Multiple mariages to Pakistan's visa denial to attend mother's funeral, know everything about controversial life of Adnan Sami dgtl
Adnan Sami
একের পর এক বিয়ে, বিচ্ছেদ! মায়ের শেষকৃত্যে যোগ দিতে দেয়নি পাকিস্তান, পিতৃভূমির বিরুদ্ধে বার বার সরব হয়েছেন গায়ক
ছোটবেলা থেকেই সঙ্গীতের প্রতি অনুরাগ ছিল আদনানের। পাঁচ বছর বয়স থেকে পিয়ানো বাজাতেন তিনি। ন’বছর বয়সে প্রথম সুর রচনা করেছিলেন। স্কুলের ছুটি পড়লে বিদেশ থেকে ভারতে চলে আসতেন আদনান।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫ ০৭:৪৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৫
ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে দেহের গঠন নিয়ে বার বার কটাক্ষের শিকার হয়েছেন। বিতর্কে জড়িয়েছেন ভারত এবং পাকিস্তানের নাগরিকত্ব নিয়েও। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বার বার সরব হয়েছেন বলি গায়ক আদনান সামি।
০২২৫
সম্প্রতি একটি জনপ্রিয় টক শোয়ে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আলোচনা করতে দেখা যায় আদনানকে। ২০১৫ সালে ভারতের নাগরিকত্ব পান তিনি। পাকিস্তানে পরিবার ছিল তাঁর। কিন্তু ভারতের নাগরিক হওয়ার পর তাঁকে আর পাকিস্তান যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। এমনটাই দাবি করেন গায়ক।
০৩২৫
২০২৪ সালের অক্টোবর মাসের ঘটনা। আদনানের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছিল সেই সময়। হঠাৎ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিলেন আদনানের মা। অথচ শারীরিক কোনও অসুস্থতা ছিল না তাঁর।
০৪২৫
আদনানের মা থাকতেন পাকিস্তানে। আদনান ভারতের নাগরিক। আপৎকালীন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় মায়ের শেষকৃত্যের জন্য পাকিস্তান যেতে চেয়েছিলেন গায়ক। আদনান জানান, ভারতের তরফে সমস্ত রকম সাহায্য এবং সহানুভূতি পেলেও পাকিস্তান মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল।
০৫২৫
আদনানের দাবি, মায়ের শেষকৃত্যের জন্য পাকিস্তান যেতে চান তা জানিয়ে পাকিস্তানের ভিসার জন্য আবেদন করেছিলেন তিনি। ভারত ছাড়পত্র দিলেও পাকিস্তান তাঁর আবেদন মঞ্জুর করেনি। শেষ পর্যন্ত অনলাইনে ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে শেষকৃত্যের সাক্ষী থেকেছিলেন তিনি।
০৬২৫
কানাঘুষো শোনা যেতে থাকে যে, অর্থলাভের জন্য পাকিস্তান ছেড়ে ভারতে আসেন আদনান। কিন্তু তা সত্য নয় বলে দাবি করেছেন খোদ গায়ক। কেন তিনি ভারতে বাস করছেন সেই কারণও দর্শান আদনান।
০৭২৫
আদনান বলেন, ‘‘আমি কখনওই অর্থাভাবে ভুগিনি। আমার পরিবার বরাবরই আর্থিক দিক দিয়ে সচ্ছল ছিল। বরং পাকিস্তানে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি ছেড়ে আমি ভারতে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এর নেপথ্যে রয়েছে আমার শিল্পীসত্তা।’’
০৮২৫
আদনান জানান, ভারতের শ্রোতাদের সঙ্গে তিনি খুব সহজেই মিশে যেতে পারেন। শিল্পী হিসাবে তিনি ভারতে ভাল ভাবে কেরিয়ার তৈরি করতে পারবেন, তার শিল্পীসত্তার পরিধি বিস্তার করতে পারবেন ভারতে, এই বিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন তিনি। এই ভাবনা থেকেই পাকিস্তান ছেড়ে ভারতে আসেন।
০৯২৫
১৯৭১ সালের অগস্ট মাসে লন্ডনে আদনানের জন্ম। তাঁর বাবা আরশাদ সামি খান ছিলেন পাশতুন সম্প্রদায়ভুক্ত। পাকিস্তানি বায়ুসেনার পাইলট ছিলেন আরশাদ। পরে ১৪টি দেশে পাকিস্তানের দূত হিসাবেও কাজ করেছিলেন তিনি।
১০২৫
আরশাদের পূর্বপুরুষেরা ছিলেন আফগানিস্তানের রাজবংশীয়। আফগান সেনার উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করেছিলেন তাঁরা। আরশাদের ঠাকুরদা আগা মেহফুজকে হত্যা করা হয়েছিল আফগানিস্তানে। তার পর তাঁদের পরিবার পাড়ি দিয়েছিল অবিভক্ত ভারতের পেশোয়ারে।
১১২৫
ইংল্যান্ডে বড় হয়ে ওঠা আদনানের। ব্রিটেনে স্কুলের পড়াশোনার পর উচ্চশিক্ষার জন্য লন্ডনের একটি কলেজে ভর্তি হন আদনান। আইন নিয়ে পড়াশোনা করে স্নাতক হন তিনি।
১২২৫
ছোটবেলা থেকেই সঙ্গীতের প্রতি অনুরাগ ছিল আদনানের। পাঁচ বছর বয়স থেকে পিয়ানো বাজাতেন তিনি। ন’বছর বয়সে প্রথম সুর রচনা করেছিলেন। স্কুলের ছুটি পড়লে বিদেশ থেকে ভারতে চলে আসতেন আদনান।
১৩২৫
ছুটির সময় পণ্ডিত শিবকুমার শর্মার কাছে সন্তুর বাজানো শিখেছিলেন আদনান। লন্ডনে আরডি বর্মনের কনসার্ট চলাকালীন স্বনামধন্যা গায়িকা আশা ভোঁসলের সঙ্গে কথা হয়েছিল আদনানের। আশাই নাকি তখন আদনানকে সঙ্গীত নিয়ে কেরিয়ার তৈরির পরামর্শ দিয়েছিলেন। তখন আদনানের বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর।
১৪২৫
কিশোর বয়স থেকেই স্টকহোমের একটি ধারাবাহিকে পিয়ানো বাজিয়ে শোনাতেন আদনান। ১৯৮৬ সালে তাঁর প্রথম সিঙ্গল ‘রান ফর হুজ় লাইফ’ মুক্তি পেয়েছিল ইংরেজি ভাষায়। পশ্চিম এশিয়ায় তুমুল জনপ্রিয় হয়েছিল তাঁর গান।
১৫২৫
১৯৯৫ সালে সিনেমার গানে পথ চলা শুরু আদনানের। পাকিস্তানি সিনেমা ‘সরগম’-এ তিনি ছিলেন সঙ্গীত পরিচালক এবং অভিনেতা। এটাই তাঁর অভিনীত একমাত্র সিনেমা। পরে অবশ্য ২০১৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সলমন খানের ছবি ‘বজরঙ্গি ভাইজান’-এ একটি গানের দৃশ্যে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল আদনানকে।
১৬২৫
পাকিস্তানে সর্বাধিক বিক্রি হওয়া গানের অ্যালবামের মধ্যে অন্যতম ‘সরগম’। যাঁর পরামর্শ মেনে গান নিয়ে কেরিয়ার গড়া, সেই গায়িকার সঙ্গেই অ্যালবাম তৈরি করেন আদনান। ২০০০ সালে আশার সঙ্গে আদনানের বিখ্যাত অ্যালবাম ‘কভি তো নজ়র মিলাও’ মুক্তি পায়।
১৭২৫
২০০১ সাল থেকে বলিউডে গান করার সুযোগ পেতে শুরু করেছিলেন আদনান। ‘অজনবি’, ‘চোর মচায়ে শোর’, ‘আওয়ারা পাগল দিওয়ানা’, ‘সাথিয়া’, ‘কোই মিল গয়া’, ‘জগার্স পার্ক’, ‘পেজ থ্রি’, ‘গরম মশালা’, ‘খোসলা কা ঘোসলা’, ‘ডার্লিং’, ‘ধামাল’-এর মতো সিনেমায় আদনান সামির গান শ্রোতাদের মনে দাগ কাটে। বলিউডে এখনও পর্যন্ত তাঁর শেষ কাজ ২০১৫ সালে ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ ছবিতে।
১৮২৫
হিন্দি ভাষার পাশাপাশি তেলুগু, তামিল এবং কন্নড় ভাষায় গান গেয়েছেন আদনান। ১৯৯৩ সালে পাকিস্তানি অভিনেত্রী জ়েবা বখতিয়ারকে বিয়ে করেন আদনান। তাঁদের একমাত্র পুত্রসন্তানের নাম আজান সামি খান।
১৯২৫
বিয়ের তিন বছর পর জ়েবার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায় আদনানের। ২০০১ সালের মার্চ মাস থেকে ‘ভিসিটর্স ভিসা’য় ভারতে থাকতে শুরু করেন গায়ক। সেই সময় দ্বিতীয় বার সংসার বাঁধেন তিনি।
২০২৫
২০০১ সালে দুবাইয়ের ব্যবসায়ী সাবা গালাদরিকে বিয়ে করেন আদনান। তাঁদের দু’জনেরই এটি ছিল দ্বিতীয় বিয়ে। প্রথম বিয়ে থেকে এক পুত্রসন্তান ছিল সাবার। কিন্তু তাঁদের দ্বিতীয় বিয়েও টেকেনি। বিয়ের দেড় বছরের মাথায় ভেঙে গিয়েছিল আদনান এবং সাবার সংসার।
২১২৫
২০০৬ সালের জুন মাসে আদনানের ওজন হয়ে গিয়েছিল ২৩০ কেজি। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, এই ওজন থাকলে তিনি মাত্র ছ’মাস বেঁচে থাকতে পারবেন। তার পর কঠোর শরীরচর্চা এবং ডায়েটিং শুরু করেছিলেন আদনান। ১৬ মাসে ১৬৭ কেজি ওজন কমিয়েছিলেন তিনি।
২২২৫
২০০৮ সালে মুম্বইয়ে গিয়ে তৃতীয় বার বিয়ে করেছিলেন আদনান। দ্বিতীয় স্ত্রী সাবাকেই আবার বিয়ে করেছিলেন তিনি। কিন্তু এই পুনর্বিবাহও এক বছরের বেশি স্থায়ী হয়নি। আবার বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায় আদনানের।
২৩২৫
২০১০ সালে আবার বিয়ে করেন আদনান। সেনার প্রাক্তন জেনারেল এবং আমলার কন্যা রোয়া সামি খানকে বিয়ে করেন গায়ক। ২০১৭ সালে কন্যা মেডিনার জন্ম দেন রোয়া।
২৪২৫
২০১৫ সালের জুন মাসে পাকিস্তানি পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছিলেন আদনান। সহজেই এ দেশের নাগরিকত্ব পেয়েছিলেন তিনি।
২৫২৫
‘অপারেশন সিঁদুর’-এর প্রশংসা করে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিলেন আদনান। এক অনুষ্ঠানে কানে ভারতের পতাকার নকশা করা ইয়ারফোন ব্যবহার করেছিলেন তিনি। সম্প্রতি আবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরব হয়ে আলোচনার মধ্যমণি হয়ে উঠেছেন বলি গায়ক।