ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল আগেই। পড়শি গ্রহের মাটিতে প্রাণের রসদ থাকার আরও জোরদার প্রমাণ মিলল এ বার।
মঙ্গলের মাটিতে একগুচ্ছ জৈবযৌগের খোঁজ পেয়েছে নাসার পাঠানো মঙ্গলযান ‘কিউরিওসিটি রোভার’। প্রাণের সঞ্চারের ক্ষেত্রে সেগুলির উপস্থিতি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ, দাবি নাসার বিজ্ঞানীদের। সেই সঙ্গে আরও একটি বিষয় নজর কেড়েছে তাঁদের। লালগ্রহের বায়ুস্তরে মিথেনের মাত্রা কখনও বাড়ে, কখনও কমে। দু’টি বিষয়ই ‘মিস কৌতূহল’-এর নজরবন্দি হয়েছে মঙ্গলের পাথুরে এলাকা ‘গেল ক্রেটার’-এ।
পৃথিবীর মতো জীবকূল না থাকুক, কোনও অণুজীবীও কি নেই ভিন্গ্রহে? কিংবা অতীতে ছিল না? দীর্ঘদিন ধরেই এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়াচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা। তারই খোঁজে মঙ্গলে পাড়ি কিউরিওসিটি-র। কখনও লালগ্রহের মাটিতে নদীখাতের মতো চিহ্ন খুঁজে পেয়েছে সে, কখনও কার্বন-যৌগের সন্ধান। কিন্তু এ বারে মঙ্গলযানের পাঠানো তথ্য নিয়ে বেশ উত্তেজিত বিজ্ঞানীরা। নাসা জানাচ্ছে, ৩৫০ কোটি বছরের পুরনো কাদাপাথর (প্রস্তরীভূত শিলা) খুঁড়ে মাত্র ৫ সেন্টিমিটার নীচে তিন ধরনের জৈবযৌগের কণা খুঁজে পেয়েছে মঙ্গলযান।
কিউরিওসিটি-র পাঠানো দ্বিতীয় চমকপ্রদ তথ্যটি হল— পৃথিবীর পড়শি গ্রহটিতেও বিশদ ঋতুচক্র রয়েছে। কোনও ঋতুতে বায়ুস্তরে মিথেনের মাত্রা বাড়ে, কখনও আবার কমে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে উপস্থিত মিথেনের ৯৫ শতাংশ তৈরি হয় জৈবিক কার্যকলাপ থেকে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, খুব শিগগিরি হয়তো জানা যাবে, মঙ্গলের মিথেনেও জড়িয়ে রয়েছে প্রাণ-রহস্য। প্রাণের চাবিকাঠি এই জৈব-যৌগের কণা।
যদিও প্রাণের সঙ্গে এর যোগসূত্র না-ও থাকতে পারে। অনেক সময় বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়া থেকেও জৈবযৌগ তৈরি হয়। ফলে কোনও জৈবিক প্রক্রিয়া থেকেই ওই যৌগগুলি তৈরি হয়েছে, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নন কেউ। মেরিল্যান্ডে নাসার ‘গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টার’-এর অ্যাস্ট্রোবায়োলজিস্ট জেনিফার আইগেনব্রড বলেন, ‘‘ওই জৈবযৌগের তিনটি উৎস থাকতে পারে। এক, হতে পারে প্রাণ, আমরা যেটা জানিই না। দুই, মঙ্গলের মাটিতে উল্কাপাত হয়ে থাকতে পারে। যা থেকে ওই জৈবযৌগের আমদানি ঘটেছে মঙ্গলের মাটিতে। এবং সর্বশেষ, কোনও ভৌগোলিক পদ্ধতিতে ওই বিশেষ পাথরটি (যাতে জৈবযৌগটি মিলেছে) তৈরি হয়েছে।
আইগেনব্রড বলেন, ‘‘প্রাণের সঞ্চারের জন্য যা যা প্রয়োজন, সবই রয়েছে লালগ্রহে। কিন্তু তাতে এটা বলা যায় না, মঙ্গলে প্রাণ ছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy