Advertisement
E-Paper

বিপন্ন জলহাওয়া, বিশ্ব তালিকায় ছ’নম্বরে ভারত

পরিবেশবিদেরা জানাচ্ছেন জলবায়ুর এই খামখেয়ালিপনার পিছনে রয়েছে বিশ্ব উষ্ণায়ণ। তার সম্ভাব্য কারণ বাড়তে থাকা দূষণ। ক্রমাগত এই বদলের ইঙ্গিত দেখে হিমশিম খাওয়ার জোগাড় হয়েছে বিজ্ঞানী ও পরিবেশবিদদের।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৭ ১৯:১৫

রোজ বদলাচ্ছে পৃথিবীর জলবায়ুর মর্জি, মেজাজ। বন্যা ভাসিয়ে দিচ্ছে বা ভূমিকম্প এক লহমায় গ্রাস করছে সবকিছু। কখনও মাঝ সমুদ্রে বিনা নোটিশে জাগছে ঝড়, সুনামির তাণ্ডব তছনছ করছে সবকিছু। আন্টার্কটিকায় হিমবাহের স্তর গলছে, তো সমুদ্রে বাড়ছে জলস্তর। বদলাচ্ছে স্থানীয় জলবায়ুও। পরিবেশবিদেরা জানাচ্ছেন জলবায়ুর এই খামখেয়ালিপনার পিছনে রয়েছে বিশ্ব উষ্ণায়ণ। তার সম্ভাব্য কারণ বাড়তে থাকা দূষণ। ক্রমাগত এই বদলের ইঙ্গিত দেখে হিমশিম খাওয়ার জোগাড় হয়েছে বিজ্ঞানী ও পরিবেশবিদদের।

আরও পড়ুন:

বাতাসের বিষ কমাতে পিউরিফায়ার কিনছেন? এগুলো অবশ্যই মাথায় রাখুন

কুয়েতের ধুলো, পাকিস্তানের কুয়াশাতেই দিল্লির দুর্ভোগ

পরিবর্তন যে কত বড় বিভীষিকা বয়ে আনতে পারে তার আগাম ইঙ্গিত পাচ্ছে দিল্লি। শ্বাসরোধী বায়ু, ঘন ধোঁয়াশা ক্রমশ প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে দিল্লিবাসীর কাছে। বাতাসে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে ভাসমান কণা বা পার্টিকুলেট ম্যাটার। মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে প্রশাসনের। আন্তর্জাতিক পরিবেশ গবেষণা সংস্থা জার্মানওয়াচ বহুদিন ধরেই বিশ্ব জুড়ে জলবায়ু পরিবর্তন এবং তার প্রভাব নিয়ে সমীক্ষা চালাচ্ছে। ওই সমীক্ষাটিকে বলা হয় ‘গ্লোবাল ক্লাইমেট রিস্ক ইনডেক্স’ বা ‘সিআরআই’। বন্যা, ক্ষরা, ভূমিকম্প, অগ্ন্যুৎপাত, সুনামি ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং তার ফলে সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি, প্রাণহানি, দুরারোগ্য ব্যধি, মহামারীর প্রকোপ—সব কিছুর নিরিখে এই সমীক্ষা চালানো হয়।

২০১৬ সালের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সিআরআই-এর বিচারে বিশ্বে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে ভারত। প্রথম পাঁচে রয়েছে হাইতি, জিম্বাবয়ে, ফিজি, শ্রীলঙ্কা এবং ভিয়েতনাম। দশম স্থানে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাম। তাইপেই, ম্যাসেডোনিয়া এবং বলিভিয়ার মতো দেশও রয়েছে প্রথম দশের মধ্যেই।

জার্মানওয়াচের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৬ সালে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ভারতে সর্বাধিক প্রাণহানি এবং সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়, বন্যা, ভূমিকম্প ইত্যাদি নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়েছেন প্রায় ২১১৯ জন মানুষ। এই সংখ্যা বিশ্বের অন্যান্য দেশের চেয়ে অনেক বেশি। সম্পত্তিহানি হয়েছে প্রায় ২১০০ কোটি ডলার (ভারতীয় টাকায় ১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা)। ১৯৯৭-২০১৬ সালের সিআরআই অনুযায়ী ভারতের স্থান ছিল দ্বাদশে। ক্রমশ সেই অবস্থার অবনতি হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯৯৭ সালে ১১ হাজার প্রাকৃতির বিপর্যয়ের ঘটনায় প্রায় ৫ লক্ষ ২০ হাজার প্রাণহানি হয়েছিল।

গত ২০ বছরের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলির মধ্যে রয়েছে হন্ডুরাস, মায়ানমার এবং হাইতি। ছাড় পায়নি নিকারাগুয়া, ফিলিপিন্স এবং বাংলাদেশও। ২০০৮ সালে প্রবল শক্তি নিয়ে মায়ানমার উপকূলে আছড়ে পড়ে সাইক্লোন নার্গিস। ঝড়ের প্রকোপে প্রাণ হারান প্রায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার মানুষ। পরিবেশবিদদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়ে ২০১৫ সালে। বন্যা এবং ভূমিধ্বসের কারণে আফ্রিকা, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ আমেরিকার বিস্তৃর্ণ এলাকা তছনছ হয়ে যায়। প্রাণ হারান লক্ষাধিক মানুষ।

বিশ্ব উষ্ণায়ন থেকে বাঁচতে প্যারিসে ১৯৬টি দেশ সমবেত হয়ে একটি খসড়া তৈরি করে। তাতে বলা হয়, পৃথিবীর তাপমাত্রা যেন বর্তমানের চেয়ে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি না বাড়ে, সেটা নিশ্চিত করাই হোক বিশ্বের লক্ষ্য।

পরিবেশবিদদের মতে, এটাই প্রকৃতির সতর্কবার্তা, এই বিভীষিকা থেকে মুক্তির না মিললে আগামী দিনে খুব বড় বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হবে গোটা মানবসভ্যতাকে।

Climate Germanwatch Weather Report Climate Change Pollution জলবায়ু দূষণ পরিবেশ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy