Advertisement
১৩ ডিসেম্বর ২০২৫
Jageshwar Prasad Awadhiya

১০০ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে ৩৯ বছর ধরে আদালতে হাজিরা! এখন শুধু শান্তিতে মরতে চান জগেশ্বর

১০০ টাকা ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে টানা ৩৯ বছর জেল এবং আদালতে যাতায়াত করতে হয়েছিল জগেশ্বর নামে এক ব্যক্তিকে। অতি সাধারণ পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী মানুষটি নিমেষে হারিয়ে ফেলেছিলেন নিজের সবটুকু।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২৫ ১৭:৫৩
Share: Save:
০১ ১৭
Jageshwar Prasad Awadhiya endured 39 days of incarceration

জীবনে কখন কী পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় তা কেউই বলতে পারে না। আপনি হয়তো সঠিক পথ দিয়েই চলছেন, ভাবছেন সৎ থাকলে ভয় কিসের! কিন্তু আপনার সততার উপরও যদি কালি লেপার চেষ্টা করা হয়? কী ভাবে সামলাবেন নিজেকে? আদৌ কি কাটিয়ে উঠতে পারবেন সমাজের হেনস্থা!

০২ ১৭
Jageshwar Prasad Awadhiya endured 39 days of incarceration

এমনই এক ঘটনা ঘটেছিল জগেশ্বরপ্রসাদ আওয়াধিয়ার জীবনে। অতি সাধারণ পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন তিনি। সব সময় চেষ্টা করেছেন সৎ পথে আয় করার। কিন্তু সেই জগেশ্বরকেই টানা ৩৯ বছর ধরে বাঁচতে হয়েছিল অসম্মানিত হয়ে, সঙ্গে মিলেছিল আদালতের টানাপড়েন।

০৩ ১৭
Jageshwar Prasad Awadhiya endured 39 days of incarceration

ঘুষ নেওয়া এবং ঘুষ দেওয়া— আইনের চোখে দু’টিই অপরাধমূলক কাজ। ধরা পড়লে অনেক সময় কড়া শাস্তি মেলে। অনেক সময় আবার শাস্তি তো দূর, ঘুষের বিষয়ে টেরও পাওয়া যায় না।

০৪ ১৭
Jageshwar Prasad Awadhiya endured 39 days of incarceration

কিন্তু মাত্র ১০০ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে কখনও কাউকে শাস্তি পেতে শুনেছেন? তা-ও আবার কোনও দোষ না করেই! হ্যাঁ, জগেশ্বরের সঙ্গে এমনটাই হয়েছিল।

০৫ ১৭
Jageshwar Prasad Awadhiya endured 39 days of incarceration

১০০ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে টানা ৩৯ বছর আদালতে হাজিরা দিয়ে গিয়েছিলেন জগেশ্বর। সঙ্গে ছিল আরও ভয়ঙ্কর শাস্তি। সমাজ, পাড়া, প্রতিবেশী তো জগেশ্বরকে ঘুষখোরের তকমা দিয়েই দিয়েছিল। জগেশ্বরের পরিবারকেও হেনস্থা করতে ছাড়েনি তারা।

০৬ ১৭
Jageshwar Prasad Awadhiya endured 39 days of incarceration

জগেশ্বর ছত্তীসগঢ়ের রাজধানী রায়পুরের বাসিন্দা। তাঁর উপার্জনেই সংসার চলত। স্ত্রী এবং চার সন্তানকে নিয়ে সুখী পরিবার ছিল তাঁর। জগেশ্বর চাকরি করতেন মধ্যপ্রদেশ রাজ্য সড়ক পরিবহণ কর্পোরেশনের রায়পুর অফিসে। সেই চাকরিই তাঁর জীবনে সবচেয়ে বড় ‘কাল’ হয়ে দাঁড়ায়। ছিনিয়ে নেয় মান, সম্মান, সব কিছু!

০৭ ১৭
Jageshwar Prasad Awadhiya endured 39 days of incarceration

আদালতের দীর্ঘ টানাপড়েনের পর অবশেষে জয় হয়েছে তাঁর। যদিও লাঞ্ছনা পেতে পেতে হারিয়ে গিয়েছে বেঁচে থাকার ইচ্ছে। ৮৩ বছর বয়সে এসে জগেশ্বর বলছেন, ‘‘এ বার অন্তত আমি শান্তিতে মরতে পারব!’’ এখন শুধু মৃত্যুর চিন্তা জগেশ্বরের মনে।

০৮ ১৭
Jageshwar Prasad Awadhiya endured 39 days of incarceration

কিন্তু এমন কী হয়েছিল যে জগেশ্বরকে যন্ত্রণা, সম্মানহানির সঙ্গে কাটাতে হল এতগুলি বছর! ১৯৮৬ সালের ঘটনা। জগেশ্বরের বয়স তখন ৪৪ বছর।

০৯ ১৭
Jageshwar Prasad Awadhiya endured 39 days of incarceration

রাজ্য সড়ক পরিবহণ দফতরে জগেশ্বর চাকরি করতেন বিলিং সহকারী পদে। কাজের দক্ষতার জন্য সুনাম ছিল তাঁর। বিলিং সহকারী পদ মানেই বোঝা যায় তাঁকে বেশ দায়িত্বপূর্ণ কাজই করতে হত। যতই লোভনীয় সুযোগ আসুক না কেন, সততার পথ থেকে কখনওই নড়তেন না জগেশ্বর।

১০ ১৭
Jageshwar Prasad Awadhiya endured 39 days of incarceration

কিন্তু একটা অভিযোগ বদলে দেয় জগেশ্বরের জীবন। ওই সংস্থারই এক কর্মী অশোককুমার বর্মা জগেশ্বরের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিলেন। অভিযোগ ছিল ১০০ টাকা ঘুষ নেওয়ার।

১১ ১৭
Jageshwar Prasad Awadhiya endured 39 days of incarceration

একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, অশোক একটি কাজের জন্য তাঁর বকেয়া বিল পরিশোধ করতে চাপ দিচ্ছিলেন জগেশ্বরকে। কিন্তু উপযুক্ত নিয়ম দেখিয়ে জগেশ্বর সেই বিল পরিশোধ করতে রাজি হননি।

১২ ১৭
Jageshwar Prasad Awadhiya endured 39 days of incarceration

অশোক ভেবেছিলেন জগেশ্বরকে ঘুষ দিয়ে কাজ আদায় করবেন। তাই প্রথমে ২০ টাকার ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা করেন, কিন্তু সে টাকা জগেশ্বর ফিরিয়ে দেন। এতেই ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন অশোক।

১৩ ১৭
Jageshwar Prasad Awadhiya endured 39 days of incarceration

তার পর ওই বছরেরই ২৪ অক্টোবর ফন্দি আঁটেন অশোক। জগেশ্বরকে ফের একটি কাজের জন্য ১০০ টাকা ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা করেন। জোরাজুরির সময় নজরদারি কর্মকর্তারা চলে আসেন।

১৪ ১৭
Jageshwar Prasad Awadhiya endured 39 days of incarceration

কোনও কিছু বিচার না করেই সঙ্গে সঙ্গে জগেশ্বরকে গ্রেফতার করা হয়। জগেশ্বর বার বার নিজেকে নির্দোষ দাবি করলেও কেউ শোনেননি তাঁর কথা। জগেশ্বর অভিযোগ করেছিলেন, এই ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। তাঁর হাতে জোর করে টাকা ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। তবে ওই মুহূর্তে তাঁর কোনও কথাই কেউ শোনেননি।

১৫ ১৭
Jageshwar Prasad Awadhiya endured 39 days of incarceration

এই ঘটনা জগেশ্বর ও তাঁর পরিবারকে একেবারে শেষ করে দিয়েছিল। চাকরি থেকে সাসপেন্ড করে দেওয়া হয় ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত। এর পর চলে আরও টানাপড়েন। চাকরির জায়গা স্থানান্তরিত করে দেওয়া হয়, বেতনও অর্ধেক পাচ্ছিলেন জগেশ্বর। পদোন্নতি, বেতনবৃদ্ধি-সহ অন্যান্য সব সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয় তাঁকে।

১৬ ১৭
Jageshwar Prasad Awadhiya endured 39 days of incarceration

একে তো সমাজের কাছে তাঁর পরিবার ঘুষখোর হিসাবে চিহ্নিত হয়ে গিয়েছিল, সেই সঙ্গে ছিল আর্থিক অনটন। অবসর গ্রহণের পর জগেশ্বরের পেনশনও বন্ধ করে দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত একজন প্রহরীর চাকরি করে সংসার খরচ বহন করছিলেন জগেশ্বর।

১৭ ১৭
Jageshwar Prasad Awadhiya endured 39 days of incarceration

দীর্ঘ ৩৯ বছর ধরে আদালতে মামলা চলে। অবশেষে জয় হয় সত্যের। বিচারক জগেশ্বরকে সম্পূর্ণ নির্দোষ বলে ঘোষণা করেন। জীবনের শেষ মুহূর্তে এসে যে কপাল থেকে ঘুষখোরের তকমা সরাতে পেরেছেন তাতেই শান্তি জগেশ্বরের। এখন তাঁর একটাই আবেদন, তিনি যেন তাঁর চাকরির আটকে থাকা টাকাগুলি ফেরত পান।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy