নিউ ক্যালিডোনিয়ার পরিস্থিতি ক্রমশ হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত শতাধিক। চলছে ব্যাপক ধরপাকড়। বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এবং গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিউ ক্যালিডোনিয়ায় আন্তর্জাতিক বিমান ওঠানামার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। বুধবার ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ ওই দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন।
নিউ ক্যালিডোনিয়ায় এখনও ফরাসি শাসন চলছে। অস্টেলিয়ার পূর্বে অবস্থিত এই দ্বীপপুঞ্জের জনসংখ্যা প্রায় তিন লক্ষ। তাঁদের মধ্যে ৪৪ শতাংশই সেখানকার আদিবাসী কনক সম্প্রদায়ের মানুষ। ৩৪ শতাংশ ইউরোপীয় থাকেন সেখানে। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই ফরাসি। এ ছাড়াও ওয়ালিসিয়ান এবং তাহিতিয়ান-সহ অন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাসও রয়েছে নিউ ক্যালিডোনিয়ায়। দেশের জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ থাকেন রাজধানী নৌমেয়ায়।
যুদ্ধ শেষ করার জন্য ফরাসি কর্তৃপক্ষ নিউ ক্যালিডোনিয়াকে স্বাধীনতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। স্বাক্ষরিত হয় নৌমেয়া চুক্তি। কিন্তু প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আমেরিকা এবং চিনের মধ্যে ‘ঠান্ডা লড়াই’ ফ্রান্সকে আতঙ্কিত করে তোলে। অনেকেই আশঙ্কা করেন, স্বাধীন নিউ ক্যালিডোনিয়ায় চিন প্রভাব বিস্তার করতে পারে। তাই স্বাধীনতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসে ফ্রান্স।
২০২১ সালে এমন চিত্র দেখা গেল কেন? যে সময় এই ভোটগ্রহণ হয় তখন বিশ্ব জুড়ে করোনার প্রভাব ছিল। করোনায় কনক সম্প্রদায়ের অনেক মানুষের মৃত্যু হয়। কনক প্রথা অনুযায়ী, তাদের সম্প্রদায়ের কারও মৃত্যু হলে এক বছর ধরে শোকপালন করা হয়। সে সময় কোনও অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া প্রথাবিরোধী। তাই ২০২১ সালের গণভোট বয়কট করেন কনকেরা।
স্বাধীনতার দাবিতে মাঝেমধ্যেই নিউ ক্যালিডোনিয়ায় উত্তেজনা ছড়ায়। তবে গত বৃহস্পতিবার থেকে সেখানকার পরিস্থিতি অন্য দিকে মোড় নেয়। ফরাসি প্রেসিডেন্ট মাকরঁ প্যারিসে জরুরি বৈঠক ডাকেন। নিউ ক্যালিডোনিয়ার রাজনীতিবিদদের চিঠিও পাঠান তিনি। শান্তি ফেরানোর জন্য আলোচনার ডাক দেওয়া হয়। তবে এখন পর্যন্ত নিউ ক্যালিডোনিয়ার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy