Advertisement
০২ মে ২০২৪
Ghost Town

খনিতে মৃত্যু হয় হাজার হাজার মানুষের, যে ‘ভূতুড়ে শহরে’ ঢুকতে পার হতে হয় ‘হাড়গোড়ের রাস্তা’

রাশিয়ার একেবারে পূর্ব দিকে রয়েছে এই কাডিকচান শহর। খনিতে বিস্ফোরণের কারণে বাসিন্দাদের এই শহর ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল। মানচিত্রে এখন এর অস্তিত্বই নেই।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২৩ ১৯:০০
Share: Save:
০১ ১৮
রাতারাতি গায়েব হয়ে গেল গোটা একটি জনপদ। উবে গেলেন সব বাসিন্দা। এমন শহর বা গ্রামের সংখ্যা পৃথিবীতে নেহাত কম নয়। লোকবসতি খালি হয়ে যাওয়ার কারণ ভিন্ন। এমনই এক শহর ছিল রাশিয়ায়, যার অস্তিত্ব আজ আর নেই।

রাতারাতি গায়েব হয়ে গেল গোটা একটি জনপদ। উবে গেলেন সব বাসিন্দা। এমন শহর বা গ্রামের সংখ্যা পৃথিবীতে নেহাত কম নয়। লোকবসতি খালি হয়ে যাওয়ার কারণ ভিন্ন। এমনই এক শহর ছিল রাশিয়ায়, যার অস্তিত্ব আজ আর নেই।

ছবি: সংগৃহীত।

০২ ১৮
এ ধরনের শহরের কথা উঠলে প্রথমে মনে আসে প্রিপিয়াতের নাম। উত্তর ইউক্রেনে ছিল এই শহর। বেলারুস সীমান্তের কাছে।

এ ধরনের শহরের কথা উঠলে প্রথমে মনে আসে প্রিপিয়াতের নাম। উত্তর ইউক্রেনে ছিল এই শহর। বেলারুস সীমান্তের কাছে।

ছবি: সংগৃহীত।

০৩ ১৮
চেরনোবিল পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাছেই ছিল এই শহর। ১৯৮৬ সালে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিপর্যয়ের কারণে মারা গিয়েছিলেন সরকারি হিসাবে অন্তত ৩১ জন। এই বিপর্যয়ের ফলে যে তেজষ্ক্রিয় দূষণ হয়েছিল, তার সরাসরি প্রভাব ছিল বহু বছর।

চেরনোবিল পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাছেই ছিল এই শহর। ১৯৮৬ সালে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিপর্যয়ের কারণে মারা গিয়েছিলেন সরকারি হিসাবে অন্তত ৩১ জন। এই বিপর্যয়ের ফলে যে তেজষ্ক্রিয় দূষণ হয়েছিল, তার সরাসরি প্রভাব ছিল বহু বছর।

ছবি: সংগৃহীত।

০৪ ১৮
ওই তেজষ্ক্রিয় দূষণের কারণেই জনশূন্য হয়ে গিয়েছিল প্রিপিয়াত। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে সেখানে আর কেউ বাস করেন না।

ওই তেজষ্ক্রিয় দূষণের কারণেই জনশূন্য হয়ে গিয়েছিল প্রিপিয়াত। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে সেখানে আর কেউ বাস করেন না।

ছবি: সংগৃহীত।

০৫ ১৮
রাশিয়ার কাডিকচান শহরও খালি হয়ে গিয়েছিল নিমেষে। পরিণত হয়েছে ‘ভূতুড়ে শহরে’। এক সময় যেখানে বহু মানুষ বাস করতেন, আজ এক জনও থাকেন না। কেন এই অবস্থা?

রাশিয়ার কাডিকচান শহরও খালি হয়ে গিয়েছিল নিমেষে। পরিণত হয়েছে ‘ভূতুড়ে শহরে’। এক সময় যেখানে বহু মানুষ বাস করতেন, আজ এক জনও থাকেন না। কেন এই অবস্থা?

ছবি: সংগৃহীত।

০৬ ১৮
রাশিয়ার একেবারে পূর্ব দিকে রয়েছে এই কাডিকচান শহর। খনিতে বিস্ফোরণের কারণে বাসিন্দাদের এই শহর ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল। মানচিত্রে এখন এর অস্তিত্বই নেই।

রাশিয়ার একেবারে পূর্ব দিকে রয়েছে এই কাডিকচান শহর। খনিতে বিস্ফোরণের কারণে বাসিন্দাদের এই শহর ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল। মানচিত্রে এখন এর অস্তিত্বই নেই।

ছবি: সংগৃহীত।

০৭ ১৮
প্রায় ৩০ বছর আগে রাশিয়ার এই শহরে ছিল মানুষের বাস। এখন সেখানে শুধুই দাঁড়িয়ে রয়েছে ভাঙাচোরা পরিত্যক্ত কিছু ঘরবাড়ি, কারখানা, দোকান।

প্রায় ৩০ বছর আগে রাশিয়ার এই শহরে ছিল মানুষের বাস। এখন সেখানে শুধুই দাঁড়িয়ে রয়েছে ভাঙাচোরা পরিত্যক্ত কিছু ঘরবাড়ি, কারখানা, দোকান।

ছবি: সংগৃহীত।

০৮ ১৮
এখন এই অঞ্চলের নাম শুনলে ভয় পান লোকজন। কাডিকচান শহর যাওয়ার রাস্তাটিকে বলা হয় ‘হাড়গোড়ের রাস্তা’ (রোড অফ বোনস)।

এখন এই অঞ্চলের নাম শুনলে ভয় পান লোকজন। কাডিকচান শহর যাওয়ার রাস্তাটিকে বলা হয় ‘হাড়গোড়ের রাস্তা’ (রোড অফ বোনস)।

ছবি: সংগৃহীত।

০৯ ১৮
জোসেফ স্টালিন যখন সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের শাসক, তখন এই অঞ্চলে নির্বিচারে খুন হয়েছিলেন বহু শ্রমিক। শিবিরে একের পর এক শ্রমিককে খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ।

জোসেফ স্টালিন যখন সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের শাসক, তখন এই অঞ্চলে নির্বিচারে খুন হয়েছিলেন বহু শ্রমিক। শিবিরে একের পর এক শ্রমিককে খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ।

ছবি: সংগৃহীত।

১০ ১৮
সময়টা ১৯৩০ সাল। সে সময় এই অঞ্চলে মানুষের বাস ছিল না। পরীক্ষা করে জানা যায়, মাটির নীচে রয়েছে কয়লা, সোনা এবং বিভিন্ন ধাতু। সেগুলি উত্তোলন করার সিদ্ধান্ত নেন রাশিয়ার শাসক।

সময়টা ১৯৩০ সাল। সে সময় এই অঞ্চলে মানুষের বাস ছিল না। পরীক্ষা করে জানা যায়, মাটির নীচে রয়েছে কয়লা, সোনা এবং বিভিন্ন ধাতু। সেগুলি উত্তোলন করার সিদ্ধান্ত নেন রাশিয়ার শাসক।

ছবি: সংগৃহীত।

১১ ১৮
ওই অঞ্চলের তাপমাত্রা হিমাঙ্কের প্রায় ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস নীচে। চারপাশ বরফে ঢাকা। এ রকম আবহাওয়ায় খনিতে কাজ করা ছিল প্রায় অসম্ভব। অভিযোগ, রুশ শাসক জোর করে খনিতে কাজ করতে বাধ্য করতেন গরিব মানুষদের।

ওই অঞ্চলের তাপমাত্রা হিমাঙ্কের প্রায় ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস নীচে। চারপাশ বরফে ঢাকা। এ রকম আবহাওয়ায় খনিতে কাজ করা ছিল প্রায় অসম্ভব। অভিযোগ, রুশ শাসক জোর করে খনিতে কাজ করতে বাধ্য করতেন গরিব মানুষদের।

ছবি: সংগৃহীত।

১২ ১৮
এর পর শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। তখন যুদ্ধবন্দিদের অত্যাচার করে খনিতে কাজ করতে বাধ্য করা হত। প্রচণ্ড ঠান্ডা এবং অত্যাচারে প্রায় দু’লক্ষ বন্দি মারা গিয়েছিলেন বলে মনে করা হয়।

এর পর শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। তখন যুদ্ধবন্দিদের অত্যাচার করে খনিতে কাজ করতে বাধ্য করা হত। প্রচণ্ড ঠান্ডা এবং অত্যাচারে প্রায় দু’লক্ষ বন্দি মারা গিয়েছিলেন বলে মনে করা হয়।

ছবি: সংগৃহীত।

১৩ ১৮
যুদ্ধের শেষের দিকে খনি থেকে কয়লা, ধাতু উত্তোলন বন্ধ রাখা হয়েছিল। যুদ্ধ শেষ হলে কাডিকচানের দু’টি কয়লাখনি থেকে ফের কয়লা উত্তোলনের কাজ শুরু হয়।

যুদ্ধের শেষের দিকে খনি থেকে কয়লা, ধাতু উত্তোলন বন্ধ রাখা হয়েছিল। যুদ্ধ শেষ হলে কাডিকচানের দু’টি কয়লাখনি থেকে ফের কয়লা উত্তোলনের কাজ শুরু হয়।

ছবি: সংগৃহীত।

১৪ ১৮
সে সময় যুদ্ধবন্দিরা আর ছিলেন না। পরিবর্তে সরকার বেশি মজুরির লোভ দেখিয়ে নাগরিকদের খনিতে নামাতে শুরু করে।

সে সময় যুদ্ধবন্দিরা আর ছিলেন না। পরিবর্তে সরকার বেশি মজুরির লোভ দেখিয়ে নাগরিকদের খনিতে নামাতে শুরু করে।

ছবি: সংগৃহীত।

১৫ ১৮
সত্তরের দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নে ঠান্ডা লড়াই শুরু হয়। তখন থেকেই সোভিয়েত ভাঙনের দিকে এগোতে থাকে। কাডিকচানের খনিতে ততই কাজ চেয়ে ভিড় করতে শুরু করেন সাধারণ মানুষ। রুজির টানে। এই খনিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে ছোট শহর।

সত্তরের দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নে ঠান্ডা লড়াই শুরু হয়। তখন থেকেই সোভিয়েত ভাঙনের দিকে এগোতে থাকে। কাডিকচানের খনিতে ততই কাজ চেয়ে ভিড় করতে শুরু করেন সাধারণ মানুষ। রুজির টানে। এই খনিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে ছোট শহর।

ছবি: সংগৃহীত।

১৬ ১৮
১৯৮৯ সালে ভেঙে যায় সোভিয়েত ইউনিয়ন। তখন খনিতে কাজ থাকলেও শ্রমিকদের বেতন নিশ্চিত করার কেউ ছিলেন না। কাডিকচানে তখন মন্দা দেখা দেয়। খাদ্যাভাব চরমে ওঠে। এক বাসিন্দা জানিয়েছিলেন, পেট ভরাতে তাঁরা তখন কুকুর মেরে খাচ্ছিলেন।

১৯৮৯ সালে ভেঙে যায় সোভিয়েত ইউনিয়ন। তখন খনিতে কাজ থাকলেও শ্রমিকদের বেতন নিশ্চিত করার কেউ ছিলেন না। কাডিকচানে তখন মন্দা দেখা দেয়। খাদ্যাভাব চরমে ওঠে। এক বাসিন্দা জানিয়েছিলেন, পেট ভরাতে তাঁরা তখন কুকুর মেরে খাচ্ছিলেন।

ছবি: সংগৃহীত।

১৭ ১৮
এ রকম যখন অবস্থা, ১৯৯৬ সালের ২৫ নভেম্বর কয়লাখনিতে মিথেন গ্যাস বিস্ফোরণ হয়। মারা যান ছয় শ্রমিক।

এ রকম যখন অবস্থা, ১৯৯৬ সালের ২৫ নভেম্বর কয়লাখনিতে মিথেন গ্যাস বিস্ফোরণ হয়। মারা যান ছয় শ্রমিক।

ছবি: সংগৃহীত।

১৮ ১৮
একে বেতনের নিশ্চয়তা নেই, তার উপর নিরাপত্তাও নেই। এই পরিস্থিতিতে বন্ধ হয়ে যায় খনি। বাধ্য হয়ে শ্রমিকেরা এই শহর ছেড়ে চলে যান। ঘরবাড়ি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। তার পর থেকে কখনও আর এই শহরে কোনও বাসিন্দা ফেরেননি।

একে বেতনের নিশ্চয়তা নেই, তার উপর নিরাপত্তাও নেই। এই পরিস্থিতিতে বন্ধ হয়ে যায় খনি। বাধ্য হয়ে শ্রমিকেরা এই শহর ছেড়ে চলে যান। ঘরবাড়ি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। তার পর থেকে কখনও আর এই শহরে কোনও বাসিন্দা ফেরেননি।

ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE