মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ শুরু হয় প্রতিবাদী কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ অভিযান। পঞ্জাবের ফতেগড় সাহিব থেকে অভিযান শুরু হয়। মিছিলের অগ্রভাগে ছিল কালো ত্রিপলে ঢাকা অজস্র ট্র্যাক্টর। মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন পঞ্জাবের সাঙরুর কৃষকেরা। প্রতিবাদী কৃষকদের নেতৃত্বে দুই কৃষক নেতা সারওয়ান সিংহ পান্ধের এবং জগজিৎ সিংহ দাল্লেওয়াল।
দুপুর সাড়ে ১২টা। পাঁচ হাজার কৃষক, দেড় হাজারেরও বেশি ট্র্যাক্টর এবং ৫০০ গাড়ি নিয়ে দিল্লি অভিমুখে রওনা হওয়ার পর প্রথম বাধার মুখে পড়ে অম্বালার কাছে। ওই অঞ্চল রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় পঞ্জাব-হরিয়ানা সীমানায়। পঞ্জাব এবং হরিয়ানার মধ্যবর্তী শম্ভু সীমানায় প্রতিবাদী কৃষকদের রুখতে কাঁদানে গ্যাসের সেল ব্যবহার করে পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনী।
দুপুর আড়াইটে। পঞ্জাব থেকে ব্যারিকেড ভেঙে হরিয়ানায় ঢোকার চেষ্টা করেন কৃষকেরা। পাথর ছোড়ারও অভিযোগ ওঠে তাঁদের বিরুদ্ধে। আন্দোলন ছত্রভঙ্গ করতে ড্রোনের মাধ্যমে প্রতিবাদী কৃষকদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাসের সেল ছোড়ে পুলিশ। সিমেন্টের ব্যারিকেডের মাধ্যমে কৃষকদের আটকানোর চেষ্টা করে পুলিশ। প্রতিবাদী কৃষকদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামানও ব্যবহার করা হয়।
প্রথমে প্রতিবাদী কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ অভিযানে শামিল না হলেও ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের নেতা রাকেশ টিকায়েত মঙ্গলবার দুপুরে জানান, তিনি প্রতিবাদী কৃষকদের পাশে রয়েছেন। সরকার সমস্যা তৈরি করলে তিনি যে প্রতিবাদী কৃষকদের পাশে দাঁড়াবেন, তা-ও স্পষ্ট করে দেন রাকেশ। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন দুই কৃষকনেতা রাকেশ টিকায়েত এবং গুরনাম সিংহ চারুনি।
শুধু পঞ্জাব থেকেই ১৫০০টি ট্র্যাক্টর, ৫০০ গাড়ি নিয়ে দিল্লি অভিযানে এসেছেন কৃষকেরা। ওই গাড়িতেই প্রায় ছ’মাসের খাবার নিয়ে এসেছেন তাঁরা। ফলে আলোচনা শুরু হয়েছে, তবে কি আরও একটি দীর্ঘ সময়ের কৃষক আন্দোলন দেখতে চলেছে দিল্লি-সহ গোটা দেশ? ২০২০ সালে দিল্লির সীমানায় যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন কৃষকেরা, সেই আন্দোলন ১৩ মাস ধরে চলেছিল।
পঞ্জাবের গুরদাসপুরের কৃষক হরভজন সিংহ সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে বলেন, “সুচ থেকে হাতুড়ি, সব কিছু ট্রলিতে করে নিয়ে যাচ্ছি আমরা। ব্যারিকেড ভাঙার যন্ত্রও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমরা ছ’মাসের জন্য খাবার নিয়ে রওনা দিয়েছি। আমাদের সঙ্গে প্রচুর জ্বালানিও রয়েছে।” আরও এক কৃষক জানিয়েছেন, “এ বার যত দিন না পর্যন্ত আমাদের দাবিদাওয়া মেনে না নেওয়া হবে, তত দিন আন্দোলন থেকে পিছু হটব না।”
ফের সংবাদ শিরোনামে দিল্লির গাজিপুর, সিঙ্ঘু এবং টিকরি সীমানা। আন্দোলন এখনও দিল্লিতে না পৌঁছলেও রাজধানীতে ঢোকার প্রায় সমস্ত প্রবেশপথকেই দুর্গের চেহারা দিয়েছে পুলিশ। অধিকাংশ গাড়িকে বিকল্প পথে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। তীব্র যানজট দিল্লির গাজিপুর এবং চিল্লা সীমানায়। দিল্লি থেকে হরিয়ানার মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী ৪৮ নম্বর জাতীয় সড়কেও দেখা যায় যানজট।
মোতায়েন করা হয়েছে ৫০ কোম্পানির বেশি আধাসেনা। থাকছে দিল্লি পুলিশও। বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, কাঁদানে গ্যাস লঞ্চার, হেলমেট, ব্যাটন এবং অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত থাকবে তারা। দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, কংক্রিটের ব্যারিকেড তো থাকছেই, তার পাশাপাশি থাকছে লোহার ব্যারিকেড, জার্সি ব্যারিয়ার্স, বিশাল বিশাল শিপিং কন্টেনার, হাইড্রা ক্রেন, জলকামান, বাস এবং অন্যান্য গাড়ি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy