমীক্ষাটি ৮০ লক্ষ নাগরিকের তথ্য অনুসারে, দম্পতিরা দুই সন্তান নীতি থেকে বেরিয়ে এসে সন্তানধারণের ক্ষেত্রে এখন অন্য পথে হাঁটছেন। সারা বিশ্বের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভারতেও প্রজননের হার উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে বলে সমীক্ষাটিতে দাবি করা হয়েছে।

০৬ ১৭
Fertility Rate of India

রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘পপুলেশন ফান্ড’-এর (ইউএনএফপিএ) সাম্প্রতিক সমীক্ষাও অবশ্য সেই প্রবণতার দিকেই ইঙ্গিত করছে। যেখানে বলা হয়েছে, বর্তমান বিশ্বে কোটি কোটি মানুষেরও প্রজননহার কমতির দিকে। তাঁরা তাঁদের ইচ্ছে অনুযায়ী সন্তানধারণ করতে পারছেন না।

০৭ ১৭
Fertility Rate of India

তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বিয়ে না করার এবং সন্তানের জন্ম না দেওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে গড় জন্মহারে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে। চিনকে ছাপিয়ে গিয়ে ‘বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ’-এর তকমা পেলেও সামগ্রিক ভাবে ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমতে পারে।

০৮ ১৭
Fertility Rate of India

ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধি একসময় বৈশ্বিক ভাবে অন্যতম উদ্বেগের বিষয় ছিল। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সেই গতি মন্থর হতে শুরু করেছে। ল্যানসেটের একটি রিপোর্ট অনুসারে, ২০৫০ সালের মধ্যে এই বার ১.৩ এবং ২১০০ সালের মধ্যে ১.০৪-এ নেমে আসতে পারে। জনসংখ্যা স্থিতিশীল রাখার জন্য, এক জন নারীকে ২.১টি শিশুর জন্ম দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

০৯ ১৭
Fertility Rate of India

গ্রামীণ ভারতের ক্ষেত্রে এই সূচকটি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞেরা। গ্রামাঞ্চলের এই হার কার্যত তার কিনারায় দাঁড়িয়ে। ভারতীয় মহিলারা গড়ে এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মে জনসংখ্যার সামগ্রিক আকার বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনের তুলনায় কম সন্তানের জন্ম দিচ্ছেন। জনসংখ্যার আচমকা পরিবর্তন ভারতীয় সমাজ, অর্থনীতি এবং স্বাস্থ্যব্যবস্থায় বহুমাত্রিক প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে।

১০ ১৭
Fertility Rate of India

সন্তানধারণের ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থনৈতিক প্রতিকূলতা। অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতার কারণেই সন্তানের দায়িত্ব নিতে ভয় পাচ্ছেন বহু দম্পতিই। চাকরির নিরাপত্তাহীনতা, সাংসারিক খরচের বোঝা বৃদ্ধি, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বোঝাপড়ার অভাবের কারণেও সন্তানের জন্ম দিতে নারাজ বহু পরিবারই।

১১ ১৭
Fertility Rate of India

৩০-এর শেষের দিকে বা ৪০ বছরের পরেও অনেক মহিলা এখন বিয়ে করছেন। উচ্চবিত্ত পরিবারে সন্তানধারণের ইচ্ছা এখন কমছে। কারণ, এখন দৈনন্দিন জীবনে নানা চাপ রয়েছে। সেখানে দম্পতিরা স্বাধীন জীবনযাপন করতে চাইছেন।

১২ ১৭
Fertility Rate of India

ভারতে প্রতি এক হাজার জনসংখ্যায় বছরে জন্ম নেওয়া শিশুর সংখ্যা, ২০২২ সালে ১৯.১ থেকে ০.৭ পয়েন্ট কমে ২০২৩ সালে ১৮.৪-এ দাঁড়িয়েছে। দেশের মোট প্রজননহার (ফার্টিলিটি রেট) দু’বছরের মধ্যে প্রথম বারের মতো ২০২৩ সালে ১.৯-এ নেমে এসেছে। ২০২১ এবং ২০২২ সালে, ভারতের প্রজননহার ২.০-এ স্থির ছিল।

১৩ ১৭
Fertility Rate of India

বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, এখনও প্রজননহার অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় উচ্চ (২.৩–৩.০)। অন্য দিকে দক্ষিণের রাজ্য, যেমন তামিলনাড়ু, কেরল বা রাজধানী দিল্লির মতো অঞ্চলে এই হার অত্যন্ত কম (১.৩–১.৬)। গ্রামাঞ্চলের জন্মহার শহরাঞ্চলের চেয়ে বেশি। ২০২৩-এ রাজ্যগুলির মধ্যে জন্মহারে শীর্ষে ছিল বিহার (২৫.৮), সবার নীচে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ (১০.১)।

১৪ ১৭
Fertility Rate of India

প্রজনন হারে রেকর্ড পতনের পাশাপাশি আরও একটি চিন্তার বিষয় দেখা দিয়েছে। দেশে বয়স্ক মানুষের সংখ্যাও যে বাড়ছে। জনসংখ্যার অঙ্কই বলছে, দেশে ৬০ বা তার বেশি বয়সের মানুষের সংখ্যা বাড়ছে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের তিন গুণ গতিতে। ভারতে বর্তমানে বয়স্ক জনগণের সংখ্যা প্রায় ১৫ কোটি।

১৫ ১৭
Fertility Rate of India

২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ী, বয়স্করা মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০.৫ শতাংশ অধিকার করে রয়েছেন। অনুমান করা হচ্ছে, ২০৫০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ৩৪ কোটিতে, যা জনসংখ্যার ২০ শতাংশেরও বেশি হবে। প্রতি ৫ জন ভারতীয়ের মধ্যে এক জন তখন ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সি হবেন। তার উপরের বয়সের মানুষের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে ৪ কোটি ৮০ লক্ষের ঘরে।

১৬ ১৭
Fertility Rate of India

সারা দেশে সার্বিক ভাবে জন্ম ও মৃত্যুহারও কমেছে বলে তুলে ধরা হয়েছে ওই রিপোর্ট। কোনও বছরে কোনও নির্দিষ্ট এলাকায় প্রতি এক হাজার জনসংখ্যার সাপেক্ষে কত জনের জন্ম হচ্ছে বা কত জন মারা যাচ্ছেন, তার ভিত্তিতে কষা হয় এই হিসাব। জনসংখ্যা কী গতিতে বাড়ছে, এতে তার একটা দিশা যেমন মেলে, তেমনই জনবিন্যাসের বদল এবং জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্যের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল মৃত্যুহার।

১৭ ১৭
Fertility Rate of India

রিপোর্ট বলছে, দেশে মৃত্যুহারও গত পাঁচ দশকে ক্রমশ কমেছে। ১৯৭১ সালে সার্বিক মৃত্যুহার ছিল ১৪.৯। তা কমে ২০২৩ সালে ৬.৪-এ এসে দাঁড়িয়েছে। শুধু ২০২২ আর ’২৩-এর মধ্যে তুলনায় দেখা যাচ্ছে, গ্রামে মৃত্যুহার ৭.২ থেকে কমে ৬.৮ হয়েছে, শহরে ৬ থেকে কমে ৫.৭। মৃত্যুহার সবচেয়ে কম চণ্ডীগড়ে (৪), শীর্ষে ছত্তীসগঢ় (৮.৩)।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy