Pictures of attack sites of Operation Sindoor in Pakistan and POK dgtl
Operation Sindoor
ধুলোয় মিশেছে জঙ্গিঘাঁটি, আকাশে আগুনের গোলা, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ লাল পাকিস্তান! প্রকাশ্যে ধ্বংসের ছবি
‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর পাকিস্তানে ধ্বংসের ছবি এবং ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে। সেই ছবিগুলিতে দেখা গিয়েছে, কী ভাবে পাকিস্তানের একাধিক জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় সেনা।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০২৫ ১২:৩৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ১৪ দিনের মাথায় পাকিস্তানে প্রত্যাঘাত হেনেছে ভারত। অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গিঘাঁটিগুলিকে নিশানা করে সেগুলি গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় সেনা।
০২১৭
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিবৃতিতে লেখা হয়েছে যে, পাকিস্তানে এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ৯টি জায়গায় জঙ্গি পরিকাঠামো লক্ষ্য করে ‘প্রিসিশন স্ট্রাইক’ করা হয়েছে। যে সব জায়গায় বসে ভারতে সন্ত্রাসবাদী হানার পরিকল্পনা হয়েছিল এবং নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, সেখানেই ভারত আঘাত হেনেছে বলে বিবৃতিতে দাবি করেছে মন্ত্রক।
০৩১৭
পাকিস্তানও এই হামলার কথা স্বীকার করেছে। ইসলামাবাদের দাবি, ভারতের হামলায় আট জনের মৃত্যু হয়েছে।
০৪১৭
পাকিস্তানের ইন্টার সার্ভিস পাবলিক রিলেশনসের ডিরেক্টর জেনারেল সাংবাদিক বৈঠক করে এই সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করেছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাত ১টা নাগাদ পাকিস্তানের মোট ছ’টি জায়গায় ২৪টি হামলা চালিয়েছে ভারতীয় বাহিনী। সাধারণ নাগরিকদের উপর হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
০৫১৭
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানার জবাব পাকিস্তানকে ভারত নিজের পছন্দের সময়ে এবং পছন্দের স্থানে দেবে বলে নয়াদিল্লির তরফে আগেই বিবৃতি দেওয়া হয়েছিল। মঙ্গলবার মধ্যরাতের অভিযানের পর মনে হচ্ছে, সেই উত্তর দিয়েছে ভারত।
০৬১৭
‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর পাকিস্তানে ধ্বংসের ছবি এবং ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে। সেই ছবিগুলিতে দেখা গিয়েছে, কী ভাবে পাকিস্তানের একাধিক ইমারত গুঁড়়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় সেনা। দাবি, ওই ইমারতগুলি জঙ্গিদের ঘাঁটি ছিল। সেগুলিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হত।
০৭১৭
ছবিগুলিতে দেখা গিয়েছে ভারতীয় সেনার হামলায় বিধ্বস্ত একাধিক ভবন। ইমারতগুলির স্থানে স্থানে বিস্ফোরণের চিহ্ন। দেওয়াল এবং মেঝেয় বড় বড় গর্ত। ছাদের বিভিন্ন অংশ ভেঙে পড়েছে। দরজা এবং জানলাও টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছে।
০৮১৭
এই আবহে একটি ভিডিয়োও প্রকাশ্যে এসেছে সমাজমাধ্যমে। সেই ভিডিয়োয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরে একটি ইমারতের সঙ্গিন অবস্থা ধরা পড়েছে। দাবি করা হয়েছে, ইমারতটি বহওয়ালপুরে অবস্থিত ‘মারকাজ় শুভান আল্লা’।
০৯১৭
জইশ-ই-মহম্মদ (জেইএম) জঙ্গিদের অন্যতম ঘাঁটি এবং প্রশিক্ষণ শিবির বলেও পরিচিত ‘মারকাজ় শুভান আল্লা’। যদিও সেই সব ছবি এবং ভিডিয়োগুলির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম।
১০১৭
কয়েকটি ছবিতে ধরা পড়েছে হামলার মুহূর্তও। কী ভাবে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্রে ধ্বংস হচ্ছে জঙ্গিদের ঘাঁটি সেই দৃশ্যই দেখা গিয়েছে ছবিগুলিতে।
১১১৭
পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের বহাওয়ালপুরের পাশাপাশি পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মুজফ্ফরাবাদেও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে আঘাত হেনেছে ভারত। সেই সব ছবিও প্রকাশ্যে এসেছে। ছবিগুলিতে ধরা পড়েছে হামলার পর পাক প্রশাসনের তৎপরতাও।
১২১৭
উল্লেখ্য, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ সাংবাদিক বৈঠক করে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে আলোচনা করে ভারতীয় সেনা। বৈঠকে ছিলেন ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী। এ ছাড়াও ছিলেন দুই মহিলা আধিকারিক— উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংহ এবং কর্নেল সোফিয়া কুরেশি।
১৩১৭
বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী বলেন, ‘‘মুম্বই হামলার পর পহেলগাঁওয়ের ঘটনা সবচেয়ে বড় জঙ্গি হামলা। জঙ্গি সংগঠন টিআরএফ হামলার দায় স্বীকার করেছে। জইশ, লশকরেরা এই ধরনের ছোট সংগঠনের মাধ্যমে কাজ করে চলেছে। তার বিরুদ্ধেই ভারতের এই জবাব।’’
১৪১৭
বিক্রম আরও বলেন, ‘‘পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদে মদত দেয়। জেনেশুনে সেই দেশে লুকিয়ে রাখা হয় সন্ত্রাসবাদীদের। পহেলগাঁওয়ের হামলার পর দেশের নানা প্রান্তে ক্ষোভ দেখা দিয়েছিল। স্বাভাবিক ভাবেই তার পর ভারত সরকার কিছু পদক্ষেপ করে। কিন্তু তার পরেও পহেলগাঁওয়ের ঘটনার জন্য ন্যায়বিচার আবশ্যক ছিল। ওই ঘটনার পরেও পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি। উল্টে ঘটনার সঙ্গে যোগাযোগ অস্বীকার করছে। আমাদের কাছে খবর ছিল, ভারতের বিরুদ্ধে আগামী দিনেও হামলা হতে পারে। তাই এই প্রত্যাঘাত আবশ্যক ছিল।’’
১৫১৭
কর্নেল সোফিয়া, উইং কমান্ডার ব্যোমিকারা জানান কী ভাবে পাকিস্তানে হামলা চালানো হয়েছে। কোথায় কোথায় কেন হামলা চালানো হয়েছে, তার তালিকাও দেন ব্যোমিকা, সোফিয়ারা। তাঁদের তালিকা অনুযায়ী, প্রথম নিশানা ছিল শুভান আল্লা মসজিদ, সেখানে জঙ্গিঘাঁটি এবং প্রশিক্ষণকেন্দ্র রয়েছে। বিলাল মসজিদে ছিল জইশ-ই-মহম্মদের প্রশিক্ষণকেন্দ্র। কোটলিতে যে মসজিদে হামলা হয়েছে, তা লশকরের ঘাঁটি। এই ঘাঁটি পুঞ্চে সক্রিয়। এগুলি পাক অধিকৃত কাশ্মীরে রয়েছে।
১৬১৭
ব্যোমিকা, সোফিয়ারা জানান, পাকিস্তানের ভিতরে সিয়ালকোটের সার্জাল ক্যাম্পে হামলা চালানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক সীমা থেকে তা ছ’কিলোমিটার দূরে। এ ছাড়া হামলা হয়েছে মেহমুনা জোয়া ক্যাম্পে। সেখানে হিজবুলের ক্যাম্প ছিল। পঠানকোটে এখান থেকেই হামলা চালানো হয়। মুরিদকের মারকাজ় তৈবায় হামলা চালিয়েছে ভারতীয় বাহিনী। ২৬/১১ মুম্বই হামলার জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল এখান থেকেই। অজমল কসাবও উঠে আসেন এখান থেকেই।
১৭১৭
তবে ভারতীয় সেনা স্পষ্ট করেছে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ পাক সেনাঘাঁটি বা সাধারণ কোনও নাগরিককে নিশানা করা হয়নি। ব্যোমিকা, সোফিয়ারা বলেন, ‘‘এখনও কোনও সাধারণ নাগরিকের ক্ষতি করা হয়নি। নির্দিষ্ট ভাবে কিছু বিল্ডিংয়ে হামলা হয়েছে। সেনাঘাঁটিতে কোনও হামলা হয়নি। প্রযুক্তির সাহায্যে ওই ভবনগুলি ভাঙা হয়েছে।’’