রুশ ‘ইগলা-এস’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রকৃতপক্ষে স্বল্পপাল্লার বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা (ভেরি শর্ট রেঞ্জ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম)। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে সেগুলির নতুন একটি ব্যাচ ভারতীয় ফৌজের কাছে পাঠিয়েছে মস্কো। এর সাহায্যে মাঝ-আকাশেই ধ্বংস করা যাবে ড্রোন এবং যুদ্ধকপ্টার। এককথায় ক্রেমলিনের অস্ত্রে বাড়তি সুরক্ষাকবচ তৈরি করতেও সক্ষম হবে সেনা।
‘ইগলা-এস’ ক্ষেপণাস্ত্রের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, সেটি ‘ম্যান পোর্টেবল’। অর্থাৎ, পদাতিক সেনারা সহজেই এই ক্ষেপণাস্ত্রকে এক জায়গা থেকে অন্যত্র বয়ে নিয়ে যেতে পারেন। এর জন্য কোনও গাড়ি বা ট্রাকের প্রয়োজন নেই। হামলার সময়ে লঞ্চার কাঁধে রেখে ‘ভূমি থেকে আকাশ’ (সারফেস টু এয়ার) ক্ষেপণাস্ত্রটিকে নির্ধারিত লক্ষ্যের দিকে ছুড়তে হয়।
সমর বিশেষজ্ঞদের দাবি, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে তৈরি হওয়া উত্তেজনার আবহে ঠিক এই ধরনেরই একটি ক্ষেপণাস্ত্রের প্রয়োজন ছিল ভারতের বিমানবাহিনীর। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তথ্য বলছে, ১৯৯০ সাল থেকে ‘ইগলা’ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে আসছে এ দেশের ফৌজ। তবে ক্ষেপণাস্ত্রটির নতুন যে ব্যাচটি বাহিনীর হাতে এসেছে তা পুরনো অস্ত্রগুলির নিরিখে অনেক বেশি উন্নত।
সূত্রের খবর, ‘ইগলা’-র নতুন ব্যাচ হাতে পাওয়ার পর জরুরি ভিত্তিতে আরও ৪৮টি লঞ্চার এবং ৯০টি ক্ষেপণাস্ত্র কেনার বরাত দিয়েছে ভারতীয় সেনা। স্বল্পপাল্লার লেজ়ার বিম আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থারও সন্ধান চালাচ্ছে ফৌজ। নয়াদিল্লির মূল মাথাব্যথা পাক বাহিনীর ড্রোন। যুদ্ধের সময়ে সেগুলিকে দ্রুত চিহ্নিত এবং ধ্বংস করা যে কতটা জরুরি তা ভালই জানেন এ দেশের সেনাকর্তারা।
মানববিহীন উড়ুক্কু যান চিহ্নিত করা থেকে শুরু করে সেগুলি ধ্বংস করার ক্ষমতা রয়েছে ওই অস্ত্রের। মার্ক-১-এর পাল্লা ৮ কিলোমিটার বলে জানা গিয়েছে। চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল অত্যাধুনিক লেজ়ার হাতিয়ারের সফল পরীক্ষা চালিয়েছিল ডিআরডিও। অস্ত্রটির পোশাকি নাম ‘এমকে-টু(এ) লেজ়ার’। এটি প্রকৃতপক্ষে একটি ‘ডিরেক্ট এনার্জি ওয়েপন সিস্টেম’ (ডিইডব্লিউ)। বর্তমান বিশ্বের হাতেগোনা কয়েকটি দেশের কাছে আছে এই হাতিয়ার।
এ ছাড়া রাশিয়ার ‘ভোরোনেজ়’ রেডার ব্যবস্থা কেনার ব্যাপারে আগেই আগ্রহ দেখিয়েছে ভারত। গত বছরের ডিসেম্বরে মস্কোয় গিয়ে এ ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। পুতিন ভারতে এলে রেডারটি কিনতে ৪০০ কোটি ডলারের প্রতিরক্ষা চুক্তি সেরে ফেলতে পারেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। ‘ভোরোনেজ়’-এর পাল্লা আনুমানিক আট হাজার কিলোমিটার। একসঙ্গে ৫০০-র বেশি বস্তুকে শনাক্ত করার ক্ষমতা রয়েছে এই রেডারের।
পশ্চিমি সংবাদমাধ্যমগুলির একাংশের দাবি, বিপদের সময়ে ‘ওরেশনিক’ আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) ভারতকে সরবরাহ করতে পারে মস্কো। গত বছরের ২১ নভেম্বর এটির সাহায্যে ইউক্রেনীয় শহর ডেনিপ্রোকে নিশানা করে রাশিয়া। শব্দের চেয়ে ১০ গুণ গতিতে (১০ ম্যাক) উড়ে গিয়ে লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারে ওরেশনিক। অর্থাৎ, অতি উন্নত ‘হাইপারসোনিক’ ক্ষেপণাস্ত্র এটি।
পাশাপাশি, পুতিন এ বার ভারতে এলে ‘৩এম২২ জ়ারকন’ হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে কথা বলতে পারেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, এর আদলেই ‘ব্রহ্মোস ২’ হাইপারসোনিক ক্রুজ় ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করবে নয়াদিল্লি। অর্থের অভাবে সেই প্রকল্প কিছুটা থমকে গিয়েছে। উল্লেখ্য, গত তিন বছর ধরে চলা ইউক্রেন যুদ্ধে এই হাতিয়ারটিও ব্যবহার করেছে রুশ ফৌজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy