Pakistan economic crisis can affect India in various fields dgtl
Pakistan Economic Crisis
দেনার দায়ে ক্রমশ ডুবছে পাকিস্তান! প্রতিবেশীর দুর্দিন কি ভারতের জন্য অশনিসঙ্কেত?
পাকিস্তানে গত কয়েক দিনে মূল্যবৃদ্ধির হার বেড়ে হয়েছে ৩১.৫ শতাংশ। কিন্তু তাদের এই দুরবস্থায় ভারতের খুশি হওয়ার তেমন কোনও কারণ নেই। বরং, পাক অর্থনীতি সুদৃঢ় থাকলেই ভারতের মঙ্গল।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২৩ ০৮:৪৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২১
পাকিস্তানে অর্থনৈতিক সঙ্কটের কথা এখন আর কারও অজানা নয়। দেশটি দীর্ঘ সময় ধরে অর্থনৈতিক টানাপড়েনে জর্জরিত। ইসলামাবাদের মাথায় চেপেছে ঋণের পাহাড়প্রমাণ বোঝা।
০২২১
আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডার (আইএমএফ) পাকিস্তানকে ঋণ দেওয়া বন্ধ করে দেওয়ার পর দেশের অর্থনৈতিক সঙ্কট আরও তীব্র হয়েছে। বিদেশ থেকে ঋণ না পেয়ে সরকার চালানো পাকিস্তানের সামনে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
০৩২১
পাকিস্তানে বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারও তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কে পড়ে আছে মাত্র তিন হাজার ২০০ কোটি ডলার বিদেশি মুদ্রা, যা সর্বকালের সর্বনিম্ন। এই পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা দিয়ে এক মাসের আমদানিও ঠিক মতো করা সম্ভব নয়।
০৪২১
বিদেশি মুদ্রার খরচে লাগাম টানতে পাকিস্তান তাই আমদানি প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। যার প্রভাব গিয়ে পড়েছে দেশের বাজারে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশ ছুঁয়েছে।
০৫২১
পাকিস্তানে গত কয়েক দিনে মূল্যবৃদ্ধির হার লাফিয়ে বেড়ে হয়েছে ৩১.৫ শতাংশ। ১৯৭৪ সালের পর থেকে যা সর্বোচ্চ। এর ফলে দেশে প্রয়োজনীয় পণ্যের জোগান অনেক কমে গিয়েছে।
০৬২১
সঙ্কটের কারণে পাকিস্তানে টাকার দাম এক ধাক্কায় অনেক কমে গিয়েছে। আমেরিকার এক ডলার এখন পাকিস্তানে ২৭৭ টাকার সমান। এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ভুগছেন দেশের সাধারণ মানুষ।
০৭২১
কিন্তু পড়শি পাকিস্তানের এই অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে ভারতের খুশি হওয়ার তেমন কোনও কারণ নেই। বরং, পাক অর্থনীতি সুদৃঢ় থাকলেই ভারতের মঙ্গল। তেমনটাই মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশ।
০৮২১
পাকিস্তানের এই সঙ্কটে ভারতের চিন্তার কারণ কী? নড়বড়ে পাকিস্তানের দ্বারা ভারতের কী কী ক্ষতি হতে পারে? বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, একাধিক ক্ষতির আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
০৯২১
পাকিস্তানের অর্থনীতি ভেঙে পড়লে দেশে প্রশাসনিক সঙ্কট তীব্রতর হবে। দেশ চালানো হয়ে উঠবে কার্যত অসম্ভব। এই পরিস্থিতিতে সেখানে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেতে পারে।
১০২১
পাকিস্তান বরাবরই ‘সন্ত্রাসবাদের ঘাঁটি’ হিসাবে পরিচিত। দেশের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপকে মদত দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। যদিও ইসলামাবাদ এই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে।
১১২১
অর্থনীতির কারণে পাকিস্তানে অরাজকতা দেখা দিলে তা সন্ত্রাসবাদীদের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়ে যাবে। ভারতের উপর তখন সরাসরি আক্রমণ থেকে সন্ত্রাসবাদী হামলার আশঙ্কা আরও জোরালো হতে পারে।
১২২১
পাকিস্তানে অর্থনৈতিক সঙ্কটের জেরে সেখান থেকে অনেকে ভারতে এসে আশ্রয় নিতে পারেন। এতে ভারতে উদ্বাস্তু সমস্যা দেখা দিতে পারে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও অবনতি হতে পারে।
১৩২১
পাকিস্তানের এক সমাজকর্মী সম্প্রতি এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, সে দেশে সরকারের বিরুদ্ধে যাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তাঁরা ভারতে চলে আসতে প্রস্তুত।
১৪২১
পাকিস্তানের সঙ্গে বরাবরই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে চলে চিন। আর চিনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আদায় কাঁচকলায়। তাই পাকিস্তানে সঙ্কটের আবহে সেখানে চিনের প্রভাব অনেকটাই বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
১৫২১
পাকিস্তানে প্রভাব বিস্তার করতে পারলে ভারতের বিরুদ্ধে এই সঙ্কটদীর্ণ দেশটিকে কাজে লাগানোর সুযোগ পাবে বেজিং। সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার তারা করবে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের। ভারতের জন্য যা হবে চিন্তার কারণ।
১৬২১
তবে পাকিস্তানে চিনের অনেক বিনিয়োগ রয়েছে। সম্প্রতি চিনের থেকে ৮১৯২ কোটি টাকার অর্থসাহায্যও পেয়েছে ইসলামাবাদ। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তানে সরকার পড়ে যাক, তা চিনও চাইবে না।
১৭২১
পাকিস্তানের হাতে পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। যা ভারতের মাথাব্যথার অন্যতম কারণ হয়ে উঠতে পারে। দেশের শাসনব্যবস্থা বিপর্যস্ত হলে এই পরমাণু অস্ত্রের মুখে শুধু ভারত নয়, পড়তে হতে পারে সারা বিশ্বকেই।
১৮২১
পাকিস্তানে আশ্রয় নেওয়া সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি পরমাণু অস্ত্রকে হাতিয়ার করে বিশ্বব্যাপী ধ্বংসলীলায় মেতে উঠতে পারে। তেমন হলে ভারতই হবে তাঁদের প্রথম লক্ষ্য।
১৯২১
পাকিস্তানে অর্থনীতি বিপর্যস্ত হলেও সে দেশের সেনার অবস্থা কিন্তু নড়বড় নয়। বরং পাক সেনা বিপুল ধনসম্পদের মালিক। দেশে সরকার পড়ে গেলে সেনাশাসন জারি হতে পারে। তা-ও ভারতের জন্য সুখের কথা নয়।
২০২১
সাধারণ মানুষের স্বার্থের কথা না ভেবে পাক সেনা পরমাণু অস্ত্র-সহ বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র অন্য দেশ এবং সংগঠনের কাছে মোটা টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিতে পারে। সারা বিশ্বের নিরাপত্তা তখন প্রশ্নের মুখে পড়বে।
২১২১
পাকিস্তানের অর্থনীতি পুরোপুরি ভেঙে পড়লে সে দেশের সঙ্গে ভারতের লেনদেন, বাণিজ্য ব্যাহত হবে। ভারত থেকে যে দ্রব্য পাকিস্তানে রফতানি করা হয়, তা থমকে যাবে। এতেও পরোক্ষে ভারতের ক্ষতি।