Advertisement
০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
Pakistan Lobbying for Trump

ট্রাম্পকে ‘বশ’ করতে ৪৪ কোটি ‘ঘুষ’! ভারতকে টেক্কা দিতে মার্কিন মুলুকে লবিবাজিতে দু’হাতে ডলার ওড়াল ইসলামাবাদ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থন নিজেদের দিকে ফিরিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক ভাবে লবিং করেছে পাকিস্তান। এর জন্য জলের মতো অর্থ ব্যয় করতেও পিছপা হননি ইসলামাবাদের ‘সিপাহ্‌সালার’ আসিম মুনির।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৫ ১২:২৪
Share: Save:
০১ ১৮
Pakistan spent 50 lakh dollars which is thrice of India for lobbying for Donald Trump

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘হাত করতে’ ঘুষ দিয়েছে পাকিস্তান! যুক্তরাষ্ট্রের ‘বন্ধুত্ব’ কিনতে চরম দারিদ্র্যের মধ্যেও জলের মতো টাকা খরচে পিছপা হয়নি ইসলামাবাদ। শুধু তা-ই নয়, এ ব্যাপারে ভারতকে টেক্কা দিতে পেরেছে পশ্চিমের প্রতিবেশী। নয়াদিল্লির চেয়ে অন্তত তিন গুণ বেশি অর্থ ব্যয় করেছে তারা। আমেরিকার জনপ্রিয় গণমাধ্যম ‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইম্‌স’-এর এ-হেন বিস্ফোরক প্রতিবেদনে দুনিয়া জুড়ে পড়ে গিয়েছে শোরগোল।

০২ ১৮
Pakistan spent 50 lakh dollars which is thrice of India for lobbying for Donald Trump

চলতি বছরের ১৩ নভেম্বর ‘কী ভাবে পাকিস্তানের ব্যয়বহুল লগ্নি ট্রাম্পের মন জয় এবং মার্কিন বিদেশনীতিকে পাল্টাতে সাহায্য করেছে’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের ওই সংবাদমাধ্যম। সেখানে হোয়াইট হাউসের লবিংয়ের জন্য ইসলামাবাদের দু’হাতে টাকা খরচের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ রয়েছে। ‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইম্‌স’-এর দাবি, বর্ষীয়ান প্রেসিডেন্টের কাছাকাছি পৌঁছোতে ইতিমধ্যেই ৫০ লক্ষ ডলার ব্যয় করে ফেলেছে নয়াদিল্লির পশ্চিমের প্রতিবেশী। ভারতীয় মুদ্রায় যা ৪৪ কোটিরও বেশি।

০৩ ১৮
Pakistan spent 50 lakh dollars which is thrice of India for lobbying for Donald Trump

আমেরিকায় লবিং আইনগত এবং সাংবিধানিক ভাবে স্বীকৃত। এটি এমন একটি পদ্ধতি যেখানে বিশেষ কিছু গোষ্ঠী তাদের স্বার্থরক্ষার জন্য সরকারি নীতিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। এই প্রক্রিয়ায় পেশাদার আইনজীবী বা লবিস্টদের নিয়োগ করা হয়। তাঁরাই শীর্ষ পদে থাকা আমলা, বিভিন্ন দফতরের সচিব বা মার্কিন পার্লামেন্ট ‘কংগ্রেস’-এর সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এর পর যুক্তির জাল সাজিয়ে কোনও আইন বা নীতি বদলের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে রাজি করান তাঁদের।

০৪ ১৮
Pakistan spent 50 lakh dollars which is thrice of India for lobbying for Donald Trump

ঠিক এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে লবিং নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। কিন্তু তার পরেও আমেরিকায় স্বমহিমায় রয়ে গিয়েছেন প্রভাবশালী লবিস্টরা। এই সারকথা বুঝতে পাকিস্তানের খুব বেশি দেরি হয়নি। আর তাই এ বছরের এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যে ওয়াশিংটনের লবিং সংস্থাগুলির হাতে মোটা টাকা গুঁজে দেয় ইসলামাবাদ। সর্বাধিক ‘প্রসাদ’ প্রাপকদের তালিকায় নাম রয়েছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাবেক ব্যবসায়িক অংশীদার এবং দেহরক্ষী, বলছে ‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইম্‌স’।

০৫ ১৮
Pakistan spent 50 lakh dollars which is thrice of India for lobbying for Donald Trump

সূত্রের খবর, হোয়াইট হাউসে লবিংয়ের জন্য সিডেন ল’ এলএলপি এবং অর্কিড অ্যাডভাইজ়ার-সহ মোট ছ’টি সংস্থার পকেট থোক থোক ডলারে ভরিয়ে দেয় পাকিস্তান। ঠিক তার পরেই ভারতের ব্যাপারে বিদেশনীতিতে বড় বদল আনেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। দাবি করে বসেন, তাঁর মধ্যস্থতাতেই নাকি থেমেছে ‘অপারেশন সিঁদুর’কে কেন্দ্র করে চলা নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদ ‘যুদ্ধ’। সেই ‘মিথ্যা প্রচার’ আটকাতে ব্যর্থ হয় কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার।

০৬ ১৮
Pakistan spent 50 lakh dollars which is thrice of India for lobbying for Donald Trump

‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইম্‌স’-এর সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন নিয়ে ইতিমধ্যেই গণমাধ্যমে মুখ খুলেছেন দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের উইলসন সেন্টারের সাবেক ডিরেক্টর মাইকেল কুগেলম্যান। তাঁর কথায়, ‘‘পাকিস্তানের লবিং প্রচেষ্টার সংযোগকারী বিন্দুগুলিকে বুঝতে হবে। মে মাসে জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে নিরীহ পর্যটকদের উপর হামলা চালায় ইসলামাবাদের মদতপুষ্ট জঙ্গিরা। এর পর ভারতের প্রত্যাঘাত একরকম নিশ্চিত ছিল। ফলে ট্রাম্পের কাছে পৌঁছোতে একরকম মরিয়া হয়ে ওঠেন সেখানকার সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির।’’

০৭ ১৮
Pakistan spent 50 lakh dollars which is thrice of India for lobbying for Donald Trump

পাক লবিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাড়া দেওয়ার নেপথ্যে অবশ্য একাধিক কারণ খুঁজে পেয়েছেন বিশ্লেষকেরা। প্রথমত, ভারতের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতির ‘কৃতিত্ব’ হিসাবে ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার দাবি তুলে প্রচার চালিয়েছে ইসলামাবাদ। দ্বিতীয়ত, তাদের সঙ্গে একটি খনিচুক্তি করতে পেরেছে আমেরিকা। এর মাধ্যমে বালোচিস্তানের বিরল খনিজ হস্তগত করার ব্যাপারে আশাবাদী বর্ষীয়ান মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

০৮ ১৮
Pakistan spent 50 lakh dollars which is thrice of India for lobbying for Donald Trump

ইসলামাবাদের হয়ে ট্রাম্প প্রশাসনে লবিংয়ের জন্য আরও একটি সুবিধা পাচ্ছে আমেরিকা। সেটা হল, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কৃষি ও কৃষিজাত পণ্যের বাজার পুরোপুরি খুলে দিয়েছে পাকিস্তান। বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে ভারতের চেয়ে কম শুল্ক দেবে পশ্চিমের প্রতিবেশী দেশ। গত এপ্রিলে পাক সামগ্রীর উপর ২৯ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে দেন ট্রাম্প। কিন্তু লবিংয়ের পর সেপ্টেম্বর নাগাদ সেটা ১৯ শতাংশে নেমে আসে। নয়াদিল্লির ক্ষেত্রে তা এখনও ৫০ শতাংশ।

০৯ ১৮
Pakistan spent 50 lakh dollars which is thrice of India for lobbying for Donald Trump

এ বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় বারের জন্য শপথ নেওয়ার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পাকিস্তানের উপর যে খুব সদয় ছিলেন, এমনটা নয়। এই পরিস্থিতিতে ‘হাওয়া ভাল নয়’ বুঝতে পেরে লবিংয়ের জন্য গত ৮ অগস্ট সিডেল ল’-র সঙ্গে ১০ লক্ষ ডলারের চুক্তি করে ইসলামাবাদ। হোয়াইট হাউসে লবিংয়ের সাব-কন্ট্রাক্ট জ্যাভলিন অ্যাডভাইজ়ার্স নামের আর একটি সংস্থাকে দেয় তারা। পাকিস্তানের দিক থেকে সেটাই ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধির প্রথম পদক্ষেপ।

১০ ১৮
Pakistan spent 50 lakh dollars which is thrice of India for lobbying for Donald Trump

ট্রাম্প প্রশাসনে লবিংয়ের জন্য জ্যাভলিনের সঙ্গে ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয় চুক্তি করে পাক সরকার। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে পহেলগাঁও হামলার দু’দিনের মাথায় চূড়ান্ত হয় ওই সমঝোতা। গোটা বিষয়টির দেখভালে ছিলেন ফিল্ড মার্শাল মুনির। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফকে ঢুকতে দেননি তিনি। মার্কিন সংস্থাটি অবশ্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ইসলামাবাদের ‘সিপাহ্‌সালার’কে দিয়েছিল।

১১ ১৮
Pakistan spent 50 lakh dollars which is thrice of India for lobbying for Donald Trump

‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইম্‌স’ জানিয়েছে, লবিংয়ের চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন মুনির। সেখানে জ্যাভলিনের প্রতিষ্ঠাতা তথা ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসাবে পরিচিত জর্জ সোরিয়ালের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। এ ছাড়া প্রেসিডেন্টের সাবেক দেহরক্ষী কিথ শিলারের সঙ্গেও আলাদা করে কথা হয় তাঁর। একসময়ে ওয়াশিংটনের ওভাল অফিসে ডিরেক্টর ছিলেন কিথ।

১২ ১৮
Pakistan spent 50 lakh dollars which is thrice of India for lobbying for Donald Trump

গত ১৮ জুন হোয়াইট হাউসে গিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ সারেন মুনির। দু’জনের মধ্যে নানা বিষয়ে দীর্ঘ ক্ষণ আলোচনাও হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে একের পর এক ভারতবিরোধী পদক্ষেপ নিতে থাকে যুক্তরাষ্ট্র। এ দেশের পণ্যের উপর শুল্ক বৃদ্ধি করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। শুধু তা-ই নয়, নয়াদিল্লির অর্থনীতিকে ‘মৃত’ বলে বিষোদ্গার করতেও শোনা গিয়েছে তাঁকে।

১৩ ১৮
Pakistan spent 50 lakh dollars which is thrice of India for lobbying for Donald Trump

জুন থেকে শুরু করে নভেম্বরের মধ্যে অন্তত তিন বার আমেরিকা সফর করেন মুনির। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে দাঁড়িয়ে ভারতকে পরমাণু হামলার হুমকি পর্যন্ত দিয়েছেন তিনি। ওই সময় চুপ করে ছিল মার্কিন প্রশাসন। ফলে নয়াদিল্লির সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্কে চিড় ধরে। কিন্তু তার পরেও ট্রাম্পের ‘পাক প্রেমে’ কোনও ভাটা পড়েনি। উল্টে ইসলামীয় সন্ত্রাসবাদ রুখতে ইসলামাবাদকে ‘গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার’ হিসাবে ঘোষণা করেছে তাঁর সরকার।

১৪ ১৮
Pakistan spent 50 lakh dollars which is thrice of India for lobbying for Donald Trump

২০১৭-’১৯ সাল পর্যন্ত প্রথম দফায় প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ট্রাম্প ও পাকিস্তানের সম্পর্ক ছিল আদায়-কাঁচকলায়। ওই সময়ে ইসলামাবাদকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া পুরোপুরি বন্ধ করে দেন তিনি। তাঁর উত্তরসূরি জো বাইডেন ফোনে পর্যন্ত পাক প্রধানমন্ত্রী বা সেখানকার কোনও রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকার করেন। এতে আন্তর্জাতিক মহলে যথেষ্ট কোণঠাসা হয়ে পড়ে পশ্চিমের প্রতিবেশী দেশ।

১৫ ১৮
Pakistan spent 50 lakh dollars which is thrice of India for lobbying for Donald Trump

আমেরিকার ঘরোয়া রাজনীতিতে ট্রাম্পের বিরোধীদের অবশ্য অভিযোগ, লবিংয়ের জেরে ইসলামাবাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধির দাম ভাল রকমই নিয়েছেন বর্ষীয়ান প্রেসিডেন্ট। তাঁর ক্রিপ্টো মুদ্রার পারিবারিক ব্যবসা রয়েছে। পাকিস্তানের বাজারে তা নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব আসিম মুনিরের কাঁধে দিয়েছেন তিনি। রাতারাতি ট্রাম্পের চোখে ‘প্রিয়’ ফিল্ড মার্শাল হয়ে উঠেছেন তিনি।

১৬ ১৮
Pakistan spent 50 lakh dollars which is thrice of India for lobbying for Donald Trump

কুগেলম্যান জানিয়েছেন, জাতীয় স্বার্থে হোয়াইট হাউসে লবিংয়ের প্রবণতা রয়েছে ভারতেরও। তবে সেটা কখনওই পাকিস্তানের মতো বেপরোয়া নয়। নয়াদিল্লির পক্ষে কখনওই মার্কিন কৃষিপণ্যকে ঘরোয়া বাজারে ঢুকতে দেওয়া সম্ভব নয়। আর তাই যুক্তরাষ্ট্রের চাপ সত্ত্বেও এখনও কোনও বাণিজ্যচুক্তিতে সম্মত হয়নি মোদী সরকার।

১৭ ১৮
Pakistan spent 50 lakh dollars which is thrice of India for lobbying for Donald Trump

বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, আগামী দিনে পাকিস্তানকে লবিংয়ের বড় মূল্য চোকাতে হতে পারে। দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমের বালোচিস্তান প্রদেশটির খনিজ সম্পদের উপর লোভ রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। কিন্তু সেখানে বিপুল লগ্নি রয়েছে চিনের। পাশাপাশি, দিন দিন সেখানে জোরালো হচ্ছে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন। ফলে সব মিলিয়ে প্রবল অস্থিরতা সহ্য করতে হতে পারে ইসলামাবাদকে।

১৮ ১৮
Pakistan spent 50 lakh dollars which is thrice of India for lobbying for Donald Trump

দ্বিতীয়ত, প্রায় দেউলিয়ার দরজায় দাঁড়িয়ে আছে পাক অর্থনীতি। এই পরিস্থিতিতে লবিংয়ের জন্য বিপুল টাকা খরচ করে ফেলেছেন ফিল্ড মার্শাল মুনির। গোদের উপর বিষফোড়ার মতো ঘরোয়া বাজার পুরোপুরি আমেরিকার কাছে তিনি বিক্রি করে ফেলেছেন বললে অত্যুক্তি হবে না। ফলে আগামী দিনে ইসলামাবাদের আর্থিক দুরবস্থা আরও বৃদ্ধি পাওয়ার প্রবল আশঙ্কা থাকছে, বলছেন বিশ্লেষকেরা।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy