Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Science News

ধন্যি মেয়ে! সাবানের ফেনা নিয়ে খেলতে খেলতে পেলেন অঙ্কের সেরা সম্মান

এই ধন্যি মেয়েই পেলেন এ বার অঙ্কের ‘নোবেল পুরস্কার’ অ্যাবেল প্রাইজ।

অ্যাবেল পুরস্কার জয়ী প্রথম মহিলা গণিতজ্ঞ কারেন উহ্‌লেনবেক। ছবি- ‘নেচার’ জার্নালের সৌজন্যে।

অ্যাবেল পুরস্কার জয়ী প্রথম মহিলা গণিতজ্ঞ কারেন উহ্‌লেনবেক। ছবি- ‘নেচার’ জার্নালের সৌজন্যে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৯ ১৪:৪৩
Share: Save:

এক ‘ধন্যি মেয়ে’র গল্প! যিনি অঙ্কের যাবতীয় জটিলতাকে হঠিয়ে দিতে পেরেছিলেন অনায়াসেই। কারেন কেসকুল্লা উহ্‌লেনবেক।

এই ধন্যি মেয়েই পেলেন এ বার অঙ্কের ‘নোবেল পুরস্কার’ অ্যাবেল প্রাইজ। জ্যামিতিতে ‘ভানুমতীর খেল’ দেখিয়ে। এই প্রথম কোনও মহিলাকে দেওয়া হল অঙ্কের সর্বোচ্চ পুরস্কার। সেরা আন্তর্জাতিক সম্মান। নরওয়ের অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স অ্যান্ড লেটার্স মঙ্গলবার ঘোষণা করেছে কারেনের নাম। জানিয়েছে, ‘পদার্থবিজ্ঞান, গণিত শাস্ত্র ও বিশ্লেষণ (অ্যানালিসিস) এই তিনটি শাখার মধ্যে সেতু গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তাঁর সারা জীবনের অবদানের জন্য এ বার দেওয়া হয়েছে অ্যাবেল প্রাইজ। এই পুরস্কারের অর্থ-মূল্য ৬০ লক্ষ সুইডিশ ক্রোনার। ভারতীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৪৮ কোটি ৩৯ লক্ষ ৫ হাজার ৩৪০ টাকা।

জ্যামিতিতে কী ভাবে ‘ভানুমতীর খেল’ দেখিয়েছেন কারেন?

সামান্য একটা সাবানের ফেনা নিয়েই ছিল কারেনের কায়দা-কসরত। দৈর্ঘ্য, প্রস্থ আর উচ্চতা আর তার সঙ্গে সময়কে যোগ করলে হয় চার মাত্রার (ডাইমেনশন) ব্রহ্মাণ্ড। কিন্তু তার বাইরেও ব্রহ্মাণ্ডের আরও মাত্রা রয়েছে। যাকে বলা হয় বহুমাত্রিক (মাল্টি-ডাইমেনশনাল) ব্রহ্মাণ্ড। চার মাত্রার ব্রহ্মাণ্ডে সাবানের ফেনার চেহারাটা কেমন হয়, দেখতে কেমন লাগে সেই ফেনাকে, তা তো আমরা জানি। কিন্তু সেই সাবানের ফেনার চেহারাটা কেমন হবে বহুমাত্রিক ব্রহ্মাণ্ডে, সেটা আগেভাগে বলে দেওয়ার রাস্তাটা কারেনই প্রথম দেখিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন-কেন বাঙালির হাতে উঠছে না ফিল্ডস মেডেল, অ্যাবেল প্রাইজ

সমতলে সবচেয়ে কাছাকাছি থাকা দু’টি বিন্দুকে যোগ করা হয় একটি সরলরেখা দিয়ে। আর সেটা যদি পৃথিবীর উপর কোনও বিন্দু হয়, তা হলে সেই সরলরেখাটা আর সরলরেখা থাকবে না। হয়ে যাবে একটা বৃত্তের ব্যাস। এটা হয় দ্বিমাত্রিক (টু ডাইমেনশনাল) ক্ষেত্রে। আর সাবানের ফেনা বা বুদবুদের ক্ষেত্রে সেটা ত্রিমাত্রিক (থ্রি ডাইমেনশনাল) হয়ে যায়। আর তখনই দেখা দেয় নানা রকমের জটিলতা। মাত্রাটা যত বাড়ে... চার, পাঁচ বা ছয়, ততই বেড়ে যায় জটিলতা। কারেনের কৃতিত্ব, তিনিই সেই জটিলতার জাল কেটেছিলেন। অনায়াসে।

আরও পড়ুন- ইতালীয় মহিলাকে নিয়ে ভিন গ্রহে প্রাণ খুঁজবেন পুরুলিয়ার সুজন​

আরও পড়ুন- ‘আইনস্টাইনের সঙ্গে সম্পর্ক না ভাঙলে হয়তো ফিজিক্সটাই বদলে দিতেন মিলেভা!’

পৃষ্ঠটানের (সারফেস টেনশন) বলকে যতটা সম্ভব কম করতে সাবানের ফেনা বা বুদবুদ একটা গোলকের চেহারা নেয়। তাতে একটি নির্দিষ্ট আয়তনে সবচেয়ে কম জায়গা নিতে পারে সাবানের ফেনাটি, তার অস্তিত্ব বজায় রাখতে। কিন্তু সেই সাবানের ফেনার গায়ে যখন চার পাশ থেকে আরও কয়েকটি সাবানের ফেনা এসে ধাক্কা মারে, তখনই ঘটে বিপত্তি। ধাক্কা খেয়ে প্রথম সাবানের ফেনাটির চেহারায় ব্যাপক অদলবদল ঘটে যায়। তার তখন কার্যত দিশেহারা অবস্থা হয়। হাঁসফাঁস করতে করতে তখনও কিন্তু সে তার অস্তিত্বের জন্য সামান্য জায়গাটুকুকেই ধরে রাখার চেষ্টা করে।

কারেন এটাই দেখিয়েছিলেন। তাঁর দেখানো পথ ধরেই পরে কণাপদার্থবিজ্ঞানের স্ট্যান্ডার্ড মডেলের ভিত গড়ে ওঠে। আর এই ভাবেই জ্যামিতি, বিশ্লেষণ আর কণাপদার্থবিজ্ঞানের মধ্যে সেতু গড়ে তুলেছিলেন কারেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE