ব়ড়দিনের সপ্তাহে অন্তত একটা দিন জমাটি নৈশভোজের পরিকল্পনা করেছেন নিশ্চয়ই। হয়তো বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গে দেখা করে আড্ডা দেওয়ারও ইচ্ছে আছে। বছরের শেষ কয়েক সপ্তাহে ছুটির দিনগুলোয় এমন নানা পরিকল্পনা চলতেই থাকে। কারও বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা হয়, কেউ পরিবারে সদস্যদের নিয়েই ভাল খাওয়াদাওয়া করে উৎসবের আনন্দ নেন। তেমন একটা নৈশভোজের মেনুতে কাশ্মীরি দুই পদ— মাটন রোগন জোশ এবং রোগনি নান রেঁধে চমকে দিতে পারেন। শীতের রাতে ওই দুই পদ থাকলে আর তৃতীয় খাবারের দরকার প়ড়বে না। পিতলের বাতিদানে মোমবাতি সাজিয়ে সোনালি রঙের কাঁসার থালা, বাটি, রেকাবিতে সাজিয়ে ফেলুন নৈশভোজের টেবিল। সঙ্গে পানপাত্র থাকলে তো কথাই নেই।
কী ভাবে বানাবেন?
মাটন রোগন জোশ এবং রোগনি নান— দু’টিই আফগানিস্তান হয়ে কাশ্মীরে এসেছে। দু’টি খাবারই শীতের দেশের খাবার। তাই শীতের রাতের জন্য উপযোগী। প্রথমটি রান্না করতে হবে প্রেসার কুকারে। দ্বিতীয়টির জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে কিছুটা আগে থেকে।
—ফাইল চিত্র।
মাটন রোগন জোশের উপকরণ
১ কেজি পাঁঠার মাংস
৪ টেবিল চামচ সরষের তেল
৪-৫টি ছোট এলাচ
২-৩টি দারচিনি
৫-৬টি লবঙ্গ
২টি বড় এলাচ
২-৩টি তেজপাতা
১ কাপ টকদই
১ চা চামচ হিং
২ টেবিল চামচ কাশ্মিরী লঙ্কার গুঁড়ো
১ টেবিল চামচ শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো
১ টেবিল চামচ মৌরি গুঁড়ো
১ টেবিল চামচ ধনে গুঁড়ো
১ টেবিল চামচ শুকনো আদা গুঁড়ো
১ টেবিলচামচ গরম মশলা গুঁড়ো
স্বাদ মতো নুন
পরিমাণ মতো রতনযোগ
প্রণালী
প্রেসার কুকারে সরষের তেল ঢেলে ধোঁয়া ওঠা পর্যন্ত গরম করুন। তারপর কুকারটি গ্যাস থেকে নামিয়ে রেখে সমস্ত গোটা মশলা ফোড়ন দিন। কুকারটি ফের গ্যাসে চড়ান। এরপর সেদ্ধ করে রাখা মাটন দিয়ে কিছু ক্ষণ নাড়াচাড়া করুন। মাটন হালকা ভাজা হয়ে গেলে তাতে ফেটানো টক দই দিন। এরপর একে একে সব গুঁড়োমশলা যোগ করে অল্প আঁচে ভাল করে কষিয়ে নিন। মশলা থেকে তেল ছেড়ে এলে তাতে গরম জল মিশিয়ে নাড়াচড়া করুন। স্বাদমতো নুন দিন। গ্রেভিরলাল রঙের জন্য যোগ করুন পরিমাণ মতো রতনযোগ। প্রেসারের ঢাকনা দিয়ে ৪ থেকে ৫টি সিটি ছাড়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। সব শেষে গরমমশলার গুঁড়ো মিশিয়ে নামিয়ে নিন।
—ফাইল চিত্র।
রোগনি নানের উপকরণ
৪ কাপ ময়দা
১ টেবিল চামচ গুঁড়নো চিনি
১ চা চামচ নুন
২ চা চামচ ইস্ট
আধা চা চামচ বেকিং সোডা
৫ টেবিল চামচ ঘি বা মাখন
পৌনে ১ কাপ গরম দুধ
পৌনে ১ কাপ উষ্ণ জল
২ টেবিল চামচ দই
২ টেবিল চামচ তিল
১ টা ডিমের কুসুম এবং ১ টেবিলচামচ দুধ ডিমের প্রলেপের জন্য
প্রণালী
ময়দা, চিনি, নুন, ইস্ট, বেকিং সোডা, দুধ, উষ্ণ জল, দই এবং ৩ টেবিলচামচ ঘি একসঙ্গে মিশিয়ে ৭-৮ মিনিট ভাল করে মাখুন। এ বার একটি বাটিতে তেল মাখিয়ে ওই মাখা ময়দা রেখে মুখ ঢেকে দু’ঘণ্টা রেখে দিন। এমন জায়গায় রাখবেন যে খানে তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা বেশি। ২ ঘণ্টায় ময়দা প্রায় আকারে দ্বিগুণ হলে সেটা আরও একবার মেখে নিয়ে সমান আটটি ভাগে ভাগ করুন। তার পরে গোল বলের মতো আকৃতি দিয়ে ভিজে তোয়ালে দিয়ে ঢেকে আরও ২০ মিনিট রেখে দিন।
এ বার এক একটি ময়দার বলকে সামান্য পুরু করে বেলে নিয়ে লোহার তাওয়ায় দিয়ে খুন্তি দিয়ে হালকা হাতে উপরে চৌখুপি নকশা করুন। এর পরে ডিমের কুসুম এবং দুধ একসঙ্গে মিশিয়ে ওই নকশার উপর প্রলেপ দিন। তিন চার মিনিট পর নীচের অংশে সোনালি রং ধরলে হয় উপরে মাখন দিয়ে তিল ছড়িয়ে অভেনে বেক করতে পারেন ২-৪ মিনিট। অথবা চাটুতেই উল্টে নিয়ে নানের অন্য দিকটি সেঁকে নিতে পারেন। তবে সাধারণত রোগনি নান যেহেতু তন্দুরেই করা হয়, তাই ওভেনে বেক করলে বেশি নরম হবে। তবে দুটি প্রণালীতে স্বাদ হবে একই।