New study claims one drop of camel’s tear can neutralize 26 snake venoms dgtl
Camel Tear
এক ফোঁটা চোখের জলে নিষ্ক্রিয় ২৬টি সাপের বিষ! বিশ্বের ‘সবচেয়ে দামি’ অশ্রুতে কতটা লাভ করবেন উটপালকেরা?
বিকানেরের ‘ন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার অন ক্যামেল’-এর (এনআরসিসি) বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি দাবি করেছেন, উটের কান্নায় আশ্চর্য ঔষধি গুণ রয়েছে। এর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৫ ১৬:০৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
চোখের জল দেখতে ছোট ছোট জলকণার মতো মনে হলেও তা বেশ অর্থবহ এবং গুরুত্বপূর্ণ। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে, মানুষ চোখের জল নিয়ে নানা কথা বলে আসছে। চোখের নকল জল বোঝাতে মানুষ ‘কুম্ভীরাশ্রু’ বা ‘কুমিরের কান্না’র মতো বাক্যাংশও ব্যবহার করে।
০২১৫
কিন্তু চোখের জল সবসময় দুঃখের বহিঃপ্রকাশ নয়। সব মিলিয়ে চোখের জল এক জন মানুষের অনুভূতির প্রতীক। তবে এমনও চোখের জল আছে, যা অত্যন্ত মূল্যবান। অন্তত তেমনটাই মনে করা হচ্ছে একটি গবেষণায়।
০৩১৫
কথা হচ্ছে উটের চোখের জল নিয়ে। উট পরিচিত ‘মরুভূমির জাহাজ’ হিসাবেও। কারণ, কাঠফাটা রোদ এবং শুষ্ক আবহাওয়ার মধ্যেও পিঠে মালপত্র চাপিয়ে দীর্ঘ পথ যাত্রা করতে পারে এই নিরীহ প্রাণী।
০৪১৫
বিকানেরের ‘ন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার অন ক্যামেল’-এর (এনআরসিসি) বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি দাবি করেছেন, উটের কান্নায় আশ্চর্য ঔষধি গুণ রয়েছে। এর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা নাকি অনেক। এমনকি, উটের চোখের জল থেকে প্রাপ্ত অ্যান্টিবডিগুলি সাপের বিষের সঙ্গে লড়াই করতেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
০৫১৫
এনআরসিসি-র ওই গবেষণা বলছে, ২৬টি সাপের বিষ নিষ্ক্রিয় করার ক্ষমতা রয়েছে উটের চোখের জলে। এই গবেষণা ফলপ্রসূ হলে সাপের দংশন সংক্রান্ত চিকিৎসায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আসতে পারে। এর ফলে উট পালনকারী কৃষকদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হতে পারে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
০৬১৫
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্প্রতি উটের উপর একাধিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন এনআরসিসি-র গবেষকেরা। তার মধ্যে অন্যতম বোড়া সাপের বিষ দিয়ে তৈরি টিকা উটের শরীরে প্রবেশ করানো।
০৭১৫
সেই পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সাপের বিষের কার্যকারিতা কমাতে দারুণ কাজ করছে উটের চোখের জল এবং সিরাম থেকে প্রাপ্ত অ্যান্টিবডি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সাপের কামড়ে রক্তক্ষরণ এবং বিষের কারণে রক্ত জমাট বাঁধার প্রভাবও উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে যাচ্ছে সেই অ্যান্টিবডি প্রয়োগের কারণে।
০৮১৫
সাপের কামড়ের প্রতিষেধক বা ‘অ্যান্টিভেনম’ মূলত ঘোড়ার ইমিউনোগ্লোবিউলিন থেকে তৈরি করা হয়। সেই ইমিউনোগ্লোবিউলিন উৎপাদনের খরচ যেমন বেশি, তেমনই জটিল তা সংগ্রহ করা।
০৯১৫
তবে এনআরসিসি বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, উট থেকে প্রাপ্ত প্রতিষেধক তৈরির খরচ কম। আবার সেটি সংগ্রহ করাও তুলনামূলক ভাবে কম জটিল। উটের তৈরি অ্যান্টিবডি মানুষের শরীরে প্রবেশ করালে অ্যালার্জি হওয়ার আশঙ্কা কম বলেও মত ওই বিশেষজ্ঞদের।
১০১৫
একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, ভারতে প্রতি বছর সাপের কামড়ে ৫৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ প্রতিবন্ধী হয়ে যান। আর তাই উটের থেকে প্রাপ্ত অ্যান্টিবডিগুলি কম খরচে এবং নিরাপদে আক্রান্তদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
১১১৫
গ্রামীণ এলাকার সাপের কামড় খাওয়া মানুষের সংখ্যা বেশি। সঠিক সময়ে চিকিৎসার অভাবে অনেকেরই মৃত্যু হয়। সেই সঙ্কট থেক মুক্তি পেতে উট থেকে পাওয়া অ্যান্টিবডিগুলি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বলেও দাবি করছেন অনেকে।
১২১৫
পাশাপাশি মনে করা হচ্ছে, ওই অ্যান্টিবডি তৈরির কাজ শুরু হলে বিকানের, জৈসলমের এবং জোধপুরের মতো অঞ্চলে উট প্রতিপালনকারী মানুষদের অবস্থা ফিরবে। পোষ্য উটের চোখের জল বিক্রি করে বাড়তি উপার্জন হবে তাঁদের।
১৩১৫
জানা গিয়েছে, পুরো বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই স্থানীয় উটপালকদের দ্বারস্থ হয়েছে এনআরসিসি। উটের থেকে যাতে দ্রুত এবং নিরাপদে অশ্রু ও রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা যায়, তার জন্য বিজ্ঞানীরা চেষ্টা চালাচ্ছেন।
১৪১৫
এর বিনিময়ে, উটপালকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলেও খবর। প্রতিবেদন অনুযায়ী, উটের অশ্রু থেকে পাওয়া অ্যান্টিবডি দিয়ে ওষুধ তৈরির পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে একাধিক বেসরকারি ওষুধ সংস্থা।
১৫১৫
মনে করা হচ্ছে, উটের চোখের জল বিক্রি করে রাজস্থানের কৃষকেরা প্রতি মাসে এক একটি উট থেকে ৫,০০০ থেকে ১০,০০০ টাকা অতিরিক্ত আয় করতে পারবেন। পাশাপাশি কমতে পারে সাপের কামড়ে মৃত্যুর সংখ্যাও।