Advertisement
E-Paper

বিজ্ঞানে বিশ্বসেরার তালিকায় বঙ্গ দম্পতি

এমন সম্মান প্রাপ্তির প্রতিক্রিয়া কী? ‘‘আরে, হতে চেয়েছিলাম ক্রিকেটার। তাই জোর কদমে ক্রিকেট খেলতাম। তবে ফিজ়িক্সও খুব ভালবাসতাম।

মধুমিতা দত্ত

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২০ ০৪:২৬
দু’জনে: উজ্জ্বল মৌলিক এবং সঙ্ঘমিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায়।

দু’জনে: উজ্জ্বল মৌলিক এবং সঙ্ঘমিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বিশ্ব-বিজ্ঞানে বাংলার জয়জয়কার। বিজ্ঞানের সব ক্ষেত্র মিলিয়ে বিশ্বের সেরা দুই শতাংশ বিজ্ঞানীর একটি তালিকা প্রকাশ করেছে আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। সেই তালিকায় ঠাঁই পাওয়া বঙ্গের শতাধিক বিজ্ঞানীর মধ্যমণি এক দম্পতি। ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের অধিকর্ত্রী সঙ্ঘমিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সের শিক্ষক উজ্জ্বল মৌলিক। ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড ইমেজ প্রসেসিং’ নিয়ে গবেষণা তাঁদের এই সম্মান এনে দিয়েছে।

এমন সম্মান প্রাপ্তির প্রতিক্রিয়া কী? ‘‘আরে, হতে চেয়েছিলাম ক্রিকেটার। তাই জোর কদমে ক্রিকেট খেলতাম। তবে ফিজ়িক্সও খুব ভালবাসতাম। ফিজ়িক্সকে ভালবাসতে বাসতেই এত দূর চলে আসা,’’ বলেন উজ্জ্বল। বাবার রেলের চাকরির সূত্রে শৈশবে নবদ্বীপে থাকতেন তাঁরা। নবদ্বীপ বকুলতলা হাইস্কুল থেকে দৌড় শুরু করে উজ্জ্বল এখন বিশ্বসেরা বিজ্ঞানীদের তালিকায় জ্বলজ্বল করছেন। জানালেন, স্কুল পেরিয়ে রহড়া রামকৃষ্ণ মিশন কলেজ, কলকাতা ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। পাঠ নিয়েছেন দেশ-বিদেশের আরও কিছু নামী প্রতিষ্ঠানে। এসেছে অজস্র পুরস্কার এবং সম্মান। প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিদ্যার পাঠ নেওয়ার পরে সঙ্ঘমিত্রা কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে, আইআইটি খড়্গপুরে। তারও পরে শিক্ষাগত যোগ্যতা বাড়িয়েছেন দেশ-বিদেশের বহু নামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। পেয়েছেন শান্তিস্বরূপ ভাটনগর-সহ বহু পুরস্কার। স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই প্রথমে পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়েছেন। পরে বিটেক, এমটেক করেছেন কম্পিউটার সায়েন্সে।

সঙ্ঘমিত্রা জানান, প্রকাশিত ও স্বীকৃত গবেষণাপত্রের নিরিখে তৈরি হয়েছে স্ট্যানফোর্ডের তালিকা। গবেষণাপত্র যে-জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে, তার মান, গবেষণার মান এবং ক’বার সেই গবেষণাপত্রের ‘সাইটেশন’ হয়েছে, তা দেখেই সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীকে স্থান দেওয়া হয়েছে সেরার তালিকায়। আইএসআইয়ের অধিকর্ত্রীর মতো দায়িত্বপূর্ণ পদে থেকে গবেষণা চালাতে কি কিছুটা সমস্যা হয়? ‘‘বিজ্ঞান গবেষণা একটা নিরবচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া। চলতেই থাকে। গবেষণার কাজ চালিয়ে নিয়ে যেতেই হবে,’’ সঙ্কল্পে দৃঢ় সঙ্ঘমিত্রা।

স্ট্যানফোর্ডের তালিকায় মোট ১,৫৯,৬৮৩ জন বিজ্ঞানীর নাম আছে। তাঁদের মধ্যে ভারতের বিজ্ঞানী ১৪৯২ জন। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স বেঙ্গালুরু এবং আইআইটিগুলির সাফল্য চোখে পড়ার মতো। সমুজ্জ্বল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়।

তালিকায় খড়্গপুর আইআইটির ৬৭, যাদবপুরের ৩০, ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের ১৮, বিধাননগরের এসএন বোস ন্যাশনাল সেন্টার ফর বেসিক সায়েন্সের সাত, বিশ্বভারতীর চার, কলকাতা ও কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন করে বিজ্ঞানী আছেন। এ ছাড়াও আছে ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অব অ্যানিম্যাল অ্যান্ড ফিশারি সায়েন্সের এক জন এবং বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জন বিজ্ঞানীর নাম।

প্রাদেশিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাদবপুরের ৩০ জন বিজ্ঞানীর নাম ওই তালিকায় থাকায় উপাচার্য সুরঞ্জন দাস খুব খুশি। ‘‘এই সাফল্য শুধু যাদবপুরের নয়, গোটা পশ্চিমবঙ্গের। কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি অনেক বেশি সুযোগ পায়। পরিকাঠামো তাদের অনেক উন্নত। সেখানে অনেক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও যাদবপুরে আমার সহকর্মীরা যে-ভাবে এই সম্মানজনক তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন, তাতে আমি গর্বিত,’’ বলেন উপাচার্য।

Science West Bengal Couple
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy