শ্রদ্ধা-কাণ্ডের ছায়া বাংলাদেশেও! প্রেমিকাকে খুন করে টুকরো টুকরো করে দেহ লোপাটের চেষ্টা

এই ঘটনায় নড়েচড়ে বসে পুলিশ। লিভ-ইন সঙ্গী স্বপ্নার সঙ্গে আবুকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, গত চার বছর ধরে স্বপ্নার সঙ্গে সহবাস করতেন আবু, কিছু দিন আগে কবিতার সঙ্গে আলাপ হয়েছিল আবুর। কবিতাকে খুনের পাঁচ দিন আগেই তাঁর সঙ্গে আবুর পরিচয় হয় বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৫ নভেম্বর ভাড়াবাড়িতে কবিতাকে ডাকেন আবু, সে সময় কাজে বেরিয়েছিলেন স্বপ্না। সে দিন কবিতা ও আবুর মধ্যে ঝগড়া হয়। তার জেরেই কবিতাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন বলে অভিযোগ উঠেছে আবুর বিরুদ্ধে। খুনের পর দেহ টুকরো টুকরো করে কাটার পর বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান ওই যুবক।

খুনের রাতেই ঢাকা ছেড়ে রূপসা নদী পেরিয়ে স্বপ্নাকে নিয়ে পালান আবু। তবে পরের দিনই কবিতার দেহ উদ্ধারের পরই আবুর খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু করে পুলিশ।

৭ নভেম্বর গাজিপুর জেলা থেকে আবু ও স্বপ্নাকে গ্রেফতার করা হয়। খুনের কথা আবু স্বীকার করেছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ। তবে খুনের ঘটনায় স্বপ্নার সরাসরি যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

এই ঘটনার সঙ্গে দিল্লিতে শ্রদ্ধা-হত্যার মিল পাচ্ছেন অনেকে। দিল্লি পুলিশের দাবি, গত ১৮ মে দুপুর থেকে আফতাব এবং শ্রদ্ধার মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি শুরু হয়েছিল। মুম্বই থেকে দিল্লিতে আসায় আপত্তি ছিল আফতাবের। তাতেই শ্রদ্ধার সন্দেহ হয় যে অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন আফতাব। অন্য মহিলার সঙ্গে আফতাবের হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজও দেখে ফেলেছিলেন শ্রদ্ধা। যা নিয়ে তাঁদের সম্পর্কে টানাপড়েন চলছিল।

তদন্তকারীরা জাানিয়েছেন, আফতাবের ফ্ল্যাট থেকে একটি করাত পাওয়া গিয়েছে। তাঁর ফ্ল্যাটে কোনও কাঠের বা রঙের কাজ করা হয়নি। তা ছাড়া, তাঁদের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ করতেও বিশেষ কেউ আসতেন না। এমনকি, আফতাব নিজের রান্না করতেন না। অনলাইনে খাবার অর্ডার দিতেন। যেগুলি তাঁর ফ্ল্যাটের দরজায় বা বিল্ডিংয়ের প্রধান দরজায় রেখে চলে যেতেন ফু়ড ডেলিভারি সংস্থার কর্মীরা। ফলে ফ্ল্যাটে ওই করাতটি কেন রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তবে শ্রদ্ধা-হত্যার সঙ্গে কবিতা-হত্যার ফারাকও রয়েছে কিছু। মূল ফারাক হল, আবু খুন করেছেন কবিতাকে, যাঁর সঙ্গে তাঁর পরে আলাপ হয়। কিন্তু আফতাব খুন করেন যাঁর সঙ্গে সহবাস করছিলেন, সেই শ্রদ্ধাকে।

আফতাব-শ্রদ্ধার ঘটনার মধ্যেই বাংলাদেশের এই ঘটনা প্রকাশ্যে এল। দু’ক্ষেত্রেই প্রেমিকার দেহ টুকরো টুকরো করে কাটা হয়েছে। দুই ঘটনার নৃশংসতায় সাদৃশ্য বহু।