E-Paper

আফ্রিকার আগ্নেয়গিরি অভিযানে চলবে গবেষণাও

দুর্গম স্থানে অভিযানের সঙ্গে গবেষণার নিবিড় যোগের ইতিহাস আরও রয়েছে। পরে পর্বতারোহণ ও অভিযান যত বাণিজ্যিক হয়েছে, ততই কমেছে বিজ্ঞানের সুযোগ।

স্বাতী মল্লিক

শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৭:০৪
An image of Volcano

—প্রতীকী চিত্র।

সর্বপ্রথম দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছনোই ১৯১০ সালে কমান্ডার রবার্ট ফ্যালকন স্কটের অভিযানের একমাত্র লক্ষ্য ছিল না। তিনি চেয়েছিলেন, বৈজ্ঞানিক গবেষণার ভিত্তি হোক এই আন্টার্কটিকা অভিযান। তাই সঙ্গী হিসাবে নিয়েছিলেন এক ঝাঁক বিজ্ঞানীকে, যাঁরা অভিযানে সংগ্রহ করেছিলেন নানা প্রজাতির পাখি, কীটপতঙ্গ, গাছপালার নমুনা, পেঙ্গুইনের ডিমও। কুমেরু ছুঁয়ে তাঁরা বেঁচে ফিরতে না পারলেও, অশক্ত-ভগ্ন শরীরে স্কট ও তাঁর দুই সঙ্গী সযত্নে স্লেজে টেনে এনেছিলেন ৩০ পাউন্ড ওজনের পাথরের নমুনা।

দুর্গম স্থানে অভিযানের সঙ্গে গবেষণার নিবিড় যোগের ইতিহাস আরও রয়েছে। পরে পর্বতারোহণ ও অভিযান যত বাণিজ্যিক হয়েছে, ততই কমেছে বিজ্ঞানের সুযোগ। পর্বতারোহীরা দুর্গমতম স্থানে পৌঁছে গেলেও তা বিজ্ঞানের কাজে আসেনি। তবে এ বার পর্বতারোহী সত্যরূপ সিদ্ধান্তের আগ্নেয়গিরি অভিযানের সঙ্গী হচ্ছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। অভিযান ও বিজ্ঞান— আফ্রিকায় একসঙ্গে হাঁটবে সত্যরূপের হাত ধরে।

আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি আফ্রিকার ইথিয়োপিয়ায় আর্টা আলে আগ্নেয়গিরি (২০১১ ফুট) ও ডানাকিল নিম্নচাপে (ডিপ্রেশন, যা তিনটি টেকটোনিক প্লেটের বিচ্যুতির ফলে তৈরি) অভিযানে যাচ্ছেন সপ্তশৃঙ্গ ও সপ্ত আগ্নেয়গিরিজয়ী সত্যরূপ। সঙ্গে মানস সাহা ও স্বপন ঘোষ। পরিবেশের ক্ষতি না করে সেখানে নমুনা ও তথ্য সংগ্রহ করবেন তাঁরা, যা গবেষণার কাজে লাগবে।

সোমবার এক অনুষ্ঠানে এই অভিযানের পাশে থাকার কথা ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য গৌতম চন্দ্র বলেন, ‘‘উনি যে সব জায়গায় যাবেন, সেখানে গিয়ে আমাদের পক্ষে গবেষণা করা সম্ভব নয়। আবার উনিও গবেষণা করতে পারবেন না। তা-ই এই উদ্যোগ। একই সঙ্গে পড়ুয়াদেরও উনি উৎসাহ দিয়েছেন।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের প্রধান রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, অভিযানে গিয়ে মাটি, উষ্ণ প্রস্রবণের জল, গাছপালা, পাথর, জমে যাওয়া লাভার নমুনা সংগ্রহের চেষ্টা করবেন সত্যরূপ। মাইক্রোবায়োলজি, উদ্ভিদবিদ্যা, ভূগোল, রসায়ন, প্রাণিবিদ্যা, ভূতত্ত্বের পড়ুয়া ও গবেষকেরা তা থেকে সমৃদ্ধ হতে পারেন। নতুন গবেষণার পথও খুলতে পারে। নমুনা পরীক্ষায় ওই আগ্নেয়গিরির রাসায়নিক গঠন, খনিজ আকরিকের খোঁজ-সহ বহু অজানা তথ্য জানা যেতে পারে।

সাত মহাদেশের সর্বোচ্চ আগ্নেয়গিরি ছুঁলেও এই প্রথম গলিত লাভা-দর্শন করবেন সত্যরূপ। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ওই আগ্নেয়গিরি থেকে ফের উদ্গীরণ শুরু হয়েছে। সত্যরূপের কথায়, ‘‘আগে বাংলা থেকেও পর্বতারোহণ অভিযানে গবেষণার জন্য কাজ করা হয়েছে। ফের সেই ধারা শুরু করতে চাই। মাটির পিএইচ মাত্রা ও তাপমাত্রা পরিমাপ, পাথর, গাছপালার নমুনা ও ছবি সংগ্রহ করব। কী ভাবে করব, শিখিয়ে দিয়েছেন। সে জন্য যন্ত্রপাতি ও কিট দিয়েছেন। নমুনা আনার জন্য অনুমতি জোগাড়ের কাজ চলছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Volcano Eruption Ethiopia Research Work Volcano

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy