How the gunman of Indian National Museum in Kolkata was motivated to surrender dgtl
Indian National Museum
Gunman Attack in Indian National Museum: তাঁর হাতেই অস্ত্রাগারের চাবি! সশস্ত্র অক্ষয়কে শান্ত করতে কী ভাবে চক্রব্যূহ সাজায় পুলিশ
পকেটে অস্ত্রাগারের চাবি! অথচ জাদুঘর চত্বরে সেই চাবি নিয়ে হামলাকারী কোথায়, কোন অলিগলিতে ঘোরাফেরা করছেন, তার খোঁজ নেই পুলিশের কাছে।
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২২ ১৯:০০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
যাঁকে নিরস্ত্র করার চেষ্টা, তাঁর হাতেই খাস অস্ত্রাগারের চাবি! অথচ জাদুঘর চত্বরে সেই চাবি হাতে তিনি কোথায়, কোন অলিগলিতে ঘোরাফেরা করছেন, তার খোঁজ নেই পুলিশের কাছে।
০২১৫
শনিবার কলকাতা জাদুঘর চত্বর থেকে পর পর গুলির আওয়াজ আসার পর ভর সন্ধ্যায় এমন পরিস্থিতিতেই কাজ শুরু করেছিল কলকাতা পুলিশ। শুরু হয়েছিল অপরেশন মোজো।
০৩১৫
চালের একটু ভুলে অস্ত্রাগারের বহু অস্ত্র সচল হতে পারত। ভর সন্ধ্যায় ধর্মতলা ও পার্ক স্ট্রিট সংযোগস্থলের ভারতীয় জাদুঘর চত্বরের হয়ে উঠতে পারত আরও ভয়াবহ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়নি। কারণ জাদুঘর হামলার হোতা ওই ‘বিক্ষুব্ধ’ সিআইএসএফ জওয়ান অক্ষয় মিশ্রকে অত্যন্ত সাবধানে, নিপুণ সতর্কতায় সামলে নিয়েছে কলকাতা পুলিশ। যদিও সে কাজ সহজ ছিল না।
০৪১৫
এলোপাথাড়ি গুলি চালানো, সশস্ত্র এবং সম্ভবত মানসিক বিচার বিবেচনার বাঁধ ভেঙে যাওয়া ওই জওয়ানকে একরকম চক্রব্যূহ রচনা করেই ধীরে ধীরে গণ্ডিতে বাঁধে কলকাতা পুলিশ। শেষ পর্বে সেই গণ্ডিতে বাঁধা পড়ে যখন হামলাকারী একে-৪৭ হাতে সামনে এসে দাঁড়াচ্ছেন, তখনও তাঁর সামনে ঝুঁকি নিয়ে নিরস্ত্র হয়েই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে কলকাতা পুলিশের আধিকারিকদের। ভয় পাওয়ার উপায় ছিল না। ঘাবড়ে যাওয়ার অভিব্যক্তি প্রকাশ তো দূর অস্ত্।
০৫১৫
অবশ্য সচেতন ভাবেই নেওয়া হয়েছিল সেই সিদ্ধান্ত। তাতে কাজ হয়। তার পরই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন অক্ষয়। যদিও তার আগের দেড় ঘণ্টা ধরে এই প্রক্রিয়ার প্রতি মুহূর্তে চলেছে স্নায়ুযুদ্ধ। পুলিশ বনাম অক্ষয়ের। প্রতি ক্ষণে দিতে হয়েছে পরীক্ষা। উতরোতেও হয়েছে তাতে।
০৬১৫
অস্ত্রাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন অক্ষয়। তাঁর কাছে চাবি তো ছিলই। খবর ছিল, তিনি নিজেও ছিলেন অস্ত্রাগার যে বাড়িতে সেখানেই। তাই পুলিশ প্রথম থেকেই ছিল সাবধানী।
০৭১৫
প্রথমেই অক্ষয়ে সিআইএসএফের ব্যারাকের ছোট চৌহদ্দির মধ্যে আনার চেষ্টা করা হয়। এর পর অক্ষয়ের ফোন নম্বর জোগাড় করে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ।
০৮১৫
কয়েকবারের চেষ্টায় ফোন ধরেন অক্ষয়। তবে কথা শুনে পুলিশ বুঝতে পারে তিনি কিছুটা রেগে আছেন। অক্ষয়ের মনঃসংযোগ ঘোরানোর জন্য তাঁকে তাঁর বাড়ি, পরিবার, তাঁর সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন করা হতে থাকে।
০৯১৫
পুলিশকে তখনই অক্ষয় জানান, গত দু’মাস ধরে হেনস্তা করা হচ্ছে তাঁকে। পুলিশ তাঁকে আশ্বস্ত করে। জানায়, অক্ষয়ের সব কথা তারা শুনবে। তার পরও অবশ্য ওই জওয়ান তাঁর নিরাপদ আড়াল ছাড়েননি।
১০১৫
পুলিশ বুঝতে পারে অক্ষয় ভয় পাচ্ছেন, তিনি প্রকাশ্যে এলেই তাঁকে মেরে ফেলা হবে। এ ব্যাপারেও আশ্বস্ত করা হয় অক্ষয়কে। পুলিশ জানায়, অক্ষয় যদি আড়াল ছেড়ে সর্বসমক্ষে আসেন, তা হলে তাঁর সঙ্গে পুলিশ নিরস্ত্র হয়েই কথা বলবে।
১১১৫
কিন্তু সেই আশ্বাসে কাজ হয়নি। সন্ধে সাড়ে ৬টা থেকে শুরু হওয়া এই প্রক্রিয়ায় অবশেষে ইতি পড়তে চলেছে অনুমান করে পৌনে ৮টা নাগাদ সিআইএসএফের এক আধিকারিক নিরস্ত্র হয়ে ভিতরে প্রবেশ করেন। কিন্তু তার পরই যোগাযোগ বন্ধ করে দেন অক্ষয়।
১২১৫
পুলিশ হাল না ছেড়ে তার পরও কথা চালিয়ে যেতে থাকে। বার বার আশ্বস্ত করা হতে থাকে অক্ষয়কে। বোঝানোও হয় তাঁকে। অবশেষে দরজা খোলেন তিনি। হাতে একে-৪৭ বাইরে আসতে দেখা যায় সিআইএসএফের ওই জওয়ানকে।
১৩১৫
দৃশ্যটি ভয় ধরানোর মতো। কিন্তু পুলিশ এই স্নায়ুযুদ্ধেও উতরে যায়। অক্ষয়ের সঙ্গে তারা কথা বলা শুরু করে নিরস্ত্র হয়েই। আশ্বস্ত হয়ে অস্ত্র নামান অক্ষয়।
১৪১৫
এর পরই অক্ষয় পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণও করেন। তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় নিউ মার্কেট থানায়। পরে তাঁর পকেট থেকে অস্ত্রাগারের চাবিটিও উদ্ধার করে পুলিশ।
১৫১৫
তবে পুলিশের সঙ্গে ওই দেড় ঘণ্টার বোঝাপড়া সফল না হলে কী হত, দু’মাসের হেনস্থায় মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত অক্ষয় কি আরও বড় হামলা চালাতেন? জানার উপায় নেই। তবে আদালত অক্ষয়কে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজত দেওয়ায় আপাতত পুলিশি জেরাতেই বাকি প্রশ্নের উত্তর মিলবে বলে মনে করা হচ্ছে।