All About Vishwash Kumar Ramesh, the Only Survivor from Seat 11A in Ahmedabad Plane Crash dgtl
Vishwash Kumar Ramesh
অভিশপ্ত বিমানের ‘লোন সার্ভাইভার’, দাদা মারা গেলেও বাঁচলেন অলৌকিক ভাবে! কে এই বিশ্বাস?
ভারতে আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন রমেশ। বৃহস্পতিবার দাদা অজয়কে নিয়ে লন্ডনে ফিরছিলেন। তখনই দুর্ঘটনা ঘটে। বিশ্বাস প্রাণে বাঁচলেও মারা যান অজয়।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২৫ ১৭:৫১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
পরনে রক্তমাখা জামা। প্যান্ট ছিঁড়ে গিয়েছে। অহমদাবাদের বিমান দুর্ঘটনাস্থল থেকে হেঁটে বেরিয়ে আসছেন আহত এক যুবক। হাত-পা কাঁপছে তাঁর। বৃহস্পতিবার এআই-১৭১ দুর্ঘটনার পর এক যুবকের এ-হেন ছবি এবং ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পরেই হইচই পড়ে যায় বিশ্ব জুড়ে। কারণ, অহমদাবাদ থেকে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার ওই বিমানের যাত্রীদের মধ্যে তিনিই ‘লোন সার্ভাইভার’। তিনি বিশ্বাস কুমার রমেশ।
০২১৯
বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ৩৮ মিনিটে অহমদাবাদের সর্দার বল্লভভাই পটেল বিমানবন্দর থেকে উড়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার লন্ডনের গ্যাটউইকগামী বিমান। ওড়ার এক মিনিটের মধ্যেই অহমদাবাদের মেঘানি নগরে ভেঙে পড়ে সেটি। বিমানে সওয়ার ২৪২ জনের মধ্যে ২৪১ জনেরই মৃত্যু হয়েছে।
০৩১৯
বরাতজোরে বেঁচে গিয়েছেন বিশ্বাস। তাঁর এই প্রাণরক্ষা ‘অলৌকিক’ বলে মনে করছে গোটা বিশ্ব। কিন্তু কে এই যুবক?
০৪১৯
বিশ্বাস এক জন ৪০ বছর বয়সি ব্রিটিশ নাগরিক, যিনি তাঁর আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে ভারতের দিউয়ে এসেছিলেন। ভ্রমণ শেষে বৃহস্পতিবার দাদা অজয় কুমার রমেশ (৪৫)-এর সঙ্গে ব্রিটেনে ফিরছিলেন তিনি। বিশ্বাস ১১এ-তে বসেছিলেন। তার ভাই বিমানের অন্য সারিতে বসেছিলেন।
০৫১৯
ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক বিশ্বাস ২০০৩ সাল থেকে ব্রিটেনে থাকেন। তাঁর স্ত্রী এবং সন্তানেরাও সেখানেই থাকেন।
০৬১৯
এর মধ্যে ভারতে আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন রমেশ। বৃহস্পতিবার দাদা অজয়কে নিয়ে লন্ডনে ফিরছিলেন। তখনই দুর্ঘটনা ঘটে। বিশ্বাস প্রাণে বাঁচলেও মারা যান অজয়। রমেশ জানিয়েছেন, বিমানের অন্য দিকের আসনে জায়গা পেয়েছিলেন তাঁর ভাই।
০৭১৯
দুর্ঘটনার পর বিশ্বাসের বর্তমান ঠিকানা অহমদাবাদের আসারওয়া সিভিল হাসপাতাল। তাঁর বুকে, চোখে এবং পায়ে আঘাত লেগেছে। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেছেন, ‘‘যাত্রা শুরুর ৩০ সেকেন্ড পরেই একটা বিকট শব্দ হয়। তার পরই বিমানটি ভেঙে যায়। সব কিছু খুব দ্রুত ঘটে।’’
০৮১৯
বিশ্বাস আরও বর্ণনা করেছেন, ‘‘আমি যখন উঠি, তখন আমার চারপাশে মৃতদেহের স্তূপ। আমি ভয় পেয়ে যাই। আমি উঠে দৌড়তে শুরু করি। আমার চারপাশে বিমানের টুকরো পড়ে ছিল। এর পর আমায় উদ্ধার করে অ্যাম্বুল্যান্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’’
০৯১৯
শুক্রবার সকালে বিশ্বাস অহমদাবাদ সিভিল হাসপাতালের ডাক্তারদের জানিয়েছেন, তাঁর আসনটি খুলে বেরিয়ে এসেছিল। সেই কারণে হয়তো তিনি বাঁচতে পেরেছেন।
১০১৯
বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিশ্বাস বলেন, ‘‘গোটা বিমান ভেঙে পড়ল। হঠাৎ তীব্র ঝাঁকুনিতে আমার সিটটা খুলে এসেছিল। তাই হয়তো আমি বেঁচে গেলাম।’’
১১১৯
সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘‘আমি যে দিকে পড়েছিলাম, সেখানে হস্টেলের একতলার ফাঁকা জায়গা ছিল কিছুটা। সেখান দিয়ে আমি বেরিয়ে আসার চেষ্টা করি। কিন্তু উল্টো দিকে হস্টেলের দেওয়াল ছিল। সে দিক থেকে হয়তো কেউ বেরোতে পারেননি। আমার বাঁ হাত একটু পুড়ে গিয়েছে।’’
১২১৯
অহমদাবাদ সিভিল হাসপাতালের অধ্যাপক এবং শল্য চিকিৎসা বিভাগের প্রধান রজনীশ পটেল সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বিশ্বাসের অবস্থা খুব গুরুতর নয় এবং আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
১৩১৯
ইউরোপীয়রা বলেন, বোয়িং বিমানের ১১এ আসনে যাত্রা করলে সফরের মেজাজ নষ্ট হয়ে যায়। কারণ, ওই আসন নামেই ‘উইন্ডো সিট’। ১১এ-র পাশে আদতে কোনও জানলা থাকে না। আর সে কারণে যাত্রীরা মোটেও পছন্দ করেন না আসনটি।
১৪১৯
এয়ার ইন্ডিয়ার অহমদাবাদ-লন্ডনগামী বোয়িং বিমানের সেই আসনে বসেই প্রাণরক্ষা হয়েছে বিশ্বাস কুমার রমেশের। বিমানে সওয়ার ২৪২ জনের মধ্যে একমাত্র তিনিই প্রাণে বেঁচেছেন। তার পরেই প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি বোয়িং বিমানের সবচেয়ে অপছন্দের এই আসনই সবচেয়ে নিরাপদ?
১৫১৯
উল্লেখ্য, দুর্ঘটনার কবলে পড়া এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি চালনার দায়িত্বে ছিলেন ক্যাপ্টেন সুমিত সাভারওয়াল এবং সহকারী পাইলট ক্লাইভ কুন্দর। তাঁদের দু’জনেরই মৃত্যু হয়েছে।
এআই-১৭১ অহমদাবাদ বিমানবন্দরের রানওয়ে ২৩ থেকে যাত্রা শুরু করে মেঘানি নগরের একটি মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রাবাসের উপর ভেঙে পড়ে। দুর্ঘটনায় বিমানযাত্রীদের পাশাপাশি বেশ কয়েক জন ডাক্তারি পড়ুয়াও মারা গিয়েছেন।
১৮১৯
ভিডিয়োয় ধরা পড়েছে, কী ভাবে বিমানটি উড়ান শুরুর কিছু ক্ষণের মধ্যে দ্রুত গতিতে নীচে নেমে লোকালয়ে ভেঙে পড়ে। দেখা গিয়েছে, বিমানবন্দর থেকে যাত্রা শুরুর পর লোকালয়ের উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি। বেশ নীচ দিয়ে উড়তে দেখা গিয়েছে সেটিকে।
১৯১৯
কিছুটা উড়ে যাওয়ার পরেই লোকালয়ের উপরে ভেঙে পড়ে বিমানটি। বিস্ফোরণের অভিঘাত এতটাই বেশি ছিল যে, আগুনের শিখা আকাশের অনেক উঁচু পর্যন্ত পৌঁছে যায়।