অজয় এখন জানেন এর পর কী হতে চলেছে। দেড় বছরের সম্পর্কে স্ত্রী-র সঙ্গে মধুচন্দ্রিমায় যাওয়া হয়নি তাঁর। কারণ, তাঁদের বিয়ে হয়েছিল লকডাউনের সময়। কিন্তু নিজের স্ত্রী-র প্রাক্তন স্বামীদের সঙ্গে কথা বলে অজয় জেনেছেন, প্রত্যেক বিয়েতেই মধুচন্দ্রিমা পর্ব সেরেছেন ‘কাজল’। তার পর প্রথমে আদর্শ গৃহবধূ হওয়ার নাটক এবং শেষে নিজের ব্যবসা শুরুর প্রস্তাব।
অজয়ের ক্ষেত্রে এই পর্ব শুরু হয়েছিল ২০২১ সালের শুরুতে। অজয়কে কাজল বলেছিলেন তিনি নিজের পায়ে দাঁড়াতে চান। বুটিকের ব্যবসা খুলতে চান। দিল্লিতে সেই বুটিকের মূলধনে বিনিয়োগ করতে নিজের ১৫ লক্ষ টাকার সঞ্চয়ের পুরোটাই স্ত্রীকে দিয়ে দিয়েছিলেন অজয়। দরকার ছিল আরও ১৭ লক্ষ টাকার। সেই টাকা পাঁচটি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে স্ত্রীকে দেন অজয়। সেই ব্যাঙ্কগুলি এখনও ঋণের টাকা চেয়ে ফোন করে অজয়কে।
দিল্লির বল্লভগড়ে বাড়ি ছিল অজয়ের। সেখানেই তাঁর অঙ্কের কোচিং সেন্টার। ‘কাজল’ অবশ্য বুটিকের জন্য একটু দূরের জায়গা বেছে নেন। দিল্লির লক্ষ্মীনগরে বুটিকের দোকান নেন অজয়ের স্ত্রী। কয়েক মাস পরে দোকানের উপরেই দু’কামরার একটি ফ্ল্যাটে উঠে আসেন তাঁরা দু’জনেই। সেখান থেকেই নিয়মিত ৪৫ মিনিট দূরে বল্লভগড়ের কোচিং সেন্টারে যাতায়াত করতেন অজয়। ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষার সময় বল্লভগড়ে পুরনো বাড়িতে থেকেও যেতেন অজয়। এমনই এক পরীক্ষার সময়ে দু’দিন পর লক্ষ্মীনগরের ফ্ল্যাটে এসে অজয় চমকে যান।
পুলিশকে অজয় জানিয়েছেন, স্ত্রীর বাবা-মায়ের সঙ্গে কখনও মুখোমুখি দেখা হয়নি তাঁর। বিয়ের আগে ফোনে কথা হয়েছে। ‘কাজল’ তাঁকে জানিয়েছিলেন, তাঁর বাবা-মা শহরের অন্য প্রান্তে থাকেন। তবে নিজের আত্মীয় বলে বিভিন্ন সময়ে ১১ জনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন অজয়ের। পুলিশের ধারণা, ১১ জনের এই দলটি ‘কাজল’ ওরফে ‘সোনাল’-এর ভাড়া করা।
অজয়ের সঙ্গে অঞ্জলির আলাপ করিয়ে দিয়েছিলেন ‘কাজল’ই। সম্ভবত সেটা ছিল ‘কাজল’-এর দ্বিতীয় ভুল। কারণ স্ত্রীর খোঁজে নেমে অজয় যখন একে একে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হওয়া ‘কাজল’-এর আত্মীয়দের খোঁজ করছেন তখনই অঞ্জলির খোঁজ পান অজয়। পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে জেনে নেন ‘কাজল’ সম্পর্কে না-জানা তথ্য। এর পরের তদন্ত-পর্ব এগোয় টানটান গোয়েন্দা গল্পের মতোই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy