Vijay Benedict, The playback singer who gave Bollywood many hit songs primarily in Mithun Chakraborty's movie dgtl
Bollywood
Bollywood Singer: ‘ডিস্কো ডান্সার’-সহ বহু হিট গান, মাফিয়া-সংঘর্ষ! হারিয়েই গেল সেই ‘মিঠুনের কণ্ঠস্বর’
আশির দশকের গোড়ায় নেপথ্য গায়ক হিসাবে বিজয়ের উত্থানের পিছনে বাপ্পি লাহিড়ির অবদান অস্বীকার যায় না।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১২:৪৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে প্রায় কোনও মিলই নেই। তবে আশির দশকে বলিউডি ডিস্কো গানে তাঁকে মিঠুনের থেকে আলাদা করা কঠিন ছিল। সে সময় তিনিই হয়ে উঠেছিলেন ‘মিঠুনের কণ্ঠস্বর’, ঠিক যেমন বাংলায় এক সময় ছিলেন উত্তমকুমার এবং হেমন্ত মুখোপাধ্যায়।
ছবি: সংগৃহীত।
০২১৬
বাপ্পি লাহিড়ির সুরে একের পর এক ডিস্কো গানে এক সময় অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছিলেন বিজয় বেনেডিক্ট। তবে প্রায় এক দশক বলিউডে কাটিয়ে আচমকাই হিন্দি ছবির জগৎ থেকে গায়েব হয়ে যান তিনি। কেন?
ছবি: সংগৃহীত।
০৩১৬
আশির দশকের গোড়ায় নেপথ্য গায়ক হিসাবে বিজয়ের উত্থানের পিছনে বাপ্পি লাহিড়ির অবদান অস্বীকার যায় না। একাধিক সাক্ষাৎকারে সে কথা স্বীকারও করেছেন বিজয়। মঙ্গলবার বাপ্পি লাহিড়ির প্রয়াণের পর ফের মুখ খুলেছেন তিনি। জানিয়েছেন, কী ভাবে বলিউডে তাঁর পেশাদার জীবন শুরুর নেপথ্যে ছিলেন বাপ্পি লাহিড়ি।
ছবি: সংগৃহীত।
০৪১৬
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিজয় বলেছেন, ‘‘বাপ্পি’দা আমাকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন। তাঁর প্রতি চিরকৃতজ্ঞ থাকব। বাপ্পি’দাকে কোনও দিন ভুলব না। দারুণ সাহসী মানুষ। আমার মতো বহু উঠতি গায়ককে সুযোগ করে দিয়েছিলেন।’’
ছবি: সংগৃহীত।
০৫১৬
ঠিকই বলেছেন বিজয়। বস্তুত, বাপ্পি’দার ডাকেই নেপথ্য গায়ক হওয়ার জন্য বলিউডে পা রেখেছিলেন। আশির দশকে লন্ডনে পশ্চিমী ধ্রুপদী সঙ্গীত নিয়ে পড়াশোনা করছিলেন বিজয়। সেখানেই তাঁর সঙ্গে বাপ্পি লাহিড়ির আলাপ।
ছবি: সংগৃহীত।
০৬১৬
লন্ডনের একটি কনসার্টে বিজয়ের কণ্ঠে ধ্রুপদী সঙ্গীত শুনে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন বাপ্পি লাহিড়ি। তাঁকে বলিউডে গিয়ে নেপথ্য গায়ক হওয়ার পরামর্শও দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, বলিউডে তাঁর জন্য ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে।
ছবি: সংগৃহীত।
০৭১৬
বাপ্পির সঙ্গে সাক্ষাতের কয়েক বছর পর লন্ডন ছেড়ে বলিউডে পা রেখেছিলেন বিজয়। সে সময় ‘ডিস্কো ডান্সার’ ছবির কাজে ব্যস্ত পরিচালক বি সুভাষ। ডিস্কো নাচিয়ে হিসাবে মিঠুনকে কেন্দ্র করে ওই ছবিতে সুরের দায়িত্বে ছিলেন বাপ্পি লাহিড়ি।
ছবি: সংগৃহীত।
০৮১৬
‘ডিস্কো ডান্সার’ ছবির ‘টাইটেল সং’য়ের জন্য কিশোর কুমারের নামই ভেবে রেখেছিলেন পরিচালক। তবে বিজয়ের কণ্ঠে সে গান রেকর্ড করানোর ইচ্ছে ছিল বাপ্পি লাহিড়ির। মুম্বই আসামাত্রই বি সুভাষের কাছে বিজয়কে নিয়ে গিয়েছিলেন বাপ্পি।
ছবি: সংগৃহীত।
০৯১৬
‘আই অ্যাম আ ডিস্কো ডান্সার’ গানটি বিজয়ের কণ্ঠে কেমন শোনাবে? এক বার শুনেই দেখুন না! পরিচালককে অনুরোধ করেছিলেন বিজয়ের বাপ্পি’দা। তাতে নিমরাজি হয়ে যান বি সুভাষ। জানিয়েছিলেন, ছবিতে কিশোরের কণ্ঠেই সে গান থাকবে। তবে তার আগে বিজয়ের কণ্ঠে গানের ট্রায়াল হয়ে যাক! সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যান বাপ্পি।
ছবি: সংগৃহীত।
১০১৬
বিজয়ের কণ্ঠে ‘আই অ্যাম আ ডিস্কো ডান্সার’ গানটি শুনে এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন পরিচালক যে সঙ্গে সঙ্গে মতবদল করেন। ১৯৮২ সালে বড়পর্দায় বিজয়ের গানের তালে তালেই ডিস্কো নেচেছিলেন মিঠুন। ছবির একমাত্র গানেই বলিউডে জায়গা পাকা করে নিয়েছিলেন বিজয়।
ছবি: সংগৃহীত।
১১১৬
‘ডিস্কো ডান্সার’ ছবির প্রতিটি গান আজও অনেকের মনে রয়ে গিয়েছে। পার্বতী খানের কণ্ঠে ‘জিমি জিমি জিমি’, বাপ্পি লাহিড়ির সঙ্গে উষা উত্থুপের ডুয়েট ‘কোই ইহা আহা নাচে নাচে’-র পাশাপাশি বাপ্পির একলা গান ‘ইয়াদ আ রহা হ্যায়’— কয়েক দশক পরেও চিরসবুজ। মিঠুনের কেরিয়ারে সবচেয়ে বড় হিট ছবিতে একটি গানেই বলিউডে জায়গা পাকা করে নিয়েছিলেন বিজয়।
ছবি: সংগৃহীত।
১২১৬
বাপ্পি’দার প্রতি চিরকৃতজ্ঞ বিজয় বলেন, ‘‘তখনকার দিনে বলিউডে নতুনদের জায়গা করে নেওয়াটা বেশ কষ্টসাধ্য ছিল। তবে বাপ্পি’দা আমাকে উৎসাহ দিয়েছিলেন। ‘ডিস্কো ডান্সার’ ছবির জন্য পরিচালক বি সুভাষের কাছে তাবড় তাবড় গায়ক ছিলেন। তবে বাপ্পি’দাই আমাকে টাইটেল সং গাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন।’’
ছবি: সংগৃহীত।
১৩১৬
বিজয় জানিয়েছেন, মুম্বইয়ের এচইএমভি স্টুডিয়োতে ‘আই অ্যাম আ ডিস্কো ডান্সার’ গানটি রেকর্ড করা হয়েছিল। সঙ্গে ছিলেন প্রায় ১০০ জন পার্শ্বগায়ক-গায়িকা। ওই গানের মিঠুনেরও উৎসাহ কাজে এসেছিল বলে জানিয়েছেন বিজয়। তাঁর কথায়, ‘‘রেকর্ডিংয়ের সময় চারপাশে এত লোকজন দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। গানের সময় নিজের সেরাটা দিতে হবে। তখন মিঠুন’দা বলেন, ‘দারুণ শক্তিশালী গান। দম নিয়ে গলা ছেড়ে গাও!’ সে সব কথায় মনে জোর পেয়েছিলাম। সকাল থেকে রেকর্ডিং শুরু হয়েছিল। সন্ধ্যা গড়িয়ে তা শেষ হতে হতে রাত হয়ে যায়।’’
ছবি: সংগৃহীত।
১৪১৬
‘ডিস্কো ডান্সার’ ছবির সাফল্যের পর বিজয়ের হাতে কাজের পর কাজ আসতে শুরু করে। বি সুভাষের পরিচালনায় বাপ্পির সুরে বিজয়ের গান। তাতে নায়ক ‘মিঠুনের কণ্ঠস্বর’ তিনি। ‘কসম পয়দা করনেওয়ালে কি’, ‘আন্ধি-তুফান’, ‘মা কসম’ বা ‘কম্যান্ডো’— সব জনপ্রিয় হয়েছিল। বিজয় বলেন, ‘‘বাপ্পি’দা জানান যে আমার জন্যই অন্তত ২০টি ছবির কাজ পেয়েছেন তিনি। এর পর দেশেবিদেশে একসঙ্গে বহু কনসার্ট করেছি আমরা। সব দারুণ হিট!’’
ছবি: সংগৃহীত।
১৫১৬
বাপ্পি লাহিড়ি ছাড়াও অনু মালিক, নাদিম-শ্রাবণ বা লক্ষ্মীকান্ত-প্যায়ারেলালের মতো সুরকারদের সঙ্গে কাজ করেছেন বিজয়। তবে জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও ১৯৯১ সালে তিনি বলিউড থেকে বিদায় নেন। ২০১৭ সালে অসীম অহলুওয়ালিয়ার ছবি ‘ড্যাডি’-তে ‘ডান্স ডান্স’ গানেও শোনা গিয়েছে তাঁকে। তবে বলিউডে স্থায়ী হননি বিজয়।
ছবি: সংগৃহীত।
১৬১৬
শোনা গিয়েছিল, ১৯৯১ সালে জার্মানির একটি ঘটনা় থামিয়ে দিয়েছিল বিজয়ের বলিউড কেরিয়ার। ওই বছর মাফিয়াদের সঙ্গে সংঘর্ষের বলি হয়েছিলেন বিজয়ের ভাই। তার পর থেকে সব কিছু ওলটপালট হয়ে যায়। বলিউডকে বিদায় জানিয়ে আজকাল গসপেল গায়ক হিসাবে দিন কাটাচ্ছেন বছর সত্তরের বিজয়!