২০ বছরে দু’টি হিট, বহু ফ্লপ! বলিপাড়া থেকে সরে গিয়ে এখন কী করছেন ‘শাহরুখের সৎভাই’?

বলিপাড়ার গুঞ্জন, ‘ম্যায় হুঁ না’ ছবির নির্মাতারা সোহেলকে অভিনয়ের প্রস্তাব দিলে তিনিও তা ফিরিয়ে দেন। বলি অভিনেতা ফারহান আখতারও এই ছবিতে অভিনয় করতে চাননি। পর পর তিন জন অভিনেতা এই ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলে তার পর জায়েদকে প্রস্তাব দেন নির্মাতারা।

২০০২ সালে মুক্তি পায় হৃতিক রোশন এবং অমিশা পটেল অভিনীত ‘আপ মুঝে অচ্ছে লগনে লগে’। কানাঘুষো শোনা যায়, এই ছবির শুটিং চলাকালীন একটি ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব পান জায়েদ। তিনি নাকি ছবির সেটে উপস্থিত ছিলেন। সেই সময়ে বিনোদন সংস্থার এক কর্তার নজরে পড়েন তিনি। তার পর ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন জায়েদকে। সঙ্গে সঙ্গে রাজিও হয়ে যান তিনি।

২০০৩ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘চুরা লিয়া হ্যায় তুমনে’। জায়েদের কেরিয়ারের প্রথম ছবি। এই ছবিতে জায়েদের বিপরীতে অভিনয় করতে দেখা যায় ধর্মেন্দ্র এবং হেমা মালিনীর কন্যা তথা অভিনেত্রী এষা দেওলকে।

২০০৪ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘ম্যায় হুঁ না’। সেই বছর আয়ের দিক থেকে এগিয়ে ছিল শাহরুখেরই একটি ছবি ‘বীর জ়ারা’। দ্বিতীয় স্থানে জায়গা করে নেয় ‘ম্যায় হুঁ না’। বক্স অফিসে হিট করে এই ছবি। জায়েদের কেরিয়ারেও একটি হিট ছবি যুক্ত হয়।

২০০৫ সালে পর পর চারটি ছবিতে অভিনয় করেন জায়েদ। ‘ওয়াদা’, ‘দশ’, ‘শাদি নম্বর ওয়ান’ এবং ‘শব্দ’ নামের চারটি ছবি মুক্তি পায় অভিনেতার। সেগুলির মধ্যে বক্স অফিসে মাত্র ‘দশ’ ছবিটি ব্যবসা করে হিট হয়। বাকি তিনটি ছবি ফ্লপ করে।

‘ফাইট ক্লাব’, ‘রকি’, ‘ক্যাশ’, ‘স্পিড’, ‘মিশন ইস্তানবুল’, ‘যুবরাজ’, ‘ব্লু’, ‘লভ ব্রেক আপ্‌স জিন্দেগি’, ‘তেজ’-এর মতো একাধিক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় জায়েদকে। কিন্তু কোনও ছবিই বক্স অফিসে লক্ষ্মীর মুখ দেখতে পায়নি।

২০১১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘লভ ব্রেক আপ্‌স জিন্দেগি’ ছবিতে অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজনাও করেন জায়েদ। এই ছবিতে জায়েদের সঙ্গে অভিনয় করেন বলি অভিনেত্রী দিয়া মির্জ়া। ছবির প্রযোজনার দায়িত্বেও ছিলেন অভিনেত্রী। দু’জন মিলে একটি প্রযোজনা সংস্থা শুরু করেন। কিন্তু ছবি নির্মাণ নিয়ে মতের অমিল হওয়ার সেই সংস্থা ছেড়ে বেরিয়ে যান জায়েদ।

২০১৫ সালে মুক্তি পায় ‘শরাফত গয়ি তেল লেনে’। এই ছবিতেই শেষ অভিনয় করতে দেখা যায় তারকা-পুত্রকে। তার পর বড় পর্দা থেকে বিরতি নেন তিনি।

বড় পর্দায় অভিনেতা হিসাবে ব্যর্থ হওয়ার পর টেলিভিশনের পর্দায় জায়েদ তাঁর ভাগ্য বদল করতে যান। ‘হাসিল’ নামের একটি হিন্দি ধারাবাহিকে অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে। তবে ছোট পর্দায় জা়য়েদের স্থায়িত্ব ছিল কম। ‘হাসিল’-এর পর আর কোনও ধারাবাহিকে অভিনয় করতে দেখা যায়নি তাঁকে।

২০২৩ সালের মার্চ মাসে সমাজমাধ্যমের পোস্টে জায়েদ লিখেছিলেন, ‘‘আমায় এত ভালবাসার জন্য, সব সময় আমার পাশে থাকার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সকলের আশীর্বাদ নিয়েই এই ইন্ডাস্ট্রিতে ২০ বছর কাটিয়ে ফেললাম। আমার নতুন ছবির কাজ খুব তাড়াতাড়ি শুরু হচ্ছে। আপনাদের সকলকে এই খবরটি জানানোর জন্য আর অপেক্ষা করতে পারছিলাম না। আমি সত্যিই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছি।’’

সমাজমাধ্যমে নতুন ছবির ঘোষণা করার পর এক বছর কেটে গেলেও কোনও ছবিতে দেখা যায়নি জায়েদকে। এমনকি তিন সপ্তাহ আগেও তিনি জানিয়েছেন যে তাঁর নতুন ছবি মুক্তি পেতে চলেছে খুব তাড়াতাড়ি। সম্প্রতি একটি মিউজ়িক ভিডিয়োয় অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।

২০০৫ সালে মালাইকা পারেখের সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন জায়েদ। মালাইকার সঙ্গে জায়েদের সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। বলিপাড়ার অন্দরমহল সূত্রে খবর, কোদাইকানালের স্কুলে একসঙ্গে পড়তেন দু’জনে। সহপাঠী থেকে বন্ধু, বন্ধু থেকে প্রেমিক।

বলিপাড়া সূত্রে খবর, ১৯৯৫ সাল থেকে জায়েদের সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন মালাইকা। ১০ বছর সম্পর্কে থাকার পর বিয়ে করেন দু’জনে। বিয়ের পর দুই পুত্রসন্তানের জন্ম দেন মালাইকা।

এক পুরনো সাক্ষাৎকারে মালাইকা জানিয়েছিলেন, তাঁকে চার বার প্রেম নিবেদন করেছিলেন জায়েদ। চার বারই তাঁকে আংটি উপহার দিয়েছিলেন অভিনেতা। সেই আংটিগুলি মালাইকার কাছে এখনও রয়েছে। জায়েদ এবং মালাইকার সঙ্গে একই স্কুলে পড়েছেন ধর্মেন্দ্র এবং হেমা মালিনীর কন্যা এষা দেওল। এষার সঙ্গে বন্ধুত্ব রয়েছে দু’জনের।

সমাজমাধ্যমে মাঝেমধ্যেই সক্রিয় দেখা যায় জায়েদকে। ইতিমধ্যেই ইনস্টাগ্রামের পাতায় তাঁর অনুগামীর সংখ্যা চার লক্ষের গণ্ডি পার করে ফেলেছে।