Employees Provident Fund wage ceiling limit may hike from Rs 15000 to Rs 21000 dgtl
Employees Provident Fund
১৫ থেকে এক লাফে ২১ হাজার! প্রভিডেন্ট ফান্ডের মজুরি সীমা বৃদ্ধিতে কী কী লাভের সম্ভাবনা?
এমপ্লয়িজ় প্রভিডেন্ট ফান্ডের মজুরিসীমা ১৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২১ হাজার টাকা করার বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে কেন্দ্র। এতে বেসরকারি সংস্থার আরও বেশি সংখ্যক কর্মীকে পেনশনের আওতায় আনা যাবে বলে যুক্তি দিয়েছে সরকার।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ১০:১৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
প্রভিডেন্ট ফান্ডের (পিএফ) নিয়মে বড় বদল আনতে চলেছে কেন্দ্র। বেসরকারি সংস্থায় চাকরিজীবীদের উপর পড়বে তার প্রভাব। সূত্রের খবর, এমপ্লয়িজ় প্রভিডেন্ট ফান্ডের (ইপিএফ) মজুরিসীমা বৃদ্ধির বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। বেসরকারি সংস্থায় কর্মরতদের সামাজিক নিরাপত্তার উন্নতিকল্পে এই পরিকল্পনা বলে জানা গিয়েছে।
০২১৭
ইপিএফ নিয়ন্ত্রণ করে এমপ্লয়িজ় প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন বা ইপিএফও। এটি কেন্দ্রের শ্রম মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি সংস্থা। বর্তমানে ইপিএফও-র নিয়ম অনুযায়ী বেসরকারি সংস্থার কোনও কর্মীর মূল বেতন (বেসিক পে) ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হলে তাঁকে বাধ্যতামূলক ভাবে পেনশন স্কিমের আওতায় আনতে হয়।
০৩১৭
সূত্রের খবর, আগামী দিনে এই নিয়মের বদল ঘটাতে চাইছে কেন্দ্র। পিএফের ক্ষেত্রে ন্যূনতম মজুরি ১৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২১ হাজার টাকা করার পরিকল্পনা রয়েছে মোদী সরকারের। যদিও এই নিয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
০৪১৭
ইপিএফও-র নিয়মে বলা আছে, বেসরকারি সংস্থার এক জন চাকরিজীবীর মূল বেতনের (বেসিক পে) ১২ শতাংশ প্রভিডেন্ট ফান্ডের জন্য কেটে নিতে হবে। ওই টাকা ইপিএফও-র তহবিলে জমা পড়বে। সম পরিমাণ টাকা সংশ্লিষ্ট তহবিলে জমা করবে ওই ব্যক্তির নিয়োগকারী সংস্থাও।
০৫১৭
ইপিএফও-র তহবিলের দু’টি অংশ রয়েছে। একটি হল, এমপ্লয়িজ় প্রভিডেন্ট ফান্ড (ইপিএফ)। অপরটির নাম, এমপ্লয়িজ় পেনশন স্কিম (ইপিএস)। বেসরকারি সংস্থার কর্মীর বেতনের যে অংশটি কেটে নেওয়া হয়, তার পুরোটাই জমা হয় ইপিএফ তহবিলে।
০৬১৭
অন্য দিকে, নিয়োগকারী সংস্থা যে টাকা জমা করবে, তার ৮.৩৩ শতাংশ পেনশন অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে। বাকি ৩.৬৭ শতাংশ চলে যায় প্রভিডেন্ট ফান্ড তহবিলে। ইপিএফের উপর বছরে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সুদ দিয়ে থাকে কেন্দ্র। ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষে এর পরিমাণ ৮.২৫ শতাংশ রেখেছে সরকার।
০৭১৭
ইপিএফের এই সুদের হার পরিবর্তনশীল। ২০২১-’২২ অর্থিক বছরে প্রভিডেন্ট ফান্ডে সুদের হার ছিল ৮.৫ শতাংশ। ঠিক তার পরের বছর (পড়ুন ২০২২-২৩) এই হার আরও কমে ৮.১ শতাংশে নেমে এসেছিল। তা চলতি আর্থিক বছরে ফের কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।
০৮১৭
পেনশন তহবিলে আবার ইচ্ছামতো টাকা জমা করা যায় না। এ ক্ষেত্রে একটি ঊর্ধ্বসীমা ঠিক করে দিয়েছে কেন্দ্র। সেই নিয়মে বলা হয়েছে এক জন কর্মীর ইপিএস অ্যাকাউন্টে সর্বোচ্চ মাসিক ১,২৫০ টাকা জমা করা যাবে। ইপিএসের টাকা অবসরের আগে কোনও ভাবেই তোলা যাবে না।
০৯১৭
প্রভিডেন্ট ফান্ডে সঞ্চিত অর্থ কিন্তু প্রয়োজন অনুযায়ী কর্মীর তোলার অধিকার রয়েছে। এই তহবিল থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা তুলে নিতে পারেন তিনি। আবার ইচ্ছা করলে অবসরের পরেও এই তহবিল থেকে টাকা পেতে পারেন সংশ্লিষ্ট কর্মী।
১০১৭
কেন্দ্রের দাবি, মজুরি সীমা ২১ হাজার টাকা করলে বেসরকারি সংস্থার অধিকাংশ কর্মীকে পেনশন তহবিলের আওতায় আনা যাবে। এখনকার আইন অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তির মূল বেতন (বেসিক পে) ১৫ হাজার টাকা ছাড়িয়ে গেলে তিনি পেনশন তহবিলে অর্থ জমা করতে পারবেন না। তাঁর বেতন থেকে যে টাকা কাটা হবে, তার পুরোটাই যাবে প্রভিডেন্ট ফান্ড তহবিলে।
১১১৭
কিন্তু, মজুরি সীমা বাড়িয়ে ২১ হাজার করলে ১৫ হাজার টাকা বা তার বেশি বেসিক পে হলেও বেসরকারি সংস্থার সংশ্লিষ্ট কর্মী পেনশন ফান্ডে টাকা জমাতে পারবেন। মূল বেতন ২১ হাজার টাকা পর্যন্ত এই সুবিধা পাবেন তিনি।
১২১৭
সূত্রের খবর, মজুরি সীমা বাড়িয়ে ২১ হাজার টাকা করা হলে পেনশন তহবিলে প্রদেয় অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। সে ক্ষেত্রে ১,২৫০ টাকা থেকে বেড়ে ওই অঙ্ক দাঁড়াবে ১,৭৪৯ টাকা। অন্য দিকে প্রভিডেন্ট ফান্ডে কমবে বিনিয়োগের পরিমাণ।
১৩১৭
নতুন নিয়মে পেনশনের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে বলে যুক্তি দিয়েছে মোদী সরকার। ইপিএস যে নিয়মে পেনশন দিয়ে থাকে তা হল (গ্রাহকের কর্ম বছর x পেনশন যোগ্য বেতন)/৭০। এই নিয়মে ৩৫ বছর বয়স কোনও কর্মী ৫৮ বছর বয়সে অবসর নিলে প্রতি মাসে ৬,৯০০ টাকা করে পেনশন পাবেন। তবে অবশ্যই তাঁর বেতন ২৩ হাজার টাকা হতে হবে।
১৪১৭
এখানে মনে রাখার বিষয় হল, প্রভিডেন্ট ফান্ডে গচ্ছিত অর্থের উপর সুদ দিয়ে থাকে সরকার। কিন্তু, ইপিএস আমানতের উপর কোনও সুদ দেওয়া হয় না। ফলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনুমান, মজুরি সীমা বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে বিরোধীদের আক্রমণের মুখে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে মোদী প্রশাসনের।
১৫১৭
১৯৫২ সালে ‘এমপ্লয়িজ় প্রভিডেন্ট ফান্ড মিসলেনিয়াস প্রভিশন অ্যাক্ট’-এর আওতায় বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের জন্য পিএফ চালু করে কেন্দ্র। অতীতে মাত্র আট বার এর নিয়ম বদলেছে সরকার।
১৬১৭
১৯৫২ সালে প্রভিডেন্ট ফান্ডের জন্য মজুরিসীমা ছিল মাত্র ৩০০ টাকা। এর পর বাড়তে বাড়তে ২০০১ সালে তা সাড়ে ছ’হাজার টাকা করা হয়। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী প্রথম বার ক্ষমতায় আসার পর সেই পরিমাণ একলাফে বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়। টাকার অঙ্ক দাঁড়ায় ১৫ হাজার।
১৭১৭
এর পর কেটে গিয়েছে আরও ১০ বছর। গত এক দশকে পেট্রল-ডিজ়েল থেকে রান্নার গ্যাস, খাদ্য কিংবা বস্ত্র সব কিছুরই দাম বেড়েছে। সেটা নজরে রেখেই এ বার চাকরিজীবীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড (পিএফ) সংক্রান্ত নিয়ম বদলের ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে কেন্দ্র।