শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি বিতর্কে অনামিকার নাম প্রকাশ্যে আসে গত বছর ডিসেম্বরে। বাংলার মানুষ তাঁকে চিনেছিলেন ববিতার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে। সেই ববিতা, যাঁর জন্য খুলে গিয়েছিল বাংলার শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মুখোশ। রাজ্যের তৎকালীন মন্ত্রীর কন্যার চাকরি পাওয়াকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে খবরের শিরোনামে চলে এসেছিলেন যিনি।
কী ভুল? গত ২৬ ডিসেম্বর সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ছবিতে তারই উত্তর ছিল। ছবিটি ববিতার আবেদনপত্রের। এসএসসির কাছে ওই আবেদনপত্রটি জমা দিয়েছিলেন ববিতা। তাতে দেখা যাচ্ছে, স্নাতকস্তরে ৮০০ নম্বরের মধ্যে ৪৪০ নম্বর পেয়েছেন ববিতা। অর্থাৎ, শতকরা হিসাবে ৫৫ শতাংশ। অথচ আবেদনপত্রে স্নাতক স্তরের প্রাপ্ত নম্বরের শতকরা হিসাবে লেখা রয়েছে ৬০ শতাংশ বা তার বেশি নম্বর পাওয়ার কথা।
খুব বেশি দিন আগের কথা নয়। এসএসসির স্কুলশিক্ষিকা পদে এই একটি চাকরিই প্রকাশ্যে এনেছিল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি। যা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন এসএসসি উত্তীর্ণ ববিতা। অনামিকারা তখন টেট পরীক্ষার্থীদের আন্দোলনে সামিল। কলকাতায় সব সময় যেতে না পারলেও সমর্থন করছেন। আর দেখছেন শিলিগুড়ির ববিতার লড়াই, যিনি নিজের অধিকারের দাবিতে রুখে দাঁড়িয়েছেন রাজ্যের তৎকালীন মন্ত্রীর মেয়ের বিরুদ্ধে।
ববিতার অভিযোগ ছিল, স্কুলশিক্ষিকার চাকরি পাওয়ার যোগ্য প্রার্থী হিসাবে ২০ নম্বরের র্যাঙ্কিংয়ে নাম রয়েছে তাঁর। কিন্তু অঙ্কিতার নাম তালিকার অনেক পিছন থেকে এনে এক নম্বরে বসিয়ে দেওয়ায় তিনি যোগ্যদের তালিকা থেকে ছিটকে গিয়েছেন। এই দাবি নিয়েই লড়াইয়ের শুরু যা ধীরে ধীরে প্রকাশ্যে আনে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির জালকে।
তত দিনে বেআইনি ভাবে পাওয়া অঙ্কিতার চাকরির বেতনের সমস্ত অর্থ ববিতার হাতে তুলে দিয়েছে আদালত। ১২ অগস্ট সেই অর্থ হাতে পেয়ে ববিতা জানিয়েছিলেন অঙ্কিতার জন্য খারাপ লাগছে। পরে তাঁর চাকরিতেও অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় ববিতা জানিয়েছিলেন, তাঁর লড়াই ছিল দুর্নীতির বিরুদ্ধে। তাই তাঁর নিয়োগের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে তিনি নিজেই আদালতে যাবেন।
তবে ববিতার যুক্তি শেষ পর্যন্ত হালে পানি পায়নি। শিলিগুড়ির এসএসসি পরীক্ষার্থী অনামিক হাই কোর্টে একটি মামলা করে দাবি করেন, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর কন্যা অঙ্কিতার পাওয়া যে স্কুলশিক্ষিকার চাকরি আদালত ববিতাকে দিয়েছিল, সেটি আদতে তাঁরই প্রাপ্য। আদালত পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে যেন তাঁর প্রতি সুবিচার করে। ববিতার চাকরি বাতিল করে যেন তাঁকে ওই চাকরি দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy