Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Santiago Martin

দিনমজুর হিসাবে জীবন শুরু, দেশের বিতর্কিত ‘কিং’ কিনেছেন হাজার কোটির নির্বাচনী বন্ড!

নরেন্দ্র মোদীর জমানায় পরিচয় এবং অর্থের অঙ্ক গোপন রেখে রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দেওয়ার সুবিধা দেওয়া হয়েছিল নির্বাচনী বন্ডে। সেই ব্যবস্থার দায়িত্বে ছিল এসবিআই।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৪ ১৬:২২
Share: Save:
০১ ১৪
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই) গত মঙ্গলবার নির্বাচনী বন্ডের তথ্য জমা দিয়েছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে। বৃহস্পতিবারের মধ্যেই সেই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছে নির্বাচন সদন।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই) গত মঙ্গলবার নির্বাচনী বন্ডের তথ্য জমা দিয়েছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে। বৃহস্পতিবারের মধ্যেই সেই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছে নির্বাচন সদন।

০২ ১৪
সেই বন্ডের ক্রেতা এবং প্রাপক দলের লম্বা তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশও করে দেওয়া হয়েছে। তালিকা খতিয়ে দেখা যাচ্ছে, বন্ড কেনায় শীর্ষে রয়েছে বিতর্কিত লটারি ব্যবসায়ী মার্টিন সান্তিয়াগোর সংস্থা ‘ফিউচার গেমিং অ্যান্ড হোটেল সার্ভিসেস’। তারা কিনেছে মোট ১,৩৬৮ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড।

সেই বন্ডের ক্রেতা এবং প্রাপক দলের লম্বা তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশও করে দেওয়া হয়েছে। তালিকা খতিয়ে দেখা যাচ্ছে, বন্ড কেনায় শীর্ষে রয়েছে বিতর্কিত লটারি ব্যবসায়ী মার্টিন সান্তিয়াগোর সংস্থা ‘ফিউচার গেমিং অ্যান্ড হোটেল সার্ভিসেস’। তারা কিনেছে মোট ১,৩৬৮ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড।

০৩ ১৪
বন্ড কেনায় শীর্ষস্থান দখল করা লটারি ব্যবসায়ী সান্তিয়াগো নানা কারণে বার বার সংবাদ শিরোনামে থেকেছেন। ব্যবসায়ী মহলে তিনি ‘লটারি কিং’ নামে সমধিক পরিচিত।

বন্ড কেনায় শীর্ষস্থান দখল করা লটারি ব্যবসায়ী সান্তিয়াগো নানা কারণে বার বার সংবাদ শিরোনামে থেকেছেন। ব্যবসায়ী মহলে তিনি ‘লটারি কিং’ নামে সমধিক পরিচিত।

০৪ ১৪
ব্যবসায় তাঁর উত্থানের কাহিনিও চমকপ্রদ। মায়নমারের ইয়াঙ্গনে শ্রমিক দিনমজুর হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। ১৯৮৮ সালে ভারতে ফিরে এসে তামিলনাড়ুতে শুরু করেন লটারি ব্যবসা।

ব্যবসায় তাঁর উত্থানের কাহিনিও চমকপ্রদ। মায়নমারের ইয়াঙ্গনে শ্রমিক দিনমজুর হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। ১৯৮৮ সালে ভারতে ফিরে এসে তামিলনাড়ুতে শুরু করেন লটারি ব্যবসা।

০৫ ১৪
১৯৯১ সালে তৈরি করেন নিজের সংস্থা ফিউচার গেমিং অ্যান্ড হোটেল সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড। প্রথম দিকে ব্যবসা মূলত তামিলনাড়ুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন সান্তিয়াগো।

১৯৯১ সালে তৈরি করেন নিজের সংস্থা ফিউচার গেমিং অ্যান্ড হোটেল সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড। প্রথম দিকে ব্যবসা মূলত তামিলনাড়ুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন সান্তিয়াগো।

০৬ ১৪
২০০৩ সালে তামিলনাড়ুর তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী, অধুনা প্রয়াত জয়ললিতা রাজ্যে লটারি নিষিদ্ধ করেন। তখন পার্শ্ববর্তী দুই রাজ্য কর্নাটক এবং কেরলে ব্যবসা সরিয়ে নিয়ে যান সান্তিয়াগো।

২০০৩ সালে তামিলনাড়ুর তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী, অধুনা প্রয়াত জয়ললিতা রাজ্যে লটারি নিষিদ্ধ করেন। তখন পার্শ্ববর্তী দুই রাজ্য কর্নাটক এবং কেরলে ব্যবসা সরিয়ে নিয়ে যান সান্তিয়াগো।

০৭ ১৪
আরও পরে উত্তর-পূর্ব ভারত, এমনকি নেপাল এবং ভুটানে লটারি ব্যবসা শুরু করেন তিনি। বর্তমানে সান্তিয়াগোর সংস্থা আবাসন, বস্ত্র শিল্পেও অর্থ বিনিয়োগ করেছে। দক্ষিণ ভারতে ফিউচার গেমিংয়ের অধীনস্থ সংস্থা মার্টিন কর্নাটক লটারি ব্যবসা চালাচ্ছে। উত্তর ভারতে সান্তিয়াগো খুলেছেন মার্টিন সিকিম লটারি নামক সংস্থা।

আরও পরে উত্তর-পূর্ব ভারত, এমনকি নেপাল এবং ভুটানে লটারি ব্যবসা শুরু করেন তিনি। বর্তমানে সান্তিয়াগোর সংস্থা আবাসন, বস্ত্র শিল্পেও অর্থ বিনিয়োগ করেছে। দক্ষিণ ভারতে ফিউচার গেমিংয়ের অধীনস্থ সংস্থা মার্টিন কর্নাটক লটারি ব্যবসা চালাচ্ছে। উত্তর ভারতে সান্তিয়াগো খুলেছেন মার্টিন সিকিম লটারি নামক সংস্থা।

০৮ ১৪
নাগাল্যান্ড এবং সিকিমের বিখ্যাত ‘ডিয়ার লটারি’র একমাত্র ডিস্ট্রিবিউটার সান্তিয়াগোর সংস্থা। গোটা দেশে এক হাজার জনেরও বেশি কর্মচারী এই সংস্থায় কাজ করেন। পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের যে ১৩টি রাজ্যে লটারি আইনি ভাবে বৈধ, সেখানে ব্যবসা করে সান্তিয়াগোর সংস্থা।

নাগাল্যান্ড এবং সিকিমের বিখ্যাত ‘ডিয়ার লটারি’র একমাত্র ডিস্ট্রিবিউটার সান্তিয়াগোর সংস্থা। গোটা দেশে এক হাজার জনেরও বেশি কর্মচারী এই সংস্থায় কাজ করেন। পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের যে ১৩টি রাজ্যে লটারি আইনি ভাবে বৈধ, সেখানে ব্যবসা করে সান্তিয়াগোর সংস্থা।

০৯ ১৪
‘ফিউচার গেমিং অ্যান্ড হোটেল সার্ভিসেস’ নামক সংস্থার ওয়েবসাইটে দাবি করা হয়েছে, লাইবেরিয়াতেও লটারির ব্যবসা শুরু করেছেন সান্তিয়াগো। দেশের লটারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন অল ইন্ডিয়া ফেডারেশন অফ লটারি ট্রেড অ্যান্ড অ্যালায়েড ইন্ডাস্ট্রিজ়ের সভাপতি পদে রয়েছেন সান্তিয়াগো।

‘ফিউচার গেমিং অ্যান্ড হোটেল সার্ভিসেস’ নামক সংস্থার ওয়েবসাইটে দাবি করা হয়েছে, লাইবেরিয়াতেও লটারির ব্যবসা শুরু করেছেন সান্তিয়াগো। দেশের লটারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন অল ইন্ডিয়া ফেডারেশন অফ লটারি ট্রেড অ্যান্ড অ্যালায়েড ইন্ডাস্ট্রিজ়ের সভাপতি পদে রয়েছেন সান্তিয়াগো।

১০ ১৪
২০১৯ সাল থেকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি অর্থ তছরুপ প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ) আইন ভাঙার অভিযোগে সান্তিয়াগোর সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। সংস্থাটির কোয়েম্বাত্তূর এবং চেন্নাই দফতরে তল্লাশিও চালানো হয়। ইডির তরফে দাবি করা হয় যে, ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে অনৈতিক ভাবে ৪০০ কোটি টাকা বাজার থেকে তুলেছে সান্তিয়াগোর সংস্থা।

২০১৯ সাল থেকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি অর্থ তছরুপ প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ) আইন ভাঙার অভিযোগে সান্তিয়াগোর সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। সংস্থাটির কোয়েম্বাত্তূর এবং চেন্নাই দফতরে তল্লাশিও চালানো হয়। ইডির তরফে দাবি করা হয় যে, ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে অনৈতিক ভাবে ৪০০ কোটি টাকা বাজার থেকে তুলেছে সান্তিয়াগোর সংস্থা।

১১ ১৪
২০২২ সালে অর্থ তছরুপের মামলায় ইডি সংস্থাটির ৪০৯ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে। চলতি বছরেরই ৯ মার্চ ‘লটারির রাজা’ সান্তিয়াগোর জামাই অধব অর্জুনের বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। অতীতে সিকিম সরকারের লটারি বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগে সান্তিয়াগোর বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়েছিল সিবিআই এবং ইডি।

২০২২ সালে অর্থ তছরুপের মামলায় ইডি সংস্থাটির ৪০৯ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে। চলতি বছরেরই ৯ মার্চ ‘লটারির রাজা’ সান্তিয়াগোর জামাই অধব অর্জুনের বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। অতীতে সিকিম সরকারের লটারি বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগে সান্তিয়াগোর বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়েছিল সিবিআই এবং ইডি।

১২ ১৪
নরেন্দ্র মোদীর জমানায় পরিচয় এবং অর্থের অঙ্ক গোপন রেখে রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দেওয়ার সুবিধা দেওয়া হয়েছিল নির্বাচনী বন্ডে। সেই ব্যবস্থার দায়িত্বে ছিল এসবিআই।

নরেন্দ্র মোদীর জমানায় পরিচয় এবং অর্থের অঙ্ক গোপন রেখে রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দেওয়ার সুবিধা দেওয়া হয়েছিল নির্বাচনী বন্ডে। সেই ব্যবস্থার দায়িত্বে ছিল এসবিআই।

১৩ ১৪
কথা ছিল, কোনও ব্যক্তি বা কর্পোরেট সংস্থা রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দিতে চাইলে, স্টেট ব্যাঙ্কের কাছ থেকে নির্দিষ্ট অর্থের অঙ্কের বন্ড কিনে সংশ্লিষ্ট দলকে দেবেন। সেই অর্থ ভাঙিয়ে নেবে রাজনৈতিক দলগুলি। মূলত কালো টাকার লেনদেন রুখতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিল মোদী সরকার।

কথা ছিল, কোনও ব্যক্তি বা কর্পোরেট সংস্থা রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দিতে চাইলে, স্টেট ব্যাঙ্কের কাছ থেকে নির্দিষ্ট অর্থের অঙ্কের বন্ড কিনে সংশ্লিষ্ট দলকে দেবেন। সেই অর্থ ভাঙিয়ে নেবে রাজনৈতিক দলগুলি। মূলত কালো টাকার লেনদেন রুখতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিল মোদী সরকার।

১৪ ১৪
গত পাঁচ বছরে প্রায় ১৩০০টি সংস্থা মোট ১২ হাজার ১৫৫ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড কিনেছে। তার মধ্যে শুধু সান্তিয়াগোর সংস্থাই ১ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকার বন্ড কিনেছে। তবে সংস্থাগুলি কোন রাজনৈতিক দলগুলিকে অনুদান দিয়েছে, তা স্পষ্ট নয়।

গত পাঁচ বছরে প্রায় ১৩০০টি সংস্থা মোট ১২ হাজার ১৫৫ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড কিনেছে। তার মধ্যে শুধু সান্তিয়াগোর সংস্থাই ১ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকার বন্ড কিনেছে। তবে সংস্থাগুলি কোন রাজনৈতিক দলগুলিকে অনুদান দিয়েছে, তা স্পষ্ট নয়।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE