Advertisement
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩
Science News

বলয়ের আড়ালে লুকিয়ে থাকা শনির আরও ৫টি চাঁদের হদিশ পেল নাসা

বছরদু’য়েক আগে নাসার মহাকাশযান ‘ক্যাসিনি’ ঢুকে পড়েছিল শনির বলয়গুলির মধ্যে। শনির মুলুকে মৃত্যুর আগে সে গ্রহটির বলয়গুলির রহস্যভেদে মরিয়া হয়ে উঠেছিল। ঢুঁড়ে ফেলেছিল শনির বরফে মোড়া একের পর একটি বলয়।

বলয়গ্রহ শনি। ছবি- নাসা

বলয়গ্রহ শনি। ছবি- নাসা

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৯ ১৫:১৭
Share: Save:

রহস্যের মোড়ক খুলছে শনি। লুকিয়ে থাকা আরও পাঁচটি চাঁদের হদিশ মিলল শনির মুলুকে। যে চাঁদগুলি এত দিন আমাদের নজর এড়িয়ে ছিল শনির অনেকগুলি বলয়ের (রিং) মধ্যে একটির আড়ালে। শনির একটি চাঁদ এনসেলাডাসের ছোড়া বরফ মেঘের তলায় মুখ লুকিয়ে।

বছরদু’য়েক আগে নাসার মহাকাশযান ‘ক্যাসিনি’ ঢুকে পড়েছিল শনির বলয়গুলির মধ্যে। শনির মুলুকে মৃত্যুর আগে সে গ্রহটির বলয়গুলির রহস্যভেদে মরিয়া হয়ে উঠেছিল। ঢুঁড়ে ফেলেছিল শনির বরফে মোড়া একের পর একটি বলয়। সেই সময়েই ক্যাসিনি মহাকাশযানের নজরে পড়ে যায় শনির কয়েকটি বলয়ের তলায় লুকিয়ে রয়েছে পাঁচটি চাঁদ। যেগুলি পুরোপুরি বরফে মোড়া। যেন বরফের চাঙর।

ওই পাঁচটি চাঁদের নাম দেওয়া হয়েছে, ‘প্যান’, ‘অ্যাটলাস’, ‘ড্যাফনিস’, ‘প্রমেথিউস’ ও ‘প্যান্ডোরা’।

শনির বলয়গুলির আড়ালে লুকিয়ে থাকা সেই পাঁচটি চাঁদ রয়েছে যেখানে

ক্যাসিনির পাঠানো ছবি ও তথ্যাদি খতিয়ে দেখে নাসার বিজ্ঞানীরা এ বার সুনিশ্চিত হয়েছেন শনির বলয়গুলির আড়ালো থাকা ওই মহাজাগতিক বস্তুগুলি আদতে শনির চাঁদ। তাঁদের গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘সায়েন্স’-এ। বৃহস্পতিবার। গবেষকরা ক্যাসিনির পাঠানো ছবি ও তথ্যাদি থেকে নিশ্চিত হয়েছেন, শনির ওই পাঁচটি চাঁদের শরীর গড়ে উঠেছে ধুলোবালি আর বরফ দিয়ে। শনির বলয়গুলিই সেই সব ছুড়ে যাচ্ছে চাঁদগুলির দিকে। তাঁরা এও দেখেছেন, চাঁদগুলি পুরোপুরি গোল নয়। অনেকটা আলুর মতো দেখতে। তাদের গা এবড়োখেবড়ো। এমনকি, অনেক ফুটোফাটাও রয়েছে শনির ওই পাঁচটি চাঁদের গায়ে। আর সেই সব ফুটোফাটা অনেক বেশি চাঁদগুলির বিষূবরেখা বরাবর। কারণ, শনির বলয়গুলির দিকে মুখ করে থাকে শনির ওই পাঁচটি চাঁদ। তার ফলে বলয়গুলি যে লাগাতার বরফ আর ধুলো ছুড়ে চলেছে, সেগুলি আছড়ে পড়ে চাঁদের বিষূবরেখা অঞ্চলেই। তার ফলে ওই এলাকা হয়ে গিয়েছে এবড়োখেবড়ো। সেখানে প্রচুর ফুটোফাটাও রয়েছে।

যেমন দেখতে তিনটি চাঁদ ‘অ্যাটলাস’, ‘প্যান’ এবং ‘ড্যাফনিস’

জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, পাঁচটির মধ্যে যে দু’টি চাঁদ শনির বলয়গুলির খুব কাছাকাছি রয়েছে, সেগুলির পিঠ বেশি এবড়োখেবড়ো। আর সেগুলি দেখতে অনেকটা ডিম বা লম্বাটে আলুর মতো। ওই দু’টি চাঁদের নাম, ড্যাফনিস ও প্যান। বাকি যে তিনটি চাঁদ, ‘অ্যাটলাস’, ‘প্রমেথিউস’ ও ‘প্যান্ডোরা’ রয়েছে শনির বলয়গুলি থেকে কিছুটা দূরে আর শনির একটি বড় চাঁদ এনসেলাডাসের কাছাকাছি, সেগুলির শরীর আবার গড়ে উঠেছে একেবারেই অন্য ভাবে। বরফে মোড়া শনির বড় চাঁদ এনসেলাডাসের ছোড়া বরফে ঢেকে গিয়েছে ‘অ্যাটলাস’, ‘প্রমেথিউস’ ও ‘প্যান্ডোরা’র শরীর। সেখানে রয়েছে জলীয় বাষ্পও। যা এসেছে এনসেলাডাস থেকে। ওই তিনটি চাঁদ রয়েছে শনির ‘ই’ বলয়ের কাছাকাছি। বরফে মোড়া শনির ওই বলয়টি বানিয়েছে এনসেলাডাসই। বরফ ছুড়ে ছুড়ে।

আরও পড়ুন- এই প্রথম গ্রহাণুর মৃত্যু-দৃশ্য দেখল নাসা!​

আরও পড়ুন- বিশ বছরের রুটিন বদলে হঠাৎ পাগলাটে হয়ে উঠল গ্রিনল্যান্ডের হিমবাহ!

তাঁরা এও দেখেছেন, শনির ‘এ’ এবং ‘এফ’ বলয়ের মধ্যে থাকা বলয় বা এলাকাগুলিতে লুকিয়ে থাকা যে দু’টি চাঁদ (ড্যাফনিস ও প্যান) এত দিন আমাদের চোখে ধরা দেয়নি, তাদের রং লালচে। অনেকটাই তাদের কাছাকাছি থাকা শনির বলয়গুলির রঙের মতো। আর দূরে থাকা তিনটি চাঁদ- ‘অ্যাটলাস’, ‘প্রমেথিউস’ ও ‘প্যান্ডোরা’ নীলাভ। এনসেলাডাস থেকে বেরিয়ে আসছে বরফের যে ধোঁয়া, তার রংও নীলাভ যে!

ছবি সৌজন্যে: নাসা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE