আওয়ারগ্লাস ফিগার। স্কিনি জিন্স, শ্যাওলা রঙের স্লিভলেস টপ। গমের দানার মতো গায়ের রং। পিয়ার্স করা নাভি। হাতে মাউথপিস নিয়ে সাইকেডেলিক আলোর নীচে দুলতে দুলতে গাইছে মেয়েটি। ‘ধুনকি ধুনকি ধুনকি লাগে…।’ বাড়ি পুরনো দিল্লির গীতা কলোনির ‘চাওল’-এ। শহর কলকাতার ‘রাতোঁ কি রানি’দের মধ্যে এক জন। এক সন্ধেতেই তিন শিফটের ‘কাজ’। ধর্মতলা, নিউ টাউন আর ভিআইপি রোডের তিন-তিনটে পানশালার লিড সিংগার অনু। বছর ছাব্বিশের এই গায়িকার নিজের হন্ডা ব্রিয়ো গাড়ি, কসবায় তিন কামরার ফ্ল্যাট, এক জন ড্রাইভার কাম বাউন্সার কাম ম্যানেজার কাম স্বামী (লাইনের ভাষায় এই স্বামীরা হল ‘অ্যাটাচ্ড বাথ’)। এখন থার্ড শিফটের ‘কাজ’ চলছে। পুরো স্লগ ওভার। দু’হাজার স্কোয়ার ফিটের এই এলিট পানশালায় নানা কিসিমের শ্রোতা। সামনের সোফায় মাঝবয়সি সাদা চুল ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ী। শর্মাজির নিজের কথায়, ‘কুড়ি বছর ধরে রোজ সন্ধেবেলায় আসি গান শুনতে। পুরনো দিনের গান ভাল মতো গাইতে পারলে, বকশিশ দিই। বারোটায় পানশালা বন্ধ, ঘড়িতে বারোটা বাজতে ঠিক পাঁচ মিনিট। টি-টোয়েন্টির পাওয়ার প্লে। এত ক্ষণ অল্টারনেটিভ মেডিসিনের ডাক্তারবাবুর পছন্দের ধুনকি-গান ছেড়ে শর্মাজির জন্য শেষ গানটা গাইতে শুরু করে অনু, ‘ক্যা করু রাম, মুঝে বুড্ঢা মিল গ্যয়া…।’ ডাক্তারবাবু এত ক্ষণ ফ্লোর বয়ের হাত দিয়ে পঞ্চাশ টাকার নোট পাঠাচ্ছিলেন। স্লগ ওভারে ইয়র্কারের দাম জানে গীতা কলোনির মেয়েটি। তাই শর্মাজির জন্য গান ধরতেই ‘বুড্ঢা’র টেবিল থেকে একশো-র নোট উড়তে শুরু করল। অল্টারনেটিভ মেডিসিন আর ট্রান্সপোর্ট-এর মধ্যে এই যে নিখুঁত ব্যালান্স, এটারই তুখড় খেলোয়াড় অনু এবং অনুদের মতো আরও অনেকেই। এদের কারও বাড়ি গুড়গাঁও তো কারও গড়িয়া। কেউ মুম্বই তো কারও মালদা। এই অনু, তনু, মধু, প্রিয়ঙ্কা (নাম পরিবর্তিত), এরা পানশালায় আসে মূলত বাড়ির লোকেদের চাপে। কেউ কেউ ভাল লাইফস্টাইল পাওয়ার আশায়। এমনই এক জন বছর পঁয়ত্রিশের ঐন্দ্রিলা। আশাকণ্ঠী। ক্যানিং-এ উচ্চ মাধ্যমিক দিয়েই গান শিখতে কলকাতায় আসা। আকাশবাণীতে বি-গ্রেড। বছরে দু-তিন বার রেডিয়োতে গান গাইলে কয়েকশো টাকা। জলসাও অনিয়মিত। কিন্তু কলকাতা আর গানের মায়া কাটিয়ে ক্যানিং ফিরে যাওয়ার কথা এখন ভাবনারও বাইরে। বরং ক্যানিং-এর বাড়িই প্রতি মাসে তার পাঠানো মানি অর্ডারের দিকে তাকিয়ে।
বার-ললনাদের মধ্যেকার যে সমাজ, তা কিন্তু শ্রেণিহীন নয়, ক্লাস ডিফারেন্স আছে। এবং পুরো মাত্রায়। এক শ্রেণির বার সিংগার, যারা মূলত অবাঙালি, গান গাইতে আসে সচ্ছল পরিবার থেকে। এদের প্রথম টার্গেট দুবাই অথবা বাহরিন। বেশ কয়েক বছর পশ্চিম এশিয়ার পানশালায় নাচ-গান করার পর থিতু হতে এরা চলে আসে মুম্বই, কলকাতা, গোয়া কিংবা অন্যান্য শহরে। একটা বয়স পর্যন্ত, নাবিকদের মতো প্রায় সব শহরেই এদের ‘বয়ফ্রেন্ড’ থেকে যায়। যদিও ইথার দূরত্ব খানিকটা কমে হোয়াট্সঅ্যাপ বা স্কাইপ-এ। এই বৃত্তে এরা এলিট। মেন্টেনেন্স খরচ বাকিদের চাইতে অনেক বেশি। তা সে চুল স্ট্রেট করানোই হোক বা ওয়ার্ডরোব সাজানো। প্রোলেতারিয়েত গায়িকারা এই শ্রেণির সিংগারদের জন্য একটু ঈর্ষা মিশ্রিত একটি শব্দবন্ধ বলে থাকে, তা হল, ‘দুবাই-খাটা’। এই ‘দুবাই-খাটা’ গায়িকাদের ইংরেজি উচ্চারণ প্রায় নিখুঁত (দু-এক জন তো লোরেটোর ড্রপ আউট)। পানশালায় গান গাইলেও এরা শরৎবাবুর টগর বোষ্টমীর মতো। হেঁশেলে রামা-শ্যামা অ্যালাউড নয়। বড় জোর ঐ হোয়াট্সঅ্যাপ বা স্কাইপ। ‘শেল্ফ লাইফ’ থাকতে থাকতেই শাঁসালো মক্কেল ধরে নিয়ে তাকেই বিয়ে এবং অনেকেই বেশ ‘লিভ্ড হ্যাপিলি দেয়ারআফটার।’ এদেরই এক জন এই শহরের এক প্রতিষ্ঠিত প্লাইউড ব্যবসায়ীকে বিয়ে করে দুই সন্তানের মা। নিয়মিত ‘অলিয়ান্স ফ্রঁসেজ’-এ যান ফরাসি শিখতে। পার্কের ব্যাংকোয়েট হলে রবীন্দ্রসংগীতের সিডি বের করেছেন সম্প্রতি। পুরনো ‘গেস্ট’ এর সঙ্গে আচমকা দেখা হলে হালকা হাসি বা ‘হাই ড্যুড্, হাউ ইজ ইয়োর বেটার হাফ?’ প্রাক্তন বার সিংগার আর প্রাক্তন হাফ বয়ফ্রেন্ড, কোনও দিক থেকেই কোনও ‘চাপ’ নেই। দু’দিকেই সুখী গৃহকোণ, শোভে গ্রামোফোন।
ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় যদি নতুন করে ‘কলিকাতার কমলালয়’ আর ‘নববাবুবিলাস’ লিখতেন, অবশ্যই একটা নতুন চ্যাপ্টার রাখতেন ব্যান্ড লিডারদের নিয়ে। এই ব্যান্ড লিডার’রাই পানশালার গায়িকাদের ফিলোজফার এবং গাইড। এরাই মূলত ব্যবসাটা নিয়ন্ত্রণ করে। গায়িকা খুঁজে আনা, তার থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা (কখনও কখনও গায়িকাদের সঙ্গে তাদের মা-বাবারও), বার মালিকের থেকে ‘ফ্লোর’ ম্যানেজ করা... এরাই হল ‘জ্যাক অব অল...’। সুশান্ত নামের সদ্য ত্রিশ পেরনো এক যুবক, ভিড়ের মাঝে দশ ফুটের ব্যাসার্ধ নিয়ে একটা বৃত্ত এঁকে ফেললেও যাকে আলাদা করে চেনা যাবে শার্টের রং, চুলের ঢেউ আর ‘হুগো বস’-এর তীব্র পারফিউমের দৌলতে। এই সুশান্ত এক সময়ের ভেড়ি ব্যবসায়ী। শখের রাজনীতি থেকে হালকা মস্তানিতেও হাত পাকিয়েছে কিছু দিন। কাঁচা টাকা হাতে আসার পর যা যা হয়— কালো এনফিল্ড, মোটা সোনার চেন আর বান্ধবী। সুশান্তর কথাতেই, ‘বুঝলেন স্যর, বেশির ভাগ ব্যান্ড লিডারই আগে গেস্ট থাকে, পরে এমন ভাবে মিশে যায় এই জগতে, ব্যান্ড লিডার হওয়াটা তখন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।’ পাঁচ বছর এই প্রফেশনে থাকা সুশান্তর অভিজ্ঞতা প্রচুর। ‘কত কী যে দেখেছি, এক একটা মেয়ে দামি গিফ্ট-এর জন্য বছরে তিন-চার বার বার্থ-ডে ‘মানায়’, বিউটি পার্লার আর শপিংও গেস্টের ঘাড়ে। আবার ঠাকুরপুকুরে মায়ের কেমোথেরাপি শেষ করেই ফ্লোরে এসে কর্ডলেস হাতে নিয়ে ‘মেহবুবা, মেহবুবা’ গাইতে শুনেছি। বিচিত্র দুনিয়া স্যর! গেস্ট নিয়ে চুলোচুলি যখন শুরু করে এরা, সামাল দেওয়াই মুশকিল। এক এক জন সারা রাত মোবাইলে কথা বলে, সারা দিন ঘুমোয়। কারও কারও পোষা কুকুরের ‘পেডিগ্রি’র প্যাকেটও আমাদেরই কিনে দিতে হয়। দু’পাও হাঁটতে পারে না, সব সময় পেছনে গাড়ি চাই। তবু মেনে নিই, এদের নিয়েই তো করে খাচ্ছি।’
সুশান্তরই শাগরেদ, মোস্তাফা দু’বছর মুম্বইতে ফ্লোর বয়ের কাজ করে এসেছে। তার দুনিয়া আরও রঙিন, ‘কী বলব বস্, কলকাতার সঙ্গে ওখানকার কোনও তুলনাই হয় না। ওখানে টেলিফোনে কালেকশন।’ সেটা কী জানতে চাইলে শুনলাম, ‘গেস্ট স্পটে (পড়ুন ‘বার’-এ) না থাকলেও, পছন্দের সিংগার-এর গান ভিডিয়ো কল-এ শুনেই আমাদের বলে দিত ফ্লোরে টাকা দিয়ে দিতে। কি ইমানদারি স্যর, টাকা ঠিক সময়ে হুন্ডিতে চলেও আসত আমাদের কাছে।’ কলকাতায় পয়সা ওড়ানোর মতো বড় একটা ‘দিল’ এখনও নাকি নজরে পড়েনি মোস্তাফার। তা ছাড়া ওখানকার পারফর্মাররাও অনেক ছম্মকছল্লো, নইলে তেলগি-র মত ব্যাপক জালি মালও কি আর ফাঁসত? বার সিংগারের সঙ্গে স্ট্যাম্প কেলেঙ্কারি ঠিক মেলাতে পারছিলাম না। আমার মুখের মানচিত্র দেখেই বোধহয় মোস্তাফার অ্যানেকডোট, ‘আরে স্যর, একটা মেয়ের গান শুনে এক রাতে এক কোটি টাকা উড়িয়েই না তেলগি ইনভেস্টিগেশন টিমের নজরে এল।’ তা ছাড়া, মোস্তাফার আরও আক্ষেপ, কলকাতায় আইনকানুন নাকি বেশ কড়া। বুঝলাম, মোস্তাফার ‘দুঃখ’-এর কারণ ১৯০৯ সালের বঙ্গীয় আবগারি আইন আর কলকাতা পুলিশ অ্যাক্ট, ১৮৬৬। মোস্তাফার কথায়, ‘এখানকার আবগারি আর পুলিশের সঙ্গে দোস্তি করা একটু কঠিন। একটু ‘ফ্রি’লি’ নাচগান করার উপায় নেই।’
‘ফ্রি’লি’ ব্যাপারটা ঠিক কী, এটা জিজ্ঞেস করায় মোস্তাফা যে নজরে তাকাল তাতে নিজেকে ক্রেশ-এর শিশু মনে হচ্ছিল। সুশান্তর ভ্রুভঙ্গিতেও একটাই মানে, ‘বুঝহ রসিকজন যে জানে রসের সন্ধান’।
এণাক্ষী আর মাসুদ, মেড ফর ইচ আদার। দুজনে ধর্মতলা অঞ্চলের বারে ‘ফ্লোর’ চালায়। এণাক্ষী বিবাহিত, মাসুদও। এখানে দুজন দুজনের পার্ট টাইম স্পাউস। এণাক্ষীর তালিম নেওয়া তুখড় গলা। মাসুদ কাস্টমার কেয়ারে মাহির। মাঝবয়সি অটোমোবাইল ডিলার নীরজ রোজকার গেস্ট। যত ক্ষণ এণাক্ষীর গান গাওয়ার টার্ন, নীরজের হয়ে মাসুদ এণাক্ষীর গলায় রাজন সাহেবের সই করা ঈষৎ সবুজাভ কাগজের মালা পরিয়ে দিতে থাকে। একান্তে মাসুদকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, যতই পার্টটাইমের বউ হোক, খারাপ লাগে না? ‘অ্যাটাচ্ড বাথ-দের অত ভাবতে নেই স্যর, পেট তো চালাতে হবে’, সপাট জবাব মাসুদের। ‘তা ছাড়া নীরজসাহাব লোক ভাল, ছুকরিবাজির মধ্যে নেই। পুরো ভেজ। গুনে দু’পেগ স্কচ আর আদাকুচি। সকালে ভিক্টোরিয়ার সামনে পায়রাদের দানা খাওয়ান, সন্ধেবেলা আমাদের। সারা দিন ব্যবসার পরে দু’ঘণ্টা নিজের একটা অরফ্যানেজে থাকেন আর দু’ঘণ্টা এখানে। সুর কেটে গেলে কানে হাত দিয়ে বুঝিয়ে দেন।’ রাত সাড়ে এগারোটা। ‘নীরজসাহাব’ বিল মিটিয়ে উঠে পড়লেন। ‘বাও’ করে এণাক্ষী আর মাসুদ। সাহাব-কে গাড়ি অবধি ছাড়তে আসে মাসুদ। একটু বাদে কিং সাইজ ধরিয়ে বারের বাইরেই দাঁড়িয়ে সে। ফিসফিস করে বলল, ‘আজ এখানে অ্যাকশন হবে, দুজন প্লেন ক্লোদ-কে দেখেননি, পেছনের টেবিলে? খবরটা আমারই। ‘সাফারি লাল্টু’ (সব সময় সাফারি পরে থাকার জন্য এই নাম) আসবে একটু বাদেই। তিনটে মার্ডারের আসামি, খুব জ্বালাচ্ছিল এত দিন। পিক আওয়ারে এসে একটাই গান বারবার শুনতে চায়, ‘আমি জেনেশুনে বিষ করেছি পান’। ভাবুন এক বার। অন্য কাস্টমাররা বিরক্ত হলেও ভয়ে কিছু বলতে পারে না। কিছু বুঝতে দিইনি, কিন্তু ভেতরে ভেতরে কাজ করে গেছি।’ বুঝলাম, ‘অ্যাটাচ্ড বাথ’রা ইনফর্মারের কাজও করে। ‘শুধু কি ইনফর্মার স্যর, ব্লাড ডোনেশনে রক্ত দিই, ভোটেও খাটি প্রচুর। যাদের হয়ে পারি না, তাদের একটু বেশি চাঁদা দিয়ে দিই। সবাইকে নিয়েই তো চলতে হবে। সেটিংটা রাখি, ইনশাল্লাহ, বিপদে-আপদে কখন কে কাজে আসে।’ কলকাতার রাত বাড়ছে। পানশালার ভেতর থেকে ভেসে আসছে বাজনাগানের আওয়াজ, ‘আজ কি রাত, হোনা হ্যায় কেয়া’।
অনেক লিড সিংগারকেই একটু বেশি বয়সে ব্যান্ড লিডার কাম সিংগার-এর দ্বৈত ভূমিকায় দেখা যায়। কোচ কাম প্লেয়ার টাইপ। ‘পেনসিল শর্মিলা’ যেমন। এখনও নির্মেদ শরীর, সবুজ কনট্যাক্ট লেন্স, ডিট্টো ‘অল্কা ইয়াগ্নিক’ গলা, ফাটাফাটি অ্যাপিয়ারেন্স। ‘ক্যাটওয়াক’-এর পাক্কা পাঁচ ইঞ্চি হাই হিল জুতোর জন্য শর্মিলার ডাকনাম ‘পেনসিল শর্মিলা’। তিরিশের অনেক আগেই ব্যান্ড লিডার। শোনা যায়, এক কালের এই লবঙ্গলতিকার জুতোর কালেকশন দক্ষিণের ললিতার চাইতেও অনেক বেশি। ডাউহিল স্কুলের অ্যালামনি শর্মিলার বিয়ে বালিগঞ্জে। তাও প্রায় কিশোরী বয়সে। বনেদি শ্বশুরবাড়ি। সামনে লন, ট্রলিতে টি-কোজি, দেওয়ালে টিপু সুলতানের তরোয়াল, রান্নাঘরে অ্যাপ্রন-বাবুর্চি। কিন্তু স্বামী ফুলশয্যার রাতেই বাথরুমে গিয়ে সাবান চিবোচ্ছিল। নতুন বউয়ের পিঠে হাত দিয়ে শ্বশুরমশাই একটু মানিয়েগুছিয়ে নিতে বলেছিলেন। হাত ক্রমশ পিঠ থেকে এ-দিক ও-দিক ওঠানামার মিহি চেষ্টা শুরু করতেই শর্মিলা ব্যাক টু প্যাভিলিয়ন। কিন্তু নিজের বাড়িতেও নতুন বিয়ে করা দাদা-বউদির থেকে যে ব্যবহার পেতে শুরু করল, সেটা অসময়ে আউট হয়ে আসা ব্যাটসম্যানের প্রতিই করা যায়। কয়েক দিনের মধ্যেই সোনারপুরের স্যাঁতসেঁতে পিজি হোস্টেল। হোস্টেলেরই আর এক মেয়ে পার্ক স্ট্রিটের বারে গান গাইত। তার হাত ধরেই এই লাইনে। প্রেম-ট্রেম হয়নি আর? পেনসিল শর্মিলা অকপট, ‘গেস্টদের তো প্রথমে চোখ দিয়েই বধ করি, তাই কার নজর কেমন বুঝি। তা ছাড়া, বার সিংগারের সঙ্গে খেপ খেলতেই লোকে পছন্দ করে। কে আর ঝামেলায় জড়াতে চায়, বলুন? গেস্টদের সবটাই ওপর ওপর। এই সব মসিঁয়েরা মিশেও মেশে না। তবু এসেছিল এক জন, ইন্টিরিয়র ডিজাইনার। সঙ্গে প্রচুর টাকা আর ততোধিক মদ। যিশু খ্রিস্টের মতো দাড়ি আর মনভোলানো কথার কত্থকে আমিও নেচে উঠেছিলাম। শেষে আমার টাকাতেই তিন বছর ওর লিভারের ট্রিটমেন্ট। তার পর একেবারেই চলে গেল। দেখছেনই তো, আমি এখন এই পাড়ায় গানের মাসিমণি।’ নিজের রসিকতায় নিজেই হেসে ওঠে ‘পেনসিল শর্মিলা’ আর তার সবুজ কনট্যাক্ট লেন্স।
sujitdas_12345@yahoo.com