গত শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় পরিষদে এই অর্থনৈতিক প্রকল্পের অনুমোদন মেলে বলে সংবাদ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। দেশের বাজেট বরাদ্দ থেকে ২ লক্ষ ৫২ কোটি টাকা বা ৩১ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি ওন (দক্ষিণ কোরিয়ার মুদ্রা) ধার্য করা হয়েছে বিশেষ এই সহায়তা প্রকল্পে। প্রথম ধাপে ২১ জুলাই থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় আট সপ্তাহ ধরে চলবে এটি।
দারিদ্র-পীড়িত পরিবার ও একক ভাবে সন্তানদের দায়িত্ব পালন করেন এমন বাবা-মাকে ৩ লক্ষ ওন বা ২২০ ডলার করে অর্থসাহায্য করা হবে। জীবনযাত্রা নির্বাহ করার জন্য যে সব পরিবার সরকারি ভাতার উপর নির্ভর করে থাকে, তারা ৪ লক্ষ ওন বা ২৯০ ডলার করে সাহায্য পাবে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গ্রামীণ এলাকায় বসবাসকারীরা অতিরিক্ত ৫০ হাজার ওন পাবেন।
আঞ্চলিক ভারসাম্য এবং জনসংখ্যা ধরে রাখার জন্য সোলের মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে বসবাসকারী নাগরিকেরা (গিওংগি প্রদেশ এবং ইনচিওন-সহ) অতিরিক্ত ৩০ হাজার ওন পাবেন। দক্ষিণ কোরিয়ার এমন কয়েকটি গ্রাম ও জনপদ রয়েছে, যেখানে জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। সেই সমস্যার সম্মুখীন গ্রামের মধ্যে ৮৪টি মনোনীত গ্রামকে এবং মৎস্যজীবীদের গ্রামগুলিকে অতিরিক্ত ৫০ হাজার ওন দেওয়া হবে।
সেপ্টেম্বরের ২১ তারিখে প্রথম দফার সাহায্য শেষ হবে। ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দ্বিতীয় দফার অর্থ প্রদানের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সর্বনিম্ন আয়ের ৯০ শতাংশ কোরীয় ১ লক্ষ ওন (৭৩ ডলার) পাবেন। জাতীয় স্বাস্থ্য বিমা প্রিমিয়ামের উপর ভিত্তি করে এঁদের যোগ্যতা নির্ধারণ করা হবে এবং সেপ্টেম্বরে বিস্তারিত ঘোষণা করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
গত বছর (২০২৪ সালে) ৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক (মার্শাল) আইন জারি করেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইওল। এর ফলে দেশ জুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়। ইওলের যুক্তি ছিল, উত্তর কোরিয়ার একনায়ক কিম জং উনের মদতে ক্ষমতাদখলের ছক কষছেন বিরোধীরা। সেই ঘটনার পর দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধিও টালমাটাল অবস্থার মধ্যে পড়ে।
উচ্চ সুদের হার এবং লাগামহীন মুদ্রাস্ফীতি সাধারণ মানুষের প্রকৃত আয় কমিয়ে দিয়েছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে খুচরো বিক্রি এবং রেস্তরাঁয় মানুষের ব্যয়ের ওপর, যা অসংখ্য ব্যবসাকে বন্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে। দেশীয় ছোট ছোট ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলিকে বাঁচিয়ে রাখতে ও অর্থনীতির পালে হাওয়া জোগাতে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে। জনগণকে নগদ সহায়তা, ডিজিটাল ভাউচার এবং এআই খাতে বিনিয়োগের মতো কর্মসূচি চালু করেছে পীত সাগরের এই দেশটি।
মনে করা হচ্ছে, প্রান্তিক মানুষের হাতে সরাসরি কিছু টাকা পৌঁছে দেওয়ার পর গ্রহীতা এই টাকা ভোগ্যপণ্যের ওপর সরাসরি খরচ করে জিনিসপত্রের চাহিদা বাড়াবেন। দেশে যে শুধু জিনিসপত্রের চাহিদা বাড়বে তা-ই নয়, জনগণ যে টাকা খরচ করবেন তাতে ব্যবসা চাঙ্গা হবে। সরকারের আয় বাড়বে। তাতে দেশের পরিকাঠামোর উন্নতি ঘটবে। পরিকাঠামোর উন্নতি হলে বিনিয়োগও খানিকটা বাড়তে পারে। তাতে দেশের অর্থনীতি তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসে অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন ত্বরান্বিত করবে বলে মত অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy